মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২

নির্বাচনি মিছিলে আমিও আপনাদের সঙ্গে থাকব: তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫, ০৯:৫৯ পিএম

নির্বাচনি মিছিলে আমিও আপনাদের সঙ্গে থাকব: তারেক রহমান

নিজস্বপ্রতিবেদক: দেশের জনগণের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান  বলেছেন, ‘আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে গ্রামে গঞ্জে, শহরে নগরে বন্দরে,বাজারে মহল্লায়,অলিতে গলিতে,রাজপথে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার নির্বাচনি মিছিলে আমিও আপনাদের সঙ্গে থাকব ইনশাআল্লাহ।’       
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চূয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। তারেক রহমান বক্তব্য শুরুর আগে সভায় উপস্থিত নেতা কর্মীরা উচ্চস্বরে স্লোগান দিতে থাকেন. ‘তরেক রহমান আসছে, বাংলাদেশ হাসছে, ২৫ তারিখ সারাদিন, বাংলাদেশের খুশির দিন।’ 
তরেক রহমান বলেন, ‘জনগণকে ক্ষমতাবান করার পূর্বশর্তই হচ্ছে, জনগণের সরাসরি ভোটে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ জনগণের কাছে জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠা। এ কারণেই বিএনপি সবসময় রাষ্ট্র এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে যেকোনো মূল্যে দেশে অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে।’
ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো থেমে নেই উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের জনগণ সাক্ষী, অকারণ শর্তের পর শর্ত জুড়ে দিয়ে কিংবা নানা অজুহাতে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী একাধিক চক্র নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে বারবার নানারকম বিঘ্ন সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছিল। তবুও বাধা উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত জনগণের কাঙ্ক্ষিত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষণা করেছে। তবে ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো থেমে নেই। গণতন্ত্রের পক্ষের সাহসী সন্তান ওসমান হাদিকে গুলি করা সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ। কী ছিল ওসমান হাদির অপরাধ? আমি মনে করি কয়েকটি প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই গণতন্ত্রকামী জনগণের সামনে ঘাতকদের চরিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠবে।’ 
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করা গেলে কারা খুশি হবে? নির্বাচন ছাড়াই বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে বহাল রাখা গেলে কারা লাভবান হবে? দেশে জনগণের ভোটে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে কাদের লাভ? আমি বিশ্বাস করি এসব প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই হাদির ঘাতকেরা লুকিয়ে রয়েছে। স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের শত্রুরা ঘাপটি মেরে রয়েছে।’
সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের সতর্ক থাকা দরকার। মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে দেশি বিদেশী অপশক্তি তখনো যেমন সক্রিয় ছিল এখনো সক্রিয়। সময়ের সাথে সাথে ষড়যন্ত্রকারীদের রং-রূপ- চেহারা হয়তো পাল্টেছে চরিত্র কিন্তু পাল্টায়নি।’ 
তারেক রহমান দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, ‘যারা গণতন্ত্রকামী জনগণকে ভয় দেখাতে চায়, তারা অবশ্যই ব্যর্থ হবে ইনশাআল্লাহ। ভয়ের কিছু নেই, মানুষের জয়-পরাজয়, জীবন-মৃত্যু সবকিছুই আল্লাহর হাতে নির্ধারিত।সুতরাং,আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার মিছিল নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকি, ষড়যন্ত্রকারীরা অবশ্যই পিছু হটতে বাধ্য হবে।’ 
বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশ হঠাৎ করেই সাগরের বুকে ভেসে ওঠা কোনো ভূখন্ড নয়। লাখো শহীদের আত্মত্যাগ আর অসংখ্য মা-বোনের সম্মান সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ নামক এই ভূখন্ডটির স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের সেই গৌরবময় ইতিহাস নিয়ে অসংখ্য গল্প, বই, কবিতা রচিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর ঘটনাবলি নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নিজের লেখা ‘একটি জাতির জন্ম’ শীর্ষক একটি নিবন্ধ রয়েছে। এই নিবন্ধটি আমাদের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অনন্য দলিল।’ 
একটি চক্র ‘বিজয়ে’র নতুন ইতিহাস রচনার অপচেষ্টা করছে, এমন শঙ্কা প্রকাশ করে তারেক রহমান বলেন, ‘পতিত পলাতক একটি চক্র স্রেফ নিজেদের হীন দলীয় স্বার্থে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বিকৃতি ঘটিয়েছে। 
তিনি বলেন, স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে দলীয় ইতিহাসে পরিণত করার অপরিণামদর্শী অপচেষ্টার কারণেই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এখন মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত একটি চক্র ‘বিজয়ে’র নতুন ইতিহাস রচনার অপচেষ্টা করছে। তবে পরাজিতের মুখে বিজয়ের ইতিহাস রচনা বেমানান, লজ্জার। ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।   
পরাজিত চক্রকে মোকাবেলায় প্রতিশোধ প্রতিহিংসার পরিবর্তে ‘বিজয়ে’র সুফল প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌঁছে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিজয় বার্তাকে শুধুমাত্র উদ্দীপ্ত স্লোগানে সীমাবদ্ধ না রেখে ‘বিজয়ে’র সুফল প্রতিটি নাগরিকের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিন। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি আবারো জনগণের সহযোগিতা সমর্থন এবং সুযোগ প্রত্যাশা করছে। 
তারেক রহমান বলেন, ‘আগামী দশকটি হবে রূপান্তরের দশক’ এই চিন্তা নিয়েই আমরা ‘দেশ গড়ার কর্মসূচি’ বাস্তবায়নের কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছি। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, চার কোটির বেশি তরুণ, কোটি কোটি কৃষক-শ্রমিক, কর্মক্ষম এই জনসংখ্যাকে কাজে লাগিয়ে, বাংলাদেশের বিজয়কে সুসংহত করাই বিএনপির লক্ষ্য।’

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!