পাকিস্তান সীমান্তরক্ষী বাহিনী রোববার জানিয়েছে, আফগানিস্তানের তালেবান ও ভারত সমর্থিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) বা‘ফিতনা আল-খাওয়ারিজ’-এর হামলার প্রতিক্রিয়ায় দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী পরিচালিত পাল্টা অভিযানে ২০০-এর বেশি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। রোববার (১২ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে জিও নিউজ।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মিডিয়া আউটলেট ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘পাকিস্তানি বাহিনী আফগান ভূখন্ড থেকে পরিচালিত তালেবান ক্যাম্প, পোস্ট, সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং সহায়ক নেটওয়ার্কের উপর সুনির্দিষ্ট হামলা, শারীরিক রেইড এবং স্ট্রাইক পরিচালনা করেছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সীমান্ত জুড়ে একাধিক তালেবান অবস্থান ধ্বংস করা হয়েছে। আফগানিস্তানের সীমান্তরক্ষী অবস্থানের ২১টি স্থানও অল্প সময়ের জন্য দখল করা হয়েছিল এবং বহু সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ ক্যাম্প কার্যত অকার্যকর করা হয়েছে।
উভয় দেশের সীমান্তে সংঘর্ষ শুরু হয় শনিবার গভীর রাতে, যখন আফগান বাহিনী অপ্রতিবাদীভাবে পাকিস্তানের বিভিন্ন সীমান্ত পোস্টে গুলি চালায়। আঙ্গুর আড্ডা, বজাউর, খুররমসহ অন্যান্য সীমান্ত এলাকায় এই হামলা হয়। এরপর পাকিস্তানও গুলি ও আর্টিলারির মাধ্যমে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখায়।
আফগান প্রশাসন দাবি করেছে, তাদের হামলায় ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। তবে পাকিস্তান পক্ষ এখন পর্যন্ত হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করেনি। পাকিস্তান নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা আফগান বাহিনীর উপরও ক্ষতি সাধন করেছে।
রোববার সকালে বেশিরভাগ স্থানে গোলাগুলি থেমে গেলেও, খুররম অঞ্চলে বিচ্ছিন্নভাবে গোলাগুলি চলতে থাকে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, তাদের অভিযান শনিবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। পরে কাতার ও সৌদি আরবের অনুরোধে তারা আক্রমণ বন্ধ করে।
পাকিস্তানের আইএসপিআর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সীমান্ত জুড়ে তালেবান পোস্ট, ক্যাম্প, সদর দপ্তর ও সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের অবকাঠামোগত ক্ষতি ব্যাপক।
সামরিক মুখপাত্র আরও সতর্ক করে বলেছেন, পাকিস্তান আফগান ভূখন্ডকে সন্ত্রাসের জন্য ব্যবহার সহ্য করবে না। প্রয়োজন হলে দেশের জনগণ সুরক্ষার জন্য সীমান্তের ওপার থেকে আসা সন্ত্রাসী লক্ষ্যগুলোকে ধ্বংস করার অধিকার প্রয়োগ করবে।
আইএসপিআর হুশিয়ারি দিয়ে বলেছে, তালেবান সরকার যদি অব্যাহতভাবে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা করে, বিশেষ করে ভারতের সহায়তায়, তাহলে পাকিস্তান পুরোপুরি সন্ত্রাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত থামবে না।
এদিকে,সংঘাতের কারণে সৌদি আরব, কাতার ও ইরান উভয় পক্ষকে শান্তি ও সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে। আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘উত্তেজনা হ্রাস ও সীমান্তে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা অঞ্চলীয় শান্তির জন্য অত্যন্ত জরুরি।’
আপনার মতামত লিখুন :