রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির মামলায় সাবেক সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ ৫ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।আজ সোমবার ঢাকার মেট্টোপলিটন মাজিস্ট্রেট আতিকুর রহমান এ আদেশ দিয়েছেন।এ ছাড়া আগামীকাল মঙ্গলবার তাদের রিমান্ড শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত।মামলার অপর আসামিরা হলেন আবু সুফিয়ান, আব্দুর রহমান ওরফে মানিক, হাবিবুর রহমান ফরহাদ ও শাহিন হোসেন।
আজ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল ইসলাম আসামিদের সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করে আদালতে হাজির করেন।
মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির সময় গতকাল রবিবার রাতে তাদের আটক করে সেনাবাহিনী। ক্লিনিকের মালিক আফরুজা শিল্পী বাদী হয়ে আজ মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়,মোহাম্মদপুরের ‘সেইফ হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’-এ গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে সাড়ে ১২ টার দিকে শাহিন তার স্ত্রীকে নিয়ে আসেন বাচ্চা ডেলিভারি করাতে। বাচ্চার অবস্থা খারাপ দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। তবে শাহিন অনুরোধ করে বলেন, যেভাবে হোক তার স্ত্রীর ডেলিভারির ব্যবস্থা করতে। ডেলিভারী চিকিৎসা চলমান থাকা অবস্থায় তার স্ত্রী নরমাল ডেলিভারিতে একটি মৃত ছেলে বাচ্চা প্রসব করেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি শাহিনকে জানায়। শাহিন অর্থ প্রদান করতে চাইলেও মানবিক দিক বিবেচনা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন অর্থ না নিয়েই ছাড়পত্র প্রদান করে। এরপর গত ২২ সেপ্টেম্বর দুপুর ২ টার দিকে আসামিরা হাসপাতালে এসে বাচ্চা মারা যাওয়ার কারণে মামলা না করার জন্য আফরুজা শিল্পীর ছেলে আবু সাইদের কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদ দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আসামিরা হাসপাতালের মেশিন ও সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে দেড় লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে।
একপর্যায়ে আসামিরা আবু সাইদকে তুলে নিয়ে হত্যার হুমকি দিলে তাদের ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিলে তারা চলে যান এবং অবশিষ্ট টাকা দ্রæত সময়ের মধ্যে দিতে বলেন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে আসামিরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অবশিষ্ট টাকা দ্রæত দিয়ে দিতে বলেন এবং টাকা দ্রæত না দিলে একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করবে বলে জানান।
এরপর গত রবিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে আসামিরা তাদের মোবাইলে কল দিয়ে হাজারীবাগের পশ্চিম ধানমন্ডি ৫ নম্বর রোডস্থ বøক-এ বসিলা আবাসিক এলাকার হাউজিং অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে ১ লাখ টাকা চাঁদা নেন এবং অবশিষ্ট টাকা দ্রæত সময়ের মধ্যে না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। আফরুজা শিল্পী বিষয়টি মৌখিকভাবে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে জানালে তারা দ্রæত বিষয়টি আমলে নিয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর ধানমন্ডিতে গত মে মাসে একজন প্রকাশকের বাসা ঘিরে মব সৃষ্টির ঘটনায় সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ তিনজন। তখন থানায় গিয়ে নিজের জিম্মায় তাদের ছাড়িয়ে নিয়েছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। তবে এবার মাসউদেও সুপারিশ বা মুচলেখা ছিল না।
আপনার মতামত লিখুন :