বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর, ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

গাজায় যুদ্ধবিরতিতেও ক্ষুধার্ত নিয়ে সময়ের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত জাতিসংঘ

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ০৯:৩৪ এএম

গাজায় যুদ্ধবিরতিতেও ক্ষুধার্ত নিয়ে সময়ের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত জাতিসংঘ

ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞার কারণে গাজা উপত্যকায় খাদ্য ও অন্যান্য মানবিক সরবরাহ পৌঁছানো ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা। তিনি বলেন,সাহায্য সংস্থাগুলি "সময়ের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায়" লিপ্ত, কারণ বোমা বিধ্বস্ত ছিটমহল জুড়ে সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডবিøউএফপি) মুখপাত্র আবির এতেফা বলেন,যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ত্রাণ সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে, তবে এখনো মাত্র দুটি প্রবেশপথ খোলা থাকায় তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
“আমাদের পূর্ণ প্রবেশাধিকার প্রয়োজন। দ্রæত এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের সবকিছু প্রয়োজন। আমরা সময়ের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় আছি। শীত আসছে, মানুষ এখনো ক্ষুধার্ত, চাহিদা বিপুল,” বলেন তিনি।
ডবিøউএফপি বর্তমানে গাজায় ৪৪টি খাদ্য বিতরণকেন্দ্র পরিচালনা করছে। অক্টোবরের ১০ তারিখ থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির পর থেকে এক মিলিয়নের বেশি ফিলিস্তিনিকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে সংস্থাটি জানায়।
তবে গাজার উত্তরাঞ্চলে পৌঁছানো এখনো কঠিন। আগস্টে সেখানে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি দেখা দেওয়ার পরও উত্তরাঞ্চলের প্রবেশপথ বন্ধ থাকায় ত্রাণ কাফেলাগুলোকে দক্ষিণ দিক দিয়ে ধীর ও জটিল পথে যেতে হচ্ছে।“ব্যাপক পরিমাণে সরবরাহের জন্য,ডাবিøউএফপির সমস্ত ক্রসিং খোলা থাকা প্রয়োজন, বিশেষ করে উত্তরে। খাদ্য দ্রæত এবং দক্ষতার সঙ্গে যেখানে প্রয়োজন সেখানে পরিবহনের অনুমতি দেওয়ার জন্য গাজা জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতে সম্পূর্ণ প্রবেশাধিকারও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” বলেন আবির এতেফা।
যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ইসরায়েলি সেনারা কিছুটা পিছু হটায় অনেকে উত্তর গাজায় ফিরে যাচ্ছেন। কিন্তু ফিরে গিয়ে তারা দেখতে পাচ্ছেন বাড়িঘর, পাড়া-মহল্লা সব ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। অনেক পরিবার এখনো তাঁবু বা কাঁচা ঘরে আশ্রয় নিচ্ছে।
গাজা সিটির বাসিন্দা খালেদ আল-দাহদুহ জানান, তার বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। শীতের প্রস্তুতি হিসেবে ইট-কাদামাটি দিয়ে নিজেই ছোট্ট আশ্রয় বানিয়েছেন। 
“আমাদের কাছে তাঁবু নেই,তাই কাদা দিয়ে একটা ছোট্ট ঘর তুলেছি। এটা ঠান্ডা, পোকামাকড় আর বৃষ্টি থেকে অন্তত কিছুটা রক্ষা দেয়,”বলেন তিনি।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে,১০ থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে মোট ৩,২০৩টি বাণিজ্যিক ও ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে গড়ে প্রতিদিন ১৪৫টি, যা যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী নির্ধারিত সংখ্যার মাত্র ২৪ শতাংশ।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি চললেও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে।মঙ্গলবার গাজা সিটির তুফাহ এলাকায় ইসরায়েলি কোয়াডকপ্টারের গুলিতে একজন নিহত ও একজন আহত হন। একই দিনে জাবালিয়া এলাকায় ইসরায়েলি সেনার গুলিতে আরও একজনের মৃত্যু হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৬০৭ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েল এসব সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, হামাস এখনো নিহত ইসরায়েলি বন্দিদের দেহাবশেষ ফেরত দেয়নি, যা যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গের শামিল।মঙ্গলবার হামাস আন্তর্জাতিক রেডক্রসের মাধ্যমে এক ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ হস্তান্তর করেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। ছবি: সংগৃহীত

 

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!