রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২

ইরানে আরও বড় হামলার হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৫, ১০:১১ এএম

ইরানে আরও বড় হামলার হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বোমারু বিমান হামলার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন,‘এখনই ইরানকে শান্তি স্থাপন করতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালানো হবে।’কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার রাত ১০টায় হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। ভাষণটি মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সরাসরি সম্প্রচার করে।ভাষণে ট্রাম্প বলেন,‘আজ রাতে,আমি বিশ্বকে জানাতে পারি, ইরানে হামলা ছিল অসাধারণ সামরিক সাফল্য।’তিনি আরও বলেন,‘এ হামলার উদ্দেশ্য ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ সক্ষমতা শেষ করে দেওয়া। সন্ত্রাসের মদদদাতা বিশ্বের এক নম্বরে থাকা দেশটির পারমাণবিক হুমকি থামিয়ে দেওয়া।’ভাষণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।ট্রাম্প বলেছেন,তিনি ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী দল হিসেবে কাজ করেছেন।তিনি আরও বলেন, ‘আমি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে তাদের অসাধারণ কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
প্রসঙ্গত,স্থানীয় সময় শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তার দেশ ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় সফল হামলা সম্পন্ন করেছে। স্থাপনাগুলো হলো ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান।বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে জানা গেছে,এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইরানে চালানো এ হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান অংশ নেয়।ট্রাম্প নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন,‘আমরা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা-ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে-খুবই সফলভাবে হামলা সম্পন্ন করেছি। সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে।’
এদিকে এরআগে হঠাৎ করেই যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষে ইরানের ৩ পারমাণবিক কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা চালায়।ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। আজ রবিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশ সময় সকাল পৌন ৬টার দিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছে ইরান। দেশটি জানিয়েছে, ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলায় কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথে লিখেছেন, ‘আমরা ইরানে পারমাণবিক কেন্দ্রতে সফলভাবে হামলা সম্পন্ন করেছি। যারমধ্যে আছে ফর্দো, নাতানজ এবং ইসফাহান। (হামলায় অংশ নেওয়া) সব বিমান এখন ইরানি আকাশসীমার বাইরে রয়েছে।’তিনি আরও জানিয়েছেন,মাটির ২৬২ ফুট গভীরে থাকা ফর্দো পরমাণু কেন্দ্রে ভারী বোমা ফেলেছেন তারা। হামলা চালানো বিমানগুলো এখন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসছে।ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন,‘ইরানের নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান ও ফোরদো-এই তিনটি মূল পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। ফোরদোর ওপর ছয়টি ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা ফেলা হয়েছে। এছাড়া অন্য দুটি স্থাপনায় ৩০টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।’
এদিকে ইরানের তাসনিম সংবাদ সংস্থা কোমের এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলছে, ফোরদোর কিছু অংশ বিমান হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কোম প্রভিন্সিয়াল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট হোডকোয়ার্টারের মুখপাত্র মোর্তেজা হায়দারি বলেন, ‘কয়েক ঘণ্টা আগে, কোমের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করার এবং শত্রু লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করার পর, ফোরদোর কিছু অংশ শত্রু বিমান হামলায় আক্রান্ত হয়েছিল।’
এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থার এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে যেই তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার কথা বলছে,আদতে সেখানে এমন কোনো পদার্থ নেই যা তেজস্ক্রিয়তা সৃষ্টি করে।ওই কর্মকর্তার মন্তব্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে, ইরানি কর্তৃপক্ষ বোমা হামলার আগেই হয়তো ওই স্থাপনাগুলো থেকে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম বা তেজস্ক্রিয় উপাদান সরিয়ে ফেলেছিল।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!