নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা নৈরাজ্য ও ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা জাতীয় নির্বাচন তথা গণতন্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়াকে অনিশ্চিত করার ষড়যন্ত্র বলে মনে করে বিএনপি। এই পরিস্থিতিতে পুরনো চিহ্নিতঅপশক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী বৈঠকে এ আহ্বান জানানোর সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠক শেষে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন,গতকাল সন্ধ্যায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অকালে মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্নালি ল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। কাপুরুষোচিত এই হত্যাকান্ডের আমরা তীব্র ঘৃণা ও নিন্দা জানাচ্ছি। অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের জন্য আমরা আবারও দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন,এই অনাকাঙ্খিত মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গতকাল মাঝরাতে দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারসহ কয়েকটি কার্যালয়ে একদল উশৃঙ্খল মানুষ অগ্নিসংযোগ করেছে। কর্মরত সাংবাদিকদের জীবনমৃত্যুর ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নিউএজের সম্পাদক ফ্যাসিবাদবিরোধী জুলাই আন্দোলনসহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম সাহসী ব্যক্তিত্ব দেশবরেণ্য সাংবাদিক নুরুল কবিরের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। আমরা এই ঘৃন্য ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও ঘৃণা প্রকাশ করছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে ঘটনা প্রমাণ করে একটি পুরনো চিহ্নিত মহল দেশকে পরিকল্পিতভাবে নৈরাজ্যের পথে ধাবিত করতে চায়। অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের ভোটাধিকার তথা গণতান্ত্রিক অধিকারকে তারা নস্যাৎ করে দেশে ফ্যাসিবাদের একটি নতুন সংস্করণ তৈরি করতে চাচ্ছে। সরকারের নাকের ডগাতেই তারা এই তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণও মনে করে সরকারের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়। ফলে দেশ বিদেশে সরকার তথা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়ে চলেছে। উল্লেখ্য ইতিমধ্যেই ওই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে দেশের সকল দল প্রতিবাদ করে হত্যাকারীদের বিচারের দাবি জানিয়ে চলছে। হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করে চলেছে। এরূপ পরিস্থিতিতে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা আগামী জাতীয় নির্বাচন তথা গণতন্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়াকে অনিশ্চিত করার ষড়যন্ত্র বলেই আমরা মনে করি।
তিনি আরও বলেন, শান্তিকামী দেশবাসীর পক্ষ থেকে এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রকারীদের আমরা হুঁশিয়ার করে দিতে চাই।এত রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের দেশকে আমরা ধ্বংস হতে দিব না। এই অপশক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে।এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে নৈরাজ্যবিরোধী সকল রাজনৈতিক সামাজিক শক্তির আজ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নাই। যে ঐক্যের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার ও জাতীয় নির্বাচন আদায় করছি তারই ধারাবাহিকতায় আমরা সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে আজ আবারও ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানাচ্ছি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগী ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান এবং মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।এছাড়া দেশের বাইরে ও ঢাকার বাইরে থাকায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ভার্চুয়ালি এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় যুক্ত হন।ছবি-সংগৃহীত

ডেইলি খবরের সর্বশেষ নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন।
আপনার মতামত লিখুন :