মার্কিন বোমা হামলায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্র ধ্বংস হয়নি। এসব পারমানবিক কেন্দ্র লক্ষ্য করে গত সপ্তাহে অত্যাধুনিক হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। হামলায় অত্যাধুনিক বি-২ স্টিলথ বোমারু ব্যবহার করা হয় ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রে। তবে পেন্টাগনের মূল্যায়ন বলছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের চালানো বিমান হামলায় দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস হয়নি। এই হামলা দেশটির পারমাণবিক কার্যক্রম শুধুমাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে দিয়েছে।সংবাদমাধ্যম সিএনএন বুধবার (২৫ জুন) এক এক্সক্লসিভ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
পেন্টাগনের গোয়েন্দা শাখা ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি বা ডিআইএ এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তাদের প্রাথমিক মূল্যায়নে বলা হয়েছে, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ এই হামলায় ধ্বংস হয়নি।
সামনে আরও তথ্য জানা গেলে হয়ত প্রাথমিক মূল্যায়নে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন প্রকাশ্যে ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো ধ্বংস করে দেওয়ার যে দাবি করছেন, প্রাথমিক মূল্যায়নে সেটির উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। মার্কিন গোয়েন্দারা প্রাথমিক যে মূল্যায়ন প্রদান করেছেন সেটি চার ব্যক্তি সিএনএনকে জানিয়েছেন।
মূল্যায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র জানিয়েছে, ইরানের সমৃদ্ধকৃত ইউরেনিয়ামের মজুদ ধ্বংস হয়নি। অপর একজন জানিয়েছেন, দেশটির পারমাণবিক সেন্ট্রিফিউজের বেশিরভাগও অক্ষত রয়েছে। যার অর্থ যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক কাঠামো ধ্বংস করতে পারেনি। বরং তাদের হামলা ইরানি পারমাণবিক কার্যক্রমকে শুধুমাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে দিয়েছে।
তবে এই মূল্যায়নের সত্যতা অস্বীকার করেছেন হোয়াইট হাউজের প্রেসসচিব ক্যারোলিন লিভিট। তিনি বলেছেন, ট্রাম্পকে ‘অপমান’ করতে এগুলো ছড়ানো হচ্ছে।পেন্টাগনের এই তথ্যের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দিয়ে দাবি করেছেন, সিএনএন ও নিউইয়র্ক টাইমসের ওই প্রতিবেদন সত্যি নয়। তারা সামরিক ইতিহাসের সবচেয়ে সফল একটি অভিযানকে হেয় করার চেষ্টা করছে।এরআগে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী জানিয়ছিল,ইরানে পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলায় তারা ‘অসাধারণ সফলতা’ অর্জন করেছে।
ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রটি মাটির ২৬২ ফুট নিচে অবস্থিত। এটি ধ্বংস করতে ৩০ হাজার পাউন্ডের বাঙ্কার বাস্টার বোমা ব্যবহার করা হয়েছে। আর বোমাগুলো ছুড়েছে বি-২ স্টিলথ বোমারু। হামলার তিন দিনের মাথায় পেন্টাগনের মূল্যায়নে বলা হয়েছে, ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ ধ্বংস হয়নি।এতে বলা হচ্ছে,ইরানের সেন্ট্রিফিউজগুলো প্রায় অক্ষত রয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতি মূলত স্থলভাগের অবকাঠামোতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এছাড়া ইরানের দুটি পারমাণবিক স্থাপনার প্রবেশপথ বন্ধ হয়ে গেছে এবং কিছু অবকাঠামো ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে, ভূগর্ভস্থ মূল স্থাপনাগুলো অনেকটাই অক্ষত রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :