ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ৯ মাস ধরে সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে যে বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তার বাইরে কোনো কিছু গায়ের জোরে এ দেশের মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হলে তার সব দায়-দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।
তিনি অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, এটি সাধারণ মানুষ বোঝেন না এবং বিএনপিও এটা গ্রহণ করবে না। তার মতে, পিআর হলো ‘বিভ্রান্ত করা’ এবং ‘ভোট পেছানো’।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বড়গাঁও ইউনিয়নের কিসমত কেশুর বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বড়গাঁও ইউনিয়নবাসীর সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, জোর করে হামাক পিআর চাপাই দিবা চাহাছে। পিআর বুঝেন? মুই বুঝিনা। আমরা এটা চিনি না আমরা দীর্ঘকাল শত বছর ধরে ভোট দিয়ে আসতেছি। মোর ক্যান্ডিডেট দাঁড়াবে তাকে তার মার্কা দেখে ভোট দিব। এটাই তো হয়ে আসছে। তিনি জামায়াতে ইসলামীর নাম উল্লেখ করে বলেন, তারা পিআর আইন করতে চাইছে। তিনি মনে করেন, এগুলো হচ্ছে শুধু বিভ্রান্ত করা, ভোট পিছানো।
নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এবার যদি নির্বাচনটা পিছিয়ে যায় তাহলে এই দেশটা একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। বিএনপি কেবল ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলোর পক্ষেই থাকবে বলে জানান তিনি।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি ভারতে গিয়ে হরতাল ঘোষণা করছেন এবং গাড়ি পোড়াচ্ছেন। কালকে কিন্তু গাড়িও পুড়ছে। দিল্লিতে বসে দেশের সর্বনাশ আর কইরেন না। এত সাহস থাকলে, জনগণের প্রতি ভালোবাসা থাকলে পালিয়ে আছেন কেন? আসেন না কেন দেশে? আমরাও জেল খেটেছি দীর্ঘদিন আপনারাও খাটেন কিছুদিন।
মির্জা ফখরুল বলেন,গণভবনের কাছে জনগণ পৌঁছালে সামরিক বাহিনীর টেলিফোনে হাসিনা হেলিকপ্টারে করে পালিয়ে যান। পাবলিক আপনাকে ছিঁড়ে খেয়ে ফেলবে, এই অবস্থা তৈরি হয়েছিল।
জামায়াতকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন বলেন, কিছু দল প্রচার করছে যে তারাই একমাত্র দেশপ্রেমিক ও সৎ দল এবং তারা ‘বেহেস্তের টিকিট’ বিক্রি করে। বেহেস্তের টিকিট আল্লাহতাআলা ছাড়া আর নবী ছাড়া কাহো দিবা পারে না। এগুলো যারা করতেছে এই দুনিয়াতে তারা কিন্তু ইসলামের অপব্যাখ্যা দিচ্ছে। আমার ধর্মের অপব্যাখ্যা দিচ্ছে। তিনি বলেন, যারা মোনাফেকি করে তাদের থেকে সাবধান থাকতে হবে এবং এটি ইসলাম ধর্ম নয়।
দল ক্ষমতায় গেলে তারেক রহমানের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে ১৫ মাসের মধ্যে ১ কোটি মানুষের কাজের ব্যবস্থা করবে। পাশাপাশি, মা-বোনদের ন্যায্যমূল্যে পণ্য কেনার জন্য‘ফ্যামিলি কার্ড’ এবং কৃষকদের সার-বিষ-পানিসহ ন্যায্যমূল্যে কেনার জন্য ‘ফার্মাস কার্ড’ দেওয়া হবে। বিএনপি বিচার বিভাগকে স্বাধীন করতে চায়, যাতে বিচারক নির্ভয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।
ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি ডা. আহম্মদ আলীর সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন-জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সাল আমিন, সাধারণ সম্পাদক মো. পয়গাম আলী প্রমুখ।

ডেইলি খবরের সর্বশেষ নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন।
আপনার মতামত লিখুন :