শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২

নির্বাচনের দিনই গণভোট, সাফ জানালেন মির্জা ফখরুল

যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৫, ০৬:৪৯ পিএম

নির্বাচনের দিনই গণভোট, সাফ জানালেন মির্জা ফখরুল

নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে, এর আগে পরে কিছু নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ১৭ অক্টোবর সংস্কার বিষয়ে আমরা প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল সই করেছি। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেসব বিষয় সামনে রেখেই আমাদের পথ চলতে হবে। এখন নতুন নতুন প্রস্তাব আনছেন, যেগুলোতে মতানৈক্য রয়েছে, সেসব বিষয় জাতীয় সংসদে তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে সমাধান হবে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকালে যশোরের ঐতিহাসিক টাউন হল ময়দানে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা বিএনপি আয়োজিত সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য তরিকুল ইসলামের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। উপদেষ্টাদের উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন,সংস্কার কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোকে বলেন-যেসব বিষয়ে মতানৈক্য রয়েছে, আগামী সাত দিনের মধ্যে সমাধান করতে। 
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের কি আপনাদের হাতের খেলনা মনে হয়? ৮৩ কোটি টাকা খরচ করে ঐকমত্য কমিশন করে শুধু মিটিং আর খাওয়া-দাওয়াই করলেন। আমরা প্রত্যেক সময় মতামত দিয়েছি, আবার এখন কেন। আপনারা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে গেছেন।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা, অনেক ছাত্র, নারী, শ্রমিক, রাজনৈতিক, শিশুর রক্তে আমাদের এই নতুন বাংলাদেশের সূচনা। অনেক লড়াই-সংগ্রামের ফলে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এখন পানি ঘোলা করে দেশকে ফের অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করবেন না। দেশের মানুষকে আর অশান্তির পথে নেবেন না। রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের যে উদ্দেশ্য, দেশের সাধারণ মানুষ তা মেনে নেবে না।
কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কার্যকলাপের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল অযথা অন্যায় ও অপ্রয়োজনীয় ইস্যু তৈরি করে নির্বাচনের আগে গোলযোগ করার চেষ্টা করছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে বিতাড়নের পর দেশে একটি পূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশের সুযোগ এসেছে। এখন দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত জনগণ মেনে নেবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি কোনো ভেসে আসা দল নয়। জনগণের গড়া একটি রাজনৈতিক দল। স্বাধীনতার ঘোষকের দল। গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দল। সুতরাং কোনো চোখ রাঙানিতে আমরা পিছপা হব না।
প্রয়াত তরিকুল ইসলামকে স্মরণ করে তিনি বলেন, আজ আমি ভারাক্রান্ত হৃদয়ে সেই মহান নেতাকে স্মরণ করছি। তার অভাব অনুভব করছি। ভারাক্রান্ত এ কারণে যে, তিনি দেখে যেতে পারেননি, দেশ আজ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনামুক্ত হয়েছে। দীর্ঘদিন একসঙ্গে রাজনীতি করার প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, তরিকুল ইসলাম ছিলেন জনগণের প্রকৃত বন্ধু। জাতি একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিককে হারিয়েছে। 
তিনি বলেন,সবাই নেতা হতে পারেন না। সেই নেতা হন, যাকে মানুষ চিরকাল মনে রাখে। তার মৃত্যুতে কাঁদে, তাকে অনুভব করে। তরিকুল ইসলাম ছিলেন তেমনই একজন।দলের ক্রান্তিকালে ক্ষণজন্মা এই মানুষটিকে আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রায়ই ডাকতেন, তার পরামর্শ মনোযোগ দিয়ে শুনতেন। তিনি আমাদের হৃদয়ে জ্বলজ্বল করছেন।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকনের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক দপ্তর সম্পাদক, যশোর-১ (শার্শা) আসনে বিএনপির প্রার্থী মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক, যশোর-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য, যশোর-২ আসনে দলীয় প্রার্থী সাবিরা সুলতানা মুন্নী, কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, কেন্দ্রীয় সদস্য, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি যশোর-৬ আসনে দলীয় প্রার্থী কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, জেলা কমিটির সাবেক নেতা অ্যাডভোকেট মুহম্মদ ইসহক, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলামসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন। 
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন- তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক নার্গিস বেগম, তরিকুলের ছেলে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনকি সম্পাদক ও যশোর-৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!