বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

গাজায়এবার আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনে জাতিসংঘের সমর্থন, প্রত্যাখ্যান হামাসের

ডেইলি খবর ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৫, ০৮:৫৬ এএম

গাজায়এবার আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনে জাতিসংঘের সমর্থন, প্রত্যাখ্যান হামাসের

ফিলিস্তিনের গাজা ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনাকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। নিরাপত্তা পরিষদের ১৩টি সদস্য দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। তবে গাজার শাসকদল হামাস এই প্রস্তাবকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আলজাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা সংকট সমাধানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। এই পরিকল্পনায় গাজার জন্য একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) গঠনের কথা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, একাধিক দেশ এই বাহিনীতে সদস্য পাঠাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তবে দেশগুলোর নাম প্রকাশ করেনি। নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটিতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও সোমালিয়াসহ ১৩টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। কোনো দেশ বিরোধিতা করেনি। তবে রাশিয়া ও চীন ভোটদানে বিরত থাকে।অবশ্য হামাস এই প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের দাবি, এটি ফিলিস্তিনিদের অধিকারের দাবি পূরণ করে না। টেলিগ্রামে দেওয়া বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, পরিকল্পনাটি গাজায় আন্তর্জাতিক অভিভাবকত্ব চাপিয়ে দিচ্ছে, যা ফিলিস্তিনি জনগণ ও তাদের বিভিন্ন গোষ্ঠী মানতে রাজি নয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গাজার ভেতরে আন্তর্জাতিক বাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া — যেমন প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোকে নিরস্ত্র করা — এই বাহিনীকে নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরিয়ে দেবে।
খসড়া অনুযায়ী, আইএসএফ-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হবে হামাসসহ অরাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অস্ত্র স্থায়ীভাবে নিষ্ক্রিয় করা। পাশাপাশি বেসামরিক মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং মানবিক সহায়তার রুটগুলো নিরাপদ রাখা।
আর এজন্য ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী হামাসকে অস্ত্র জমা দিতে হবে। এছাড়া আইএসএফ ইসরাইল ও মিসরের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে গাজায় নতুন করে প্রশিক্ষিত একটি ফিলিস্তিনি পুলিশ গঠনের কথাও বলা হয়েছে। যদিও এতদিন পুলিশ বাহিনী হামাসের আওতাধীন ছিল।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইক ওয়াল্টজ বলেন, আইএসএফ-এর কাজ হবে এলাকা সুরক্ষিত রাখা, গাজাকে সামরিকীকরণমুক্ত করা, সন্ত্রাসী অবকাঠামো ভেঙে ফেলা, অস্ত্র অপসারণ এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
ফিলিস্তিন ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিসংঘ
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত পূরণ না হওয়া পর্যন্ত দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না এমন প্রতিশ্রæতি দিয়েছে সৌদি আরব। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ঘনিষ্ঠ এক কর্মকর্তা সোমবার (১৭ নভেম্বর) ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।তিনি জানান, রিয়াদের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে ফিলিস্তিন অথরিটিকে সৌদি আরব আশ্বস্ত করেছে যে তারা ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ পিছনে ফেলে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। সৌদির অবস্থান হলো—১৯৬৭ সালের সীমানা ভিত্তিক স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমেই ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়া এগোতে পারে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সৌদি আমাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা ফিলিস্তিনিকে ফেলে যাবে না। ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের প্রশ্নই আসে না।’
এদিকে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। ধারণা করা হচ্ছে, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে ওয়াশিংটন রিয়াদের ওপর চাপ বাড়াবে।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানান, তারা সৌদি আরবের প্রতিশ্রæতির প্রতি আস্থা রেখেছেন এবং মনে করেন না যে রিয়াদ হঠাৎ করে অবস্থান পরিবর্তন করবে। যদিও ২০২০ সালে আব্রাহাম অ্যাকর্ডসের আওতায় চার আরব দেশ ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল।
গাজায় হামাসের নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফিলিস্তিন অথরিটি কিংবা আরব লীগের পক্ষ থেকে হামাসকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানানো হয়েছে; তবে হামাস ইতিমধ্যে এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!