নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে শীতের সবজিতে বাজার ঠাসা। তবে দাম একটু চড়া। রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এই বাজার থেকে সবজি কিনছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আখতার হোসেন। সবজি বিক্রেতা তাঁর কাছে প্রতিটি ফুলকপির দাম চান ৬০ টাকা। এ নিয়ে এক মিনিট দর-কষাকষির পর ৫০ টাকা দরে দুটি ফুলকপি কেনেন আখতার।
এসময় মুহীবুলসহ একাধিক ব্যক্তিরা আরও বলেন, ‘গত বছর এই সময়ে ফুলকপি, বাঁধাকপি কিনেছিলাম ৩০-৪০ টাকা দরে। শীত মৌসুম হিসেবে এখন তো দাম আরও কম থাকার কথা। কিন্তু বাজারে এসে দেখছি দাম প্রত্যাশার চেয়ে বেশি।’
প্রতিটি বাজারেই এখন ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, শালগম, মুলাসহ বিভিন্ন ধরনের শীতের সবজি আসতে শুরু করেছে। দিন দিন সবজির সরবরাহও বাড়ছে। তবে গত বছরের এই সময়ের তুলনায় সবজির দাম এখনো বেশি। গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
একাধিক বিক্রেতা জানান, বর্তমানে উৎপাদন এলাকাতেই সবজির দাম বেশি। কারণ, কৃষকেরা আগাম চাষ করা নতুন সবজির ভালো দাম পাচ্ছেন। এ ছাড়া গত অক্টোবর মাসে বৃষ্টির কারণে কৃষকদের কিছু সবজি নষ্ট হয়েছিল। ফলে এখন বেশি দামে বিক্রি করে সেই আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিচ্ছেন তাঁরা। এসব কারণে ঢাকার পাইকারি ও খুচরা বাজারেও সবজির দাম বেশি।
ঢাকার একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৪০-৬০ টাকা, প্রতি কেজি শিম ও বেগুন ১০০-১২০ টাকা, মুলা ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাধারণত শীতের শুরুতে ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা, শিম ৪০-৬০ টাকা, মুলা ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হয়। সবজির সরবরাহ বাড়লে দাম আরও কমে আসে।
বর্তমানে প্রতি কেজি টমেটো ১২০-১৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ, করলা ও বরবটি ১০০-১২০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৬০-৮০ টাকা, পটোল ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এসব সবজির দামও তুলনামূলক বেশি বলে জানান বিক্রেতারা।
রাজধানীর বাজারগুলোতে এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১০০-১২০ টাকা। এক মাস ধরে এ দামেই খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রাখতে পণ্যটি আমদানির দাবি জানিয়ে আসছিলেন আমদানিকারকেরা। তবে গত বুধবার সচিবালয়ে কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে না।
বর্তমানে দেশি পুরোনো আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজি। এ বছর দীর্ঘ সময় ১৮-২০ টাকা দরে আলু বিক্রি হয়েছে। মাসখানেক হয় আলুর দাম কিছুটা বেড়েছে। এরই মধ্যে বাজারে স্বল্প পরিমাণে আগাম নতুন আলু আসতে শুরু করেছে। এসব আলুর দাম অবশ্য বেশি; কেজি ১৪০-১৬০ টাকা।
অবশ্য বাজারে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে। গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০-৩০০ টাকা ও প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ কিছুটা কম রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। সামনে সবজির দাম আরও কমবে বলেই আশা করছি। ছবি-সংগৃহীত

ডেইলি খবরের সর্বশেষ নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন।
আপনার মতামত লিখুন :