বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

রমজান পেয়েও যারা হতভাগা

রমজান প্রতিদিন

প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০২৪, ০৪:২৬ পিএম

রমজান পেয়েও যারা হতভাগা

পবিত্র রমজানে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত-বরকত অবতীর্ণ হয়। মসজিদে মসজিদে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ঢল নামে। ঘরে ঘরে বিরাজ করে সেহরি-ইফতার ও রোজার আবহ। কেউ যদি এ মাসের ইবাদতগুলো আদায়ে গাফিলতি না করে বরং ধারাবাহিকতা রক্ষা করে, তাহলে ভবিষ্যতের জন্য সব ইবাদত-বন্দেগি তার অভ্যাসে পরিণত হবে। বিধায় এ মাসের আমলগুলো খুব গুরুত্বসহকারে পালন করা চাই। আমরা যতটা আন্তরিকতার সঙ্গে প্রভুকে ডাকব, প্রভুও ততটুকুই এগিয়ে এসে সাড়া দেবেন। এ মাসের ইবাদত-বন্দেগির জন্য মহান প্রভু বান্দাদের জন্য বিশেষ অফার করেছেন। এই অফার গ্রহণ করে যারা তাদের দৈনন্দিন আমল পালন করে চলছে, মহান প্রভু তাদের পুরস্কৃত করবেন। পক্ষান্তরে যারা এ মাস পেয়েও এর যথাযথ কদর করেনি, তাদের জন্য রয়েছে অভিশাপ। হাদিস শরিফে এমনটিই বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি রমজান মাসকে গুরুত্বসহকারে নেয়নি, বরং অবহেলা করে এর সময়গুলো নষ্ট করেছে, তার প্রতি মালিক অসন্তুষ্ট।

আল্লাহর রাসুল (সা.) একবার মসজিদে নববির মিম্বারের একেকটি সিঁড়ি চড়ছিলেন, তখন পা রাখার সময় ‘আমিন আমিন আমিন’ তিনবার বলেছিলেন। বিশিষ্ট সাহাবি কাব বিন উজ্জাসহ উপস্থিত যারা ছিলেন, তারা সবাই আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আজকে এমন একটি কাজ আপনি করলেন, যা কখনো করতে দেখিনি। এর কারণটা কী? আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, কী বিষয়ে? সাহাবায়ে কেরাম (রা.) বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনি ‘আমিন আমিন আমিন’ তিনবার বললেন। তখন নবী কারিম (সা.) বললেন, আমি যখন মিম্বারের প্রথম সিঁড়িতে পা রাখলাম, তখন জিবরাইল (আ.) বললেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক যে পিতা-মাতা উভয়কে অথবা একজনকে পেয়েও (তাদের খেদমত করে) জান্নাতে প্রবেশ করতে পারল না। তখন আমি তাকে সমর্থন করে বললাম ‘আমিন’ (হে আল্লাহ কবুল করো)। অতঃপর তিনি বললেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক যে রমজান পেয়েও নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারল না। আমি তাকে সমর্থন করে বললাম ‘আমিন’। হজরত জিবরাইল (আ.) আবারও বলেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক যার কাছে আমার নাম আলোচিত হলো অথচ সে আমার ওপর দরুদ পড়ল না। আমি তার বক্তব্যকে সমর্থন করে বললাম ‘আমিন’। (ইবনে হিব্বান: ৯০৮; আল-আদাবুল মুফরাদ: হাদিস ৬৪৬)

অনেকেই হয়তো ভাবছেন, সবেমাত্র রমজানুল মোবারক শুরু হলো। আর কিছুদিন না হয় যাক। পরে কোমর বেঁধে ইবাদতে নেমে যাব। তখন তাহাজ্জুদের জায়নামাজে দাঁড়িয়ে কেঁদে কেঁদে সব গুনাহ মাফ করিয়ে নেব। সন্তুষ্ট করে নেব প্রভুকে। এরকম ধারণা আর স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে যাবে। কেননা, এটি চিরশত্রু শয়তানের ধোঁকা। আমাদের ইমান-আমল ধ্বংসের জন্য শয়তানের এই সুন্দর পরিকল্পনাকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না; বরং রমজানের আগে থেকেই আমরা যে পরিকল্পনা লালন করে আসছি, সে পথ ধরেই চলতে হবে। পৌঁছে যেতে হবে গন্তব্যে। আল্লাহতায়ালা সবাইকে পবিত্র রমজানের হক পরিপূর্ণরূপে আদায় করার তাওফিক দান করুন।

লেখক: মাওলানা মিজানুর রহমান

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!