আফগানিস্তানের বিপক্ষে সবশেষ ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ দুই ওয়ানডেতে আবার ত্রিশ ওভারও টেকেনি ইনিংস। এবার ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই ভুল শোধরানোর লক্ষ্য নিয়েই ব্যাটিংয়ে নেমেছিল টাইগাররা। কিন্তু ধীর গতির ব্যাটিংয়ে অবশ্য প্রত্যাশিত রান জমা হয়নি স্কোরবোর্ডে। তাওহিদ হৃদয়ের ফিফটিতে কোনোরকমে দুইশ ছুঁয়ে অলআউট হয়ে গেছে স্বাগতিকরা।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) `হোম অব ক্রিকেট`খ্যাত মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.৪ ওভারে ২০৭ রানে অলআউট হয়ে গেছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫১ রান করেছেন মিডল অর্ডার ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়। এছাড়া অভিষিক্ত মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ব্যাট থেকে আসে ৪৬ রান।
অনেক বছর ধরেই মিরপুরের উইকেটে রানখরা। তার জন্য এতদিন সবার আঙুল ছিল এখানকার সাবেক কিউরেটর গামিনি ডি সিলভার দিকে। এই লঙ্কান কিউরেটরকে সরিয়ে মিরপুরের উইকেটের দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রসিদ্ধ টনি হেমিংকে। কিন্তু এই অস্ট্রেলিয়ান কিউরেটরও বদলাতে পারলেন না উইকেটের চরিত্র! তার বানানো উইকেটে প্রথমবার খেলতে নেমে রীতিমতো সংগ্রাম করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা।
এদিন ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকারের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে রোফারিও শেফার্ডের শিকার হন ইনফর্ম ব্যাটার সাইফ। আউট হওয়ার আগে তিনি ৬ বল খেলে মাত্র ৩ রান করেন। পরের ওভারের প্রথম বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হন দীর্ঘদিন পর এই সিরিজ দিয়েই ওয়ানডে দলে ফেরা সৌম্য। ফেরার আগে সৌম্য ৬ বলে ৪ রান করেন।
দলীয় ৮ রানে দুই ওপেনার বিদায় নেয়ার পর দলের হাল ধরেন শান্ত ও হৃদয়। তৃতীয় উইকেটে দুজনে মিলে ৭১ রানের জুটি গড়ে দলের প্রাথমিক বিপর্যয় সামালও দেন। কিন্তু সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি সাবেক অধিনায়ক শান্ত, ফিরেছেন ৬৩ বলে ৩ চারে ৩২ রানের ধীরগতির ইনিংস খেলে। এরপর অভিষিক্ত মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে নিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন হৃদয়।এর মধ্যে ৮৭ বলে হৃদয় তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১১তম ফিফটি। যদিও অর্ধশতক পূরণের পরই দলের ১১৫ রানে কাটা পড়েন তিনি। তাকে গøাভসবন্দি করান জাস্টিন গ্রিভস। হৃদয় ৫১ রানে কিপারের হাতে ক্যাচ দেওয়ার পর অবশ্য ক্যারিবিয়ানদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেননি। রিভিউ নেওয়ার পর দেখা গেছে বল ব্যাটের কানায় লেগেছে। হৃদয়ের ৯০ বলের ইনিংসে ছিল ৩টি চার। এরপর জুটি গড়ে খেলছিলেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ ও মাহিদুল ইসলাম। ৪৩ রান যোগ করেন তারা। কিন্তু রান যথেষ্ট না হওয়ায় ৪৩.৫ ওভারে মেরে খেলতে গিয়ে মাত্র ১৭ রানে ফিরেছেন মিরাজ। চেজের বলে ¯øগ সুইপ করতে গিয়ে ২৭ বলে ২ চারে থামেন তিনি। তাতে ১৫৮ রানে বাংলাদেশ হারায় পঞ্চম উইকেট। এরপর দায়িত্ব নিয়ে এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করেছেন অঙ্কন।
অভিষিক্ত এই উইকেটকিপার ব্যাটার ফিফটির কাছাকাছি গিয়ে আউট হয়েছেন। ইনিংসের ৪৬তম ওভারে রোস্টন চেইজকে ¯øগ সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন। তার আগে ৭৬ বলে করেছেন ৪৬ রান। অঙ্কন ফেরার পর দুইশ স্পর্শ করা নিয়েও শঙ্কা জেগেছিল। তবে শেষদিকে রীতিমতো ঝড় তোলেন রিশাদ হোসেন। এক চার আর দুই ছক্কায় ১৩ বলে ২৬ রান করেছেন তিনি। তাতে দুইশ ছুঁয়েছে বাংলাদেশ। ক্যারিবিয়ানদের হয়ে ৪৮ রানে মোট ৩ উইকেট নেন জেইডেন সিলস। দুটি করে নেন রোস্টন চেজ ও জাস্টিন গ্রিভস। একটি করে নিয়েছেন রোমারিও শেফার্ড ও খ্যারি পিয়েরে।
আপনার মতামত লিখুন :