জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পরে পাঁচ দিন মাঠে থাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এবার আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সে সময়সীমা আরও তিন দিন বাড়িয়ে আট দিন থাকার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সোমবার ২০ অক্টোবর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা হয় নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। এই সভায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিরা নির্বাচনকালীন তাদের সদস্য মোতায়েনের বিষয়ে প্রস্তাব দেন। এ ছাড়া কত সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হবে, তাদের কর্মপন্থাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয় ওই সভায়।
মতবিনিময় সভা শেষে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, মতবিনিময় সভার গতকালের আলোচনা একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ের। এ আলোচনা আরও চলমান থাকবে। এ সময় নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আট দিন মাঠে থাকার প্রস্তাাব দিয়েছে বলে জানান ইসি সচিব।
আখতার আহমেদ বলেন,মূলত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাঁচদিনের জন্য ডেপ্লয়মেন্ট প্রোগ্রাম করা হয়। সেখানে একটা প্রস্তাব এসেছে, এটা যেন আট দিন করা হয়। নির্বাচনের আগে তিনদিন, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচন পরবর্তীতে চারদিন। আমাদের ইনিশিয়াল প্রোগ্রামিং ছিল পাঁচ দিনে। এখন প্রস্তাবনাটা আসছে আট দিন। এটা আমরা পরীক্ষা করে দেখব।
সভার আলোচনা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে ইসি সচিব জানান, বিভিন্ন সময় লুট হওয়া অস্ত্রগুলোর অধিকাংশই পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনী উদ্ধার করতে পেরেছে। এখন পর্যন্ত ৮৫ শতাংশ তারা রিকভারি করা হয়েঠেছ। আরও কিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ এখনো পর্যন্ত আছে। উদ্ধার প্রক্রিয়া চলমান আছে।
ভোটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সর্বোচ্চ সংখ্যক সদস্য মোতায়েন থাকবে, এমন আভাস দিয়ে ইসি সচিব বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ৯০ হাজার থেকে এক লাখ, আনসার সদস্য পাঁচ থেকে ছয় লাখ, পুলিশের দেড় লাখ সদস্য মোতায়েন করা হবে। সশস্ত্র বাহিনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে মোতায়েন হবে নাকি ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর অধীন হবে, সেটা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন হয়ে এলে নির্ধারণ হবে। এক্ষেত্রে আরপিওর সঙ্গে যেন সাংঘর্ষিক না হয়, সেটা দেখা হবে।
আখতার আহমেদ আরও বলেন, পুলিশের বডি ওর্ন ক্যামেরা থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া কেউ ড্রোন ব্যবহার করতে পারবে না। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবহার করবে। তারা (পুলিশ) বলেছে,যানবাহন একটা সমস্যা, রিকুইজিশন করতে হবে।
ইসি সচিব বলেন, আজকে সূচনা হলো আলোচনার। কনক্লুসিভ কোনো কিছু না। এটা ধারাবাহিকভাবে আরও এগোবে। আরেকটা বড় জিনিস আছে, যেটা বাজেট। প্রত্যেকটা অর্গানাইজেশন, প্রত্যেকটা ইউনিটের একটা বাজেট-তাদের খরচ আছে, সেটা আমাদের দেবে, আমরা ইলেকশন বাজেটের সঙ্গে যেটা সম্পর্কিত সেই বাজেট করব।
নির্বাচন নিয়ে কোনো ঝুঁকি দেখছে কি না এবং আইনশৃঙ্খলার যে পরিস্থিতি আছে, সেটা কতটুকু ভোটের জন্য উপযোগী-এমন প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, নির্বাচনের সময়সীমা তফসিল ঘোষণা থেকে গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত। আমাদের আলোচনার পরিধিটা এটুকু ছিল। বাকিটুকু নিয়ে আমাদের আলোচনার এই মুহূর্তে সুযোগ নেই। আমি তাদের ভেতরে উদ্বেগ দেখিনি। বরং দেখেছি যে, একটা ভালো ইলেকশন করার মতো পরিবেশ আছে, তারা প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। অবশ্যই নির্বাচন করার মতো পরিবেশ আছে এবং সেটা আরও সংহত করার জন্যই আজকের আলোচনা এবং এটা চলমান থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন :