ভারতের আহমেদাবাদে ভেঙ্গে পড়া এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটির এক ব্রিটিশ যাত্রী জীবিত রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। আহমেদাবাদের পুলিশ কমিশনার জিএস মালিক সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, ১১এ নম্বর আসনে বসেছিলেন ওই যাত্রী এবং তিনি জীবিত আছেন। খবর বিবিসিরআজ বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ১৭ মিনিটে ভারতের আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয় উড়োজাহাজটি। এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি যুক্তরাজ্যের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল।পুলিশ কমিশনার আরও জানিয়েছেন, বেঁচে ফেরা ওই যাত্রী এখন হাসপাতালে, তার চিকিৎসা চলছে।
বিমানের যাত্রীর যে তালিকা কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করেছেন, তা থেকে জানা যাচ্ছে যে, ওই ব্যক্তির নাম বিশোয়াস কুমার রমেশ এবং তিনি ব্রিটিশ নাগরিক।ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, তারা হাসপাতালে রমেশের সঙ্গে কথা বলেছে। তিনি সাংবাদিকদের নিজের প্লেনের বোর্ডিং পাসও দেখিয়েছেন। সেখানে তার নাম রয়েছে এবং আসন সংখ্যা উল্লেখ করা আছে ১১এ বলে।ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো তার বক্তব্য প্রচার করছে, যেখানে রমেশ বলছেন, ‘আকাশে ওড়ার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই ভীষণ জোরে আওয়াজ হয়, আর বিমানটি ভেঙে পড়ে। সব কিছু খুব কম সময়ের মধ্যেই ঘটে যায়।’
এদিকে ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (ডিজিসিএ) জানিয়েছে, বিধ্বস্ত বিমানটিতে ২৪২ জন আরোহী ছিলেন। এর মধ্যে ২৩০ জন যাত্রী, ২ জন পাইলট ও ১০ জন কেবিন ক্রু। বিমানটি চালাচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমিত সাবারওয়াল। তার সঙ্গে ছিলেন ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দার। তবে বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ এখনও জানা যায়নি।
পুলিশের বরাতে বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, বিধ্বস্ত বিমানে থাকা ২৪২ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন। এর কয়েক ঘণ্টা পর দুর্ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়েছে, যেখানে তাকে হাঁটতে দেখা গেছে। তার সাদা টিশার্ট ও কালো ট্রাউজারে নোংরা দাগ লেগে আছে। পায়ে আঘাত পাওয়ার কারণে খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন। তার পোশাকে রক্ত ও কালো দাগ লেগে থাকতে দেখা যায়।
ভারত ভ্রমণ শেষে যুক্তরাজ্যে ফিরছিলেন রমেশ। এয়ার ইনডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটিতে সঙ্গে তার ভাইও ছিলেন। দুর্ঘটনার পর সেই ভাইকে খুঁজছেন তিনি।এনডিটিভি জানিয়েছে, উড্ডয়নের পর এক পর্যায়ে আরও উপড়ে উঠতে ব্যর্থ হওয়ায় উড়োজাহাজটি নিচে নেমে আসে এবং বিমানবন্দরের কাছে একটি মেডিকেল হোস্টেলের উপর বিধ্বস্ত হয়। সেখানে অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
বিবিসি লিখেছে, ওই উড়োজাহাজে যাত্রীদের মধ্যে ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক, একজন কানাডার ও ৭ জন পর্তুগালের নাগরিক রয়েছে বলে জানিয়েছে এয়ার ইনডিয়া। বাকিরা সবাই ভারতীয় নাগরিক।
আহমেদাবাদের পুলিশপ্রধান বলছেন, উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় মনে হচ্ছে আরোহীদের কেউ বেঁচে নেই। বিবিসিকে তিনি বলেছেন, দুর্ঘটনাস্থল থেকে এ পর্যন্ত তারা ২০৪ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন। তবে তারা সবাই উড়োজাহাজটির যাত্রী কিনা সেটি নিশ্চিত নয়।
আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের তথ্যের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, রানওয়ে ২৩ থেকে একটার কিছু সময় পর উড়োজাহাজটি বিমানবন্দর ছাড়ে। এর কিছুক্ষণ পরই বিমানটি ‘মে ডে’ সঙ্কেত দেয়, এরপর আর উড়োজাহাজের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
আপনার মতামত লিখুন :