শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২

রাশিয়ার তেল না কিনতে ভারত রাজি,বললেন ট্রাম্প,বিপরীত প্রতিক্রিয়া নয়াদিল্লির

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৫, ০৭:২৩ পিএম

রাশিয়ার তেল না কিনতে ভারত রাজি,বললেন ট্রাম্প,বিপরীত প্রতিক্রিয়া নয়াদিল্লির

রুশ তেল আমদানি বন্ধ করতে ভারত সম্মত হয়েছে,যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে নয়াদিল্লি। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল স্পষ্ট করে বলেছেন, ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে রুশ তেল নিয়ে কোনো ধরনের প্রতিশ্রæতিমূলক আলোচনা হয়েছে কিনা, এ বিষয়ে তিনি ‘অবগত নন’।
এই মন্তব্যের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র–ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েনের সাম্প্রতিক ইস্যুটি এখনো সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা কম। এর আগে বুধবার ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি তাকে ওইদিন আশ্বস্ত করেছেন যে ভারত আর রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না। তিনি এ বিষয়টিকে “বড় পদক্ষেপ” বলে উল্লেখ করেন।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জয়সওয়াল বলেন, ‘ট্রাম্প-মোদির কথোপকথন সম্পর্কে আমি জানি না এবং রুশ তেল আমদানি বন্ধ করার কোনো প্রশ্রিæতিরও বিষয়ে অবগত নই।’
এর কয়েক ঘণ্টা আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়ে জানায়, দেশটি বিশ্ববাজারে “উল্লেখযোগ্য জ্বালানি আমদানিকারক” এবং তাদের নীতি হলো জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রাখা ও সরবরাহ নিশ্চিত করা। সেখানে রাশিয়ার নাম উল্লেখ করা হয়নি এবং ট্রাম্পের দাবি সম্পর্কেও কোনো মন্তব্য ছিল না।
রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের সামরিক ও কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রেখেছে ভারত। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা শুরু হলে রাশিয়ার তেল বিশ্ববাজারে সস্তা হয়ে যায় এবং ভারত তখন রুশ তেল আমদানিতে শীর্ষ ক্রেতায় পরিণত হয়। বর্তমানে রাশিয়া ভারতের সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত তেল সরবরাহকারীদের মধ্যে অন্যতম।
ভারত সব সময় যুক্তরাষ্ট্রের রুশ তেল বিরোধী চাপ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, ১৪০ কোটিরও বেশি মানুষের দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সাশ্রয়ী জ্বালানি প্রয়োজন। তাই তারা ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি এবং ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জ্বালানি চাহিদার কাছে নতি স্বীকার করবে না।
রুশ তেল কেনা অব্যাহত রাখার জবাবে ট্রাম্প গত আগস্টে ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, যা আগেই আরোপ করা ২৫ শতাংশ শুল্কের ওপর বাড়তি আরোপ।
বাজার বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান কেপলারের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ মুয়ু জু বলেন, ‘ভারতের পক্ষে হঠাৎ করে রুশ তেল আমদানি বন্ধ করা প্রায় অসম্ভব। রাশিয়া থেকে প্রতিদিন ১৭ থেকে ১৮ লাখ ব্যারেল তেল আসে। এই বিপুল সরবরাহ এক দিনে অন্য কোথাও থেকে পাওয়া সম্ভব নয়।’ তিনি আরও জানান, শুধু সরবরাহের পরিমাণ নয়, অপরিশোধিত তেলের গুণগত পার্থক্য ও রিফাইনারি সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত কারণে রুশ তেলের বিকল্প ভারতের জন্য কঠিন।
কেপলরের তথ্যানুযায়ী,সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রিফাইনারি প্রতিষ্ঠানগুলো রুশ তেল আমদানি কিছুটা কমালেও বেসরকারি রিফাইনারি প্রতিষ্ঠানগুলো বরং তা বাড়িয়েছে। উদাহরণ হিসেবে ভারতীয় তেল করপোরেশন (আইওসিএল) জানুয়ারি মাসে রুশ তেলের ১ কোটি ৩৫ লাখ ব্যারেল আমদানি করলেও সেপ্টেম্বরে সে পরিমাণ হয় ৪৬ লাখ ব্যারেল। তবে অক্টোবর মাসে আইওসিএল পুনরায় রুশ তেল আমদানি বাড়িয়ে ৭০ লাখ ব্যারেলে উন্নীত করেছে। সূত্র: সিএনএন

 

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!