মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি আশা করছেন যে গাজায় খুব শিগগিরই আমেরিকার নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বাহিনী পাঠানো হবে। গাজা এখনও ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের কারণে চরম মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরের পদক্ষেপ হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। খবর আল জাজিরার।
ট্রাম্প বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বলেন, এটি খুব শিগগিরই হতে চলেছে এবং গাজা খুব ভালোভাবে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, খুব শক্তিশালী দেশগুলোর একটি জোট হামাসের সঙ্গে কোনো সমস্যা দেখা দিলে হস্তক্ষেপ করতে স্বেচ্ছায় প্রস্তুত হয়েছে। তবে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এখনও নিরস্ত্রীকরণ করবে কিনা, তা নিশ্চিত করেনি।
ট্রাম্পের এই পূর্বাভাসের সময়েই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একটি অন্তর্র্বতী শাসন সংস্থা ও স্থিতিশীলতা বাহিনীকে দুই বছরের অনুমোদনের জন্য আলোচনা শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর লক্ষ্য হলো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া, সীমান্ত এলাকা সুরক্ষিত করা ও ফিলিস্তিনি পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেওয়া।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) আল জাজিরাকে বলেছেন, গাজায় ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করার জন্য যেকোনো স্থিতিশীলতা বাহিনীর পূর্ণ আন্তর্জাতিক বৈধতা থাকতে হবে।
মার্কিন সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এই সপ্তাহে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১০ জন নির্বাচিত সদস্য ও বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক অংশীদারের কাছে খসড়া প্রস্তাবটি বিতরণের পর বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) আলোচনা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রস্তাবে কী আছে? জানা গেছে,মিসর, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও তুরস্ক এই প্রস্তাবটি দেখেছে। এই প্রস্তাবে ২০ হাজার সৈন্যের একটি স্থিতিশীল বাহিনীকে তার ম্যান্ডেট বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুমতি দেওয়া হবে।
ট্রাম্পের ২০-দফা পরিকল্পনার মূল নীতি হলো হামাসের সামরিকীকরণ ঠেকানো। স্থিতিশীল বাহিনীর কাজ হবে হামাসের সক্ষমতা ও আক্রমণাত্মক অবকাঠামো ধ্বংস করা এবং পুনর্র্নিমাণ থেকে বিরত রাখা। ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা ১০ অক্টোবর ইসরায়েল ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে বন্দি মুক্তি চুক্তি এবং একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতিতে সহায়তা করেছিল।
তুরস্ক ও ইসরায়েলের অবস্থান-এই সপ্তাহে ইস্তাম্বুলে কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আতিথেয়তা দিয়ে তুরস্ক শান্তি পরিকল্পনা গ্রহণে হামাসকে উৎসাহিত করতে এবং স্থিতিশীলতা বাহিনীর প্রতি সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তুরস্ক বারবার গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার নিন্দা করেছে।
কিন্তু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সার-এর মতো কর্মকর্তারা তাঁদের অবস্থানে অটল আছেন। তাঁরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, ইসরায়েল গাজায় তুরস্কের কোনো ধরনের উপস্থিতি মেনে নেবে না।
স্থিতিশীলতা বাহিনীর বিষয়ে ইসরায়েলের নিজস্ব বক্তব্য রয়েছে। সেপ্টেম্বরে ট্রাম্পের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অদূর ভবিষ্যতের জন্য ইসরায়েল গাজায় নিরাপত্তার দায়িত্ব বজায় রাখবে। অন্যদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের জন্য দায়ী মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের প্রদান গত মাসে গাজা সফরের সময় বলেছিলেন, সেখানে কোনো মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হবে না।ছবি-সংগৃহীত

ডেইলি খবরের সর্বশেষ নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন।
আপনার মতামত লিখুন :