বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ড. ইউনূস প্রশাসনের ভবিষ্যৎ কেন অনিশ্চিত-আল জাজিরার রিপোর্ট

ডেইলি খবর ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৫, ০৯:৫৯ এএম

ড. ইউনূস প্রশাসনের ভবিষ্যৎ কেন অনিশ্চিত-আল জাজিরার রিপোর্ট

গত ২০ মে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দেশের তিন বাহিনীর সঙ্গে রুদ্ধদার বৈঠক করেন অন্তর্র্বতী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই বৈঠক এমন এক সময় হয়েছে যখন ঢাকায় ক্ষমতার দ্ব›দ্ব তীব্রতর হচ্ছে বলে সরকারের একাধিক কর্মকর্তা আল–জাজিরাকে জানিয়েছে। এ ঘটনাকে দেশের সামাজিক ও মূলধারার গণমাধ্যমে অন্তর্র্বতী প্রশাসন এবং সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে একধরনের ‘স্নায়ু যুদ্ধ’ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এই টানাপোড়েন এখন ইউনূসের ভূমিকার ভবিষ্যৎকে হুমকির মুখে ফেলেছে।২০২৪ সালের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছেড়ে ভারত পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তার বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ও গুমের ঘটনা সংঘটনের অভিযোগ উঠেছে।
ইউনূস পদত্যাগ করার কথা ভাবছেন এমন গুজব ছড়ানোর মধ্যে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে গতকাল শনিবার উপদেষ্টা পরিষদের আরেক বৈঠকের পর পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন,‘প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গেই আছেন, তিনি পদত্যাগের কথা বলেননি,অন্য উপদেষ্টারাও আছেন, আমরা আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছি।’ তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, এ অচলাবস্থা এখনো কাটেনি।
সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনার কারণ কী-শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার দেশের বেসামরিক আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে। পুলিশ বাহিনী দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকে, বহু থানায় পুলিশ সদস্যরা অনুপস্থিত থাকেন ও জনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে। এ অবস্থায় সেনাবাহিনী মোতায়েন অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। যদিও গত আগস্টের মাঝামাঝি পুলিশ আবার কার্যক্রম শুরু করেছে, তারপরও দেশে চলমান অস্থিরতার কারণে বেসামরিক-সামরিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি বজায় রাখা হয়েছে।
গত বুধবার সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান খোলাখুলি আহ্বান জানিয়ে বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। তিনি সতর্ক করে বলেন, সেনাবাহিনীকে দীর্ঘ সময় ধরে বেসামরিক কাজে নিয়োজিত রাখলে তা দেশের প্রতিরক্ষা দুর্বল করতে পারে।সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে আরও বলেন,‘বাংলাদেশের প্রয়োজন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। এটি শুধু একটি নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই সম্ভব, অনির্বাচিত সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের মাধ্যমে সম্ভব নয়।’ সেনাপ্রধানের মন্তব্যে এ ভিন্নমতের ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে তিনি ইউনূস প্রশাসনের ঘোষিত অবস্থানের সঙ্গে একমত নন। অন্তর্র্বতী প্রশাসন বলেছে,২০২৬ সালের মাঝামাঝির আগে কোনো নির্বাচন নয়। কেননা,প্রথমে রাজনৈতিক ও নির্বাচনী সংস্কারের জন্য সময় দরকার, যাতে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা যায়।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও কি অন্তর্র্বতী সরকারের উত্তেজনা রয়েছে-হ্যাঁ, উত্তেজনা রয়েছে। কারণ গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্র্বতী সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন দিক থেকে ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে রয়েছে এটি। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন চায়। এক্ষেত্রে তারা অনড়। অন্যদিকে এ বছরের শুরুতে ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং আরও কয়েকটি দল বলছে, যেকোনো নির্বাচনের আগে দেশজুড়ে ব্যাপক সংস্কার ও গত বছরের ছাত্র আন্দোলনে দমন-পীড়নের ঘটনায় জড়িত সাবেক আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
গতকাল মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি ও দেশের আরেকটি বড় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বৈঠক হয়েছে।ড. ইউনূস কি পদত্যাগের কথা ভাবছিলেন-গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর ঘোষণা দেওয়া হয়, মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান হিসেবে পদত্যাগ করছেন না। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে প্রকাশ পেতে শুরু করে, ইউনূস বৃহস্পতিবার বিকেলে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন এবং টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। এর আগে এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চলে ব্যাপক আলোচনা।
ওই দিন সন্ধ্যায় জুলাই আন্দোলনের ছাত্রনেতা ও সদ্য গঠিত এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় ইউনূসের সঙ্গে ছিলেন আরও দুই ছাত্র উপদেষ্টা। ইউনূসকে দায়িত্বে থেকে যাওয়ার অনুরোধ জানান নাহিদ ইসলাম।বৈঠক শেষে নাহিদ বিবিসি বাংলাকে নিশ্চিত করেন, অধ্যাপক ইউনূস সত্যিই পদত্যাগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছিলেন।মুহাম্মদ ইউনূস কেন পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন-স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউনূস ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক চাপে পড়ে হয়তো পদত্যাগের কথা ভাবছিলেন।
দুজন উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে স্থানীয় একটি পত্রিকা বলেছে,ইউনূস বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের জানান, গত বছর হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক দলগুলো ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান অন্তর্র্বতী সরকারকে সহযোগিতা করে রাষ্ট্রীয় সংস্কার ও দেশে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রূপান্তর ঘটানোর যে প্রতিশ্রতি দিয়েছিল, তারা তা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বিভিন্ন খবরে জানা যায়, ইউনূস এমন মন্তব্য করেছেন যে তাঁর পক্ষে দায়িত্ব পালন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি নির্বাচনের জন্য চাপ বেড়েই চলেছে। তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনা খুব কম।’ তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, (এমন পরিস্থিতিতে) যেকোনো নির্বাচন হলে তা হস্তক্ষেপ বা কারচুপির শিকার হতে পারে এবং তিনি এর দায় নিতে চান না।পরে ইউনূস বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর সরকারি বাসভবন যমুনায় তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকের পর বিবিসি বাংলাকে দেওয়া বক্তব্যে নাহিদ নিশ্চিত করেন, ইউনূস পদত্যাগের চিন্তা করছিলেন এবং বলেন, ইউনূস নিজেকে আন্দোলন ও রাজনৈতিক অচলাবস্থার কাছে ‘জিম্মি’ মনে করছেন।ইতিমধ্যে মুহাম্মদ ইউনূসের উচ্চাভিলাষী সংস্কার কর্মসূচি হোঁচট খাচ্ছে বলে জানা গেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, পুলিশ, বেসামরিক প্রশাসনসহ রাষ্ট্রের প্রধান অঙ্গগুলো ক্রমেই বেশি অন্তর্র্বতী সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।মুহাম্মদ ইউনূস কেন পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন-স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউনূস ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক চাপে পড়ে হয়তো পদত্যাগের কথা ভাবছিলেন।
দুজন উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে স্থানীয় একটি পত্রিকা বলেছে, ইউনূস বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের জানান,গত বছর হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক দলগুলো ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান অন্তর্র্বতী সরকারকে সহযোগিতা করে রাষ্ট্রীয় সংস্কার ও দেশে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রূপান্তর ঘটানোর যে প্রতিশ্রতি দিয়েছিল, তারা তা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।বিভিন্ন খবরে জানা যায়, ইউনূস এমন মন্তব্য করেছেন যে তাঁর পক্ষে দায়িত্ব পালন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি নির্বাচনের জন্য চাপ বেড়েই চলেছে। তিনি বলেন ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনা খুব কম।’ তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, (এমন পরিস্থিতিতে) যেকোনো নির্বাচন হলে তা হস্তক্ষেপ বা কারচুপির শিকার হতে পারে এবং তিনি এর দায় নিতে চান না।
পরে ইউনূস বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর সরকারি বাসভবন যমুনায় তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেন।বৈঠকের পর বিবিসি বাংলাকে দেওয়া বক্তব্যে নাহিদ নিশ্চিত করেন, ইউনূস পদত্যাগের চিন্তা করছিলেন এবং বলেন,ইউনূস নিজেকে আন্দোলন ও রাজনৈতিক অচলাবস্থার কাছে ‘জিম্মি’ মনে করছেন।ইতিমধ্যে মুহাম্মদ ইউনূসের উচ্চাভিলাষী সংস্কার কর্মসূচি হোঁচট খাচ্ছে বলে জানা গেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, পুলিশ, বেসামরিক প্রশাসনসহ রাষ্ট্রের প্রধান অঙ্গগুলো ক্রমেই বেশি অন্তর্র্বতী সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।সূত্র: আল জাজিরা
 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!