নিজস্ব প্রতিবেদক: সারাদেশেই শীতের প্রকোপ বেড়েছে। শ্রমজীবী ও ছিন্নমুল মানুষের কষ্ট বেড়ে যাচ্ছে। পৌষের মাঝামাঝিতে এসে ঘন কুয়াশা ও হাড়কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সারা দেশ। উত্তরের হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘন কুয়াশা মিলিয়ে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, কুয়াশাচ্ছন্ন পরিস্থিতির কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আরও কয়েক দিন এমন শীতের অনুভূতি থাকতে পারে।
ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাসের প্রভাবে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শিশু,বয়স্ক ও খেটে খাওয়া মানুষ। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। অনেক এলাকায় ভোরের দিকে যানবাহন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী,মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত দেশজুড়ে কুয়াশার চাদর বিস্তৃত থাকতে পারে। এর প্রভাবে সড়ক, নৌ ও আকাশপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ১১, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১১ দশমিক ৩, কুমিল্লা ও যশোরে ১১ দশমিক ৫, পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ১১ দশমিক ৮, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও নীলফামারীর ডিমলায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রিসেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদদের মতে,বর্তমানে দেশের কিছু এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী কয়েক দিনে রাতের তাপমাত্রা আরও ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। এতে ভোর ও সকালের দিকে কুয়াশা আরও ঘন হবে এবং শীতের তীব্রতা বাড়বে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ডিসেম্বরের শেষ ভাগ থেকে জানুয়ারির শুরু পর্যন্ত শীতের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে। জানুয়ারিতে দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা দরিদ্র, বয়স্ক ও খোলা আকাশের নিচে বসবাসকারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
সোমবার মধ্যরাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোনো কোনো এলাকায় তা দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে গিয়ে উড়োজাহাজ, নৌযান ও সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, বিশেষ করে নদী অববাহিকা অঞ্চলে।
নতুন বছরের শুরুতে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে ঘন কুয়াশার মধ্যে সড়ক ও নৌপথে চলাচলের সময় হেডলাইট জ্বালিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ। পাশাপাশি শীতে ছিন্নমূল মানুষ ও শিশুদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে শীতের ধরন বদলে যাচ্ছে কখনো স্বল্প সময়ের তীব্র ঠান্ডা, আবার কখনো দীর্ঘ সময় ধরে শুষ্ক ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া দেখা যাচ্ছে। তাই শীতকালীন প্রস্তৃতি ও সতর্কতা এখনই জরুরি। শীতের তীব্রতা সামনে আরও কিছুটা বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। সংগৃহীত ছবি

ডেইলি খবরের সর্বশেষ নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন।
আপনার মতামত লিখুন :