রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২

পাকিস্তান-আফগান বাহিনীর মধ্যে রাতভর ব্যাপক সংঘর্ষ, ব্যবহার হয় ভারী অস্ত্র

ডেইলি খবর ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫, ১১:৩৯ এএম

পাকিস্তান-আফগান বাহিনীর মধ্যে রাতভর ব্যাপক সংঘর্ষ, ব্যবহার হয় ভারী অস্ত্র

সীমান্তে পাক সেনাদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে আফগান বাহিনী। শনিবার (১১ অক্টোবর) দিবাগত রাতে কাবুলে হামলার জবাবে এ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে আফগানিস্তানের তালেবান। পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
পাক নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে জিও নিউজ জানিয়েছে, শনিবার রাতভর আফগান বাহিনী একাধিক সীমান্ত পয়েন্টজুড়ে গুলিবর্ষণ করলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দ্রæত পাল্টা আক্রমণ চালায়। হামলায় বেশ কয়েকটি আফগান পোস্ট ধ্বংস এবং ‘সেনা ও সন্ত্রাসীদের’ ব্যাপক ক্ষতি করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আঙ্গুর আড্ডা, বাজাউর এবং কুর্রামসহ বেশ কয়েকটি সীমান্ত পয়েন্টে বিনা উসকানিতে গুলিবর্ষণ শুরু করে আফগানিস্তান। একইসঙ্গে দির, চিত্রাল, বারামচা এবং অন্যান্য স্থানেও হামলার খবর পাওয়া গেছে।
দুরান মেলা এবং তুর্কমানজাই ক্যাম্পসহ একাধিক আফগান পোস্ট ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পাক সংবাদমাধ্যমটি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গোলার আঘাতে শাহিদান পোস্টও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এর ফলে আফগান সেনা এবং ‘নিষিদ্ধ তেরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের’ বেশ কিছু সদস্য হতাহত হন। অন্যদিকে কুর্রাম ও জান্দোসরের পোস্টও ধ্বংস করে দিয়েছে পাকিস্তানি বাহিনী।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী তার প্রতিক্রিয়ায় কামান, ট্যাঙ্ক এবং হালকা ও ভারী উভয় অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া টিটিপির আস্তানায় হামলা চালানোর জন্য যুদ্ধবিমান ও ড্রোন মোতায়েনেরও খবর পাওয়া গেছে। গণমাধ্যম বলছে, এতিমধ্যে সীমান্তে ১৯টি আফগান পোস্ট জব্দ করেছে পাক বাহিনী।
পাকিস্তানে আফগানিস্তানের প্রথমে শুরু করা আগ্রাসন তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির ভারত সফর এবং দিল্লিতে বসে তার ইসলামাবাদকে দেয়া বক্তব্যের সঙ্গে মিলে গেছে বলে মনে করছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সূত্র বলছে, এই আগ্রাসন আফগানিস্তানের অন্তর্র্বতীকালীন সরকার, তালেবান এবং নিষিদ্ধ টিটিপির সমন্বয়ে হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানি এলাকায় বিনা উসকানিতে গুলি চালানোর নিন্দা জানিয়েছেন এবং এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। আফগানিস্তানকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত আগুন ও রক্তের বিপজ্জনক খেলায় লিপ্ত থাকার অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে হামলার জবাব দিয়েছে এবং প্রমাণ করেছে যে কোনো উসকানি সহ্য করা হবে না।’
এদিকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। উভয় দেশকে ধৈর্য, সংযম এবং সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বানও জানিয়েছে রিয়াদ। এক বিবৃতিতে সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য উত্তেজনা হ্রাস অপরিহার্য।’
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কাতারও। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উভয় পক্ষকে শান্ত, সংলাপ এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে তাদের পার্থক্য দূর করার আহ্বান জানিয়েছে।
 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!