জাতীয় সংসদের সামনে জুলাই যোদ্ধাদের দাবি ও বিক্ষোভের মুখে জাতীয় সনদের অঙ্গীকারনামার পঞ্চম দফা সংশোধন করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আজ শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরের দিকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই সংশোধনের কথা জানানো হয়।
জাতীয় সনদের অঙ্গীকারনামার পঞ্চম দফায় আগে ছিল, “গণঅভ্যুত্থানপূর্ব ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানকালে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারগুলোকে যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করব।”
সংশোধিত দফায় বলা হয়েছে, “গণ-অভ্যুত্থানপূর্ব বাংলাদেশে ১৬ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান কালে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত সকল হত্যাকান্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারকে এবং জুলাই আহতদের রাষ্ট্রীয় বীর, আহত জুলাই বীর যোদ্ধাদের যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান যেমন মাসিক ভাতা, সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ব্যবস্থা এবং শহীদ পরিবার ও আহত বীর যোদ্ধাদের আইনগত দায়মুক্তি, মৌলিক অধিকার সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো।”
কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ জানান,কমিশন এই অঙ্গীকারনামাবাস্তবায়নের ব্যাপারে সরকারকে সুস্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্টভাবে উপস্থাপন করবে।বিষয়ে রাজনৈতিক দল এবং ঐকমত্য কমিশনের কোনো মতপার্থক্য নেই।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
দফাটি নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন ‘জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধা’ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিরা। তাঁরা গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বিক্ষোভ করেন। আজ সকালে তাঁরা জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘জুলাই সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানস্থলে অবস্থান নেন। পরে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপ, বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আগুন জ্বলতে দেখা যায়। এই ঘটনায় ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ কয়েকজন আহত হন। মোটকথা রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো মানিক মিয়া এভিনিউ।
আপনার মতামত লিখুন :