ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি মানছে না। গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে পাঁচ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিলেও হামলা থামায়নি ইসরায়েল। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মুক্তিপ্রাপ্তদের আল-আকসা হাসপাতালে নেওয়া হয় চিকিৎসা পরীক্ষার জন্য। আল জাজিরার গাজা প্রতিনিধি হিন্দ খুদারি জানিয়েছেন, “যুদ্ধবিরতির পর প্রথমবারের মতো অজানা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।”
মুক্তিপ্রাপ্তদের পরিবার আল-আকসা হাসপাতালের সামনে জড়ো হয়। কেউ কেউ স্বজনদের বুকে জড়িয়ে ধরেন,আবার কেউ নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের খোঁজে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, ইসরায়েলি কারাগারে হাজারো ফিলিস্তিনি বিচার ছাড়াই আটক রয়েছেন,যা ‘ইচ্ছাকৃত আটক’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।এর আগে সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে,আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (ওঈজঈ) মাধ্যমে ইসরায়েল থেকে আরও ৪৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ফেরত আসা মরদেহের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭০-এ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়,এখন পর্যন্ত ৭৮টি মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে, বাকিগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষা চলছে। শনাক্ত না হলে মরদেহগুলো দেইর আল-বালাহ এলাকার গণকবরে দাফন করা হবে।
গাজার কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা জানান,ফেরত আসা অনেক মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন, বাঁধা হাত, চোখে কাপড় বাঁধা এবং বিকৃত মুখের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অধিকাংশ মরদেহে কোনো পরিচয় ট্যাগ ছিল না।
এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র। রাফাহর উত্তরে ইসরায়েলি গোলায় তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানায় নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের এক কর্মকর্তা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে,তারা দক্ষিণ গাজায় হামলা চালিয়েছে কারণ “হলুদ রেখা” নামে পরিচিত নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কিছু ব্যক্তি প্রবেশ করেছিল। তবে এই হামলার স্বাধীন কোনো নিশ্চিতকরণ পাওয়া যায়নি।
এছাড়াও গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলে এক শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছেন ইসরায়েলি গুলিতে। আল জাজিরার তারেক আবু আজজুম জানান, ইসরায়েল আংশিকভাবে দাঁড়িয়ে থাকা ভবনগুলিতে গ্রেনেড ফেলার জন্য কোয়ডকপ্টার ড্রোন ব্যবহার করে চলেছে, যা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করে।
গাজা সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয়ের দাবি,যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল অন্তত ১২৫ বার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে, যা সংঘাতকে আবারও তীব্র করার আশঙ্কা তৈরি করেছে।ছবি-রয়টার্স

ডেইলি খবরের সর্বশেষ নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন।
আপনার মতামত লিখুন :