রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, আমি বৃহস্পতিবার তুরস্কে পুতিনের জন্য অপেক্ষা করব। রোববার স্থানীয় সময় রাত ১১টায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স- এ দেওয়া এক বার্তায় তিনি এ কথা জানিয়েছেন। খবর-রয়টার্স
সোমবার থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু করতে চান জানিয়ে জেলেনস্কি বলেন, হত্যাকান্ড দীর্ঘায়িত করার কোনো মানে নেই। আমি বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে ইচ্ছুক। আমি আশা করি, এবার রাশিয়ানরা অজুহাত খুঁজবে না।
তিনি বলেন, আমরা আগামীকাল থেকে একটি সম্পূর্ণ এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য অপেক্ষা করছি,যা কূটনীতির জন্য প্রয়োজনীয় ভিত্তি তৈরি করবে। জেলেনস্কি আগে যুদ্ধবিরতি,পরে আলোচনা চান। দু’পক্ষকে আলোচনায় বসাতে প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছে তুরস্কও।অন্যদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও বৃহস্পতিবার তুরস্কে ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হন। এতে আশার আলো দেখছেন বিশ্বনেতারা। এর আগে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর চাপ তৈরি করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে দেওয়া এক পোস্টে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে জেলেনস্কির প্রতি এই চাপ তৈরি করেন তিনি। ওই পোস্টে ট্রাম্প বলেন,রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তি চান না। এর পরিবর্তে তিনি বৃহস্পতিবার তুরস্কে সরাসরি সাক্ষাতে যুদ্ধের অবসানে আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। রুশ প্রেসিডেন্টের এই প্রস্তাবে ইউক্রেনের তাৎক্ষণিকভাবে রাজি হওয়া উচিত।
ট্রাম্প বলেন, ইস্তাম্বুলে সাক্ষাতে আলোচনায় কোনো চুক্তির সম্ভাবনা আছে কিনা, তারা অন্তত তা বুঝতে পারবেন। আর যদি না থাকে, তাহলে ইউরোপীয় নেতারা এবং যুক্তরাষ্ট্র জানতে পারবে আসলে কোন পরিস্থিতিতে আছে বিষয়টি এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে। ইউক্রেন আদৌ পুতিনের সঙ্গে কোনো চুক্তি করবে কিনা, আমি এখন সেটি নিয়ে একটু সন্দেহ করছি। কারণ পুতিন এখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার বিজয় উদযাপন নিয়েই ব্যস্ত-যে যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া জেতা সম্ভব হতো না, মোটেই না। এখনই সাক্ষাৎ করুন।
ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে বলেছেন, কোনো বিলম্ব ছাড়াই, ১৫ মে`রমধ্যেই একটি আলোচনা শুরু হওয়া উচিত। আমরা সিরিয়াস আলোচনা চাই। সংঘাতের মূল কারণ উপড়ে ফেলতে এবং একটি দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই শান্তির দিকে এগিয়ে যাওয়া শুরু করতে চাই। শনিবার গভীর রাতে ক্রেমলিন থেকে দেওয়া বিরল এক ভাষণে এ কথা বলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁসহ ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেন সফর করে রাশিয়াকে ৩০-দিনের শর্তহীন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার আহ্বান জানানোর পর পুতিন এমন প্রস্তাব দেন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বিষয়টি নিয়ে মস্কো চিন্তা করবে বলে জানিয়েছিলেন। তবে তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, কোনো ধরনের চাপ দেওয়া হবে নিতান্তই অর্থহীন।
আপনার মতামত লিখুন :