বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতির মঞ্চ ছিল জিম্বাবুয়ে সিরিজ। সেই সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে জিতেছে স্বাগতিকেরা। সিরিজ বড় ব্যবধানে জিতেও ‘এ-প্লাস’ পাচ্ছে না বাংলাদেশ! সিরিজজুড়ে ব্যাটিং নিয়ে বেশি চিন্তা করতে হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। ফিল্ডিংয়ে সহজ ক্যাচ হাতছাড়া আর ডেথ ওভারে বোলারদের ছন্দ হারানোও ছিল উল্লেখ করার মতো।
ম্যাচ শেষে নাজমুল হোসেন শান্তও জানালেন, পুরো সিরিজে তাঁর চিন্তার জায়গা ‘টপ অর্ডার’। কাল সিরিজের শেষ ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘টপ অর্ডারে যদি আরেকটু ভালো ব্যাটিং করতে পারি, তাহলে দলের জন্য ভালো হবে। ভালো শুরু পাওয়া দলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে। যে উইকেটে খেললাম, এটা নিয়ে খুব বেশি না ভেবে সামনের জন্য যেন চিন্তা করি। এই জায়গায় যদি আমরা ভালো শুরু এনে দিতে পারি, তাহলে দলটা আরেকটু এগিয়ে থাকবে।’
পাঁচ ম্যাচের মধ্যে চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে তানজিদ হাসান তামিম ও সৌম্য সরকারের ওপেনিং জুটিতে বাংলাদেশ তুলেছিল ১০১ রান। সিরিজে সবচেয়ে বড় জুটিও এটা। গতকাল আবার ৯ রানেই ভাঙে দুজনের জুটি। তার আগের তিন ম্যাচে ওপেনিংয়ে তামিমের সঙ্গী ছিলেন লিটন দাস। ছন্দ হারিয়ে বাদ পড়েছিলেন শেষ দুই ম্যাচে। তানজিদ তামিম দুই ফিফটি পেলেও তিন ম্যাচে ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হয়েছেন। সৌম্য এক ইনিংসে ভালো করে শেষ ম্যাচে ফেরেন ৭ রানে। এক ফিফটিসহ চট্টগ্রাম পর্বে তিন ম্যাচেই ব্যাট হাতে উজ্জ্বল ছিলেন তাওহীদ হৃদয়। ঢাকায় ফিরে দুই ম্যাচে তাঁর রান ১২ ও ১। পুরো সিরিজে শান্তর সর্বোচ্চ ইনিংস ৩৬। ব্যাট হাতে সাকিব আল হাসান দুই ম্যাচে করেছেন ১ ও ২১। অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, গতকালও তুলে নিয়েছেন ফিফটি। জাকের আলী অনিকের অভিজ্ঞতা অম্ল-মধুর।
বোলিংয়ে তাসকিন আহমেদ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন—দুজনই যৌথভাবে সর্বোচ্চ ৮টি করে উইকেট নিয়েছেন। ডেথ ওভারে সাইফউদ্দিন ছিলেন ব্যয়বহুল। শেষ ম্যাচে সাকিব ছাড়া রান বিলিয়েছেন সবাই। তারপরও এই সিরিজ ‘ভালো’ গেছে শান্তর কাছে। অনেক কিছুর উত্তরও নাকি এই সিরিজ থেকেই পেয়েছেন তাঁরা। শান্ত বললেন, ‘খুব ভালো একটা সিরিজ গেছে। সিরিজ জিতলে অবশ্যই আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তৃপ্তির জায়গা এটা বলব, আমরা যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলাম, যেগুলো আমাদের দেখার দরকার ছিল, দেখেছি। আমরা ক্লোজ ম্যাচ জিতেছি। টপ অর্ডাররা একটা ম্যাচে খুব ভালো শুরু এনে দিয়েছে। শেষ ম্যাচে মিডল অর্ডার একটু ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছে। এ রকম বেশ কিছু জায়গা আছে। রিশাদ পুরো সিরিজে খুব ভালো বোলিং করেছে।’
শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বাংলাদেশের হেরে যাওয়ার তালিকা নেহাত কম নয়। জিম্বাবুয়ের মতো দলের বিপক্ষে দুই ম্যাচে ৯ ও ৫ রানের জয়ে কতটা শিখতে পেরেছেন শান্তরা, সে প্রশ্নও থেকে যাচ্ছে। তিন ম্যাচে আগে ব্যাটিং পেয়েও স্কোরটা ১৭০ পর্যন্ত নিতে পারেনি তারা। টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটারদের ওয়ানডের মতো স্ট্রাইকরেট নিয়েও হয়েছে ব্যাপক আলোচনা। ক্যাচ মিস তো ছিলই।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের মতেও বাংলাদেশের ব্যাটিং ছিল হতাশার। তিনি বলেন, ‘আমাদের যে দল, ব্যাটিং পারফরম্যান্স একেবারেই ভালো হয়নি, যাদের কাছে যেমন প্রত্যাশা ছিল, তা আমরা পাইনি। ব্যাটিং একেবারেই ভালো হয়নি। তবে কয়েকজনের খেলা ভালো লেগেছে, যেমন তানজিদ তামিমের ধরন, তাওহীদ হৃদয়ের খেলা ভালো লেগেছে, জাকের আলীর খেলাটাও ভালো লেগেছে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং, জাস্ট অসাধারণ।’
নিজেদের মাঠে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শেষ বাংলাদেশ দলের।
আপনার মতামত লিখুন :