বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

অভিনয়শিল্পীর নামে হত্যাচেষ্টার মামলা/বিশিষ্টজনের উদ্বেগ

ডেইলি খবর ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৫, ১০:১২ এএম

অভিনয়শিল্পীর নামে হত্যাচেষ্টার মামলা/বিশিষ্টজনের উদ্বেগ

দেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে একজনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ১৭ অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে এবার মামলা হয়েছে। আদালতে করা হত্যাচেষ্টার মামলাটি নথিভুক্ত করতে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ভাটারা থানায় পাঠানো হয়। গত মার্চে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি করেন এনামুল হক নামে এক ব্যক্তি।
আসামিদের মধ্যে আছেন অভিনেত্রী সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি সুবর্ণা মুস্তাফা, রোকেয়া প্রাচী, সোহানা সাবা, মেহের আফরোজ শাওন, নুসরাত ফারিয়া, অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তার,আশনা হাবিব ভাবনা, জ্যোতিকা জ্যোতি, অভিনেতা আজিজুল হাকিম, জায়েদ খান ও সাইমন সাদিক।
ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন হক জানান,সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ২৮৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এত আসামির নাম অন্তর্ভুক্ত করে মামলা নথিভুক্ত করতে একটু সময় লাগে, সে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সূত্র জানায়,মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ৩০০-৪০০ জন আসামি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থ জোগানদাতা হিসেবে চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।গত ২০ এপ্রিল ঢাকার আদালতে করা এক হত্যা মামলায় অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনকে আসামি করা হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ঢাকার মিরপুরে বিএনপিকর্মী মাহফুজ আলম শ্রাবণ নিহতের ঘটনায় তাঁর ভাই মামলাটি করেন। আসামিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর, সাবেক মেয়র,দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান,সাবেক নির্বাচন কমিশনার,আমলা,ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, আইনজীবী ও অভিনেতা রয়েছেন। এতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অভিনেতা ইরেশ যাকেরের নাম থাকায় ব্যাপক সমালোচনা হয়। তাঁকে আসামি করার বিষয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘এটা গভীরভাবে একটা বিরক্তিকর ব্যাপার।’
ভুয়া মামলার বাদীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে গত সোমবার সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি বাহারুল আলম বলেছেন, অনেকে মামলা দিয়ে বাণিজ্য করছেন বলে অভিযোগ আসছে। মামলা হলেই গ্রেপ্তার করা যাবে না। তদন্তে যার দায় পাওয়া যাবে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উদ্দেশ্যমূলক মামলা তদন্তসাপেক্ষে প্রত্যাহার দাবি-ব্যবসায়ী, অভিনেতা, গণমাধ্যমকর্মীসহ অনেকের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হয়রানিমূলক মামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন ২৩ বিশিষ্টজন। হিউম্যান রাইটস ফোরামের পাঠানো বিবৃতিতে তারা বলেন, এসব মামলায় এমন অনেক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে, যার সঙ্গে ঘটনার ন্যূনতম সম্পর্ক নেই। এ ধরনের মামলা গ্রহণে সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং ইরেশ যাকেরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক মামলা তদন্তসাপেক্ষে অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হোক।
বিবৃতিতে সই করেছেন– ড. হামিদা হোসেন, সুলতানা কামাল, রাজা দেবাশীষ রায়, জেড আই খান পান্না, শাহীন আনাম, জাকির হোসেন, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, রঞ্জন কর্মকার, সালেহ আহমেদ, সঞ্জীব দ্রং, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ডা. ফওজিয়া মোসলেম, শামসুল হুদা ও খুশী কবির।
এদিকে,আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবিরের সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, ছাত্র-জনতা হত্যার ঘটনায় মামলা করার অধিকার সাধারণ মানুষের রয়েছে। তবে এসব মামলায় কাউকে ফাঁসানো বা হয়রানির উদ্দেশ্যে আসামি করা হলে তা মানবাধিকারের পরিপন্থি। এ ছাড়া বøাস্ট এক বিবৃতিতে জুলাই গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দ্রæত ন্যায়বিচার এবং হয়রানিমূলক মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে।

 

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!