বুধবার, ০৮ অক্টোবর, ২০২৫, ২২ আশ্বিন ১৪৩২

এনবিআরের সদস্য বেলালের ৫ কোটি অবৈধ টাকা দুদকের মামলা

আইন-অপরাধ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৫, ০৯:০৮ পিএম

এনবিআরের সদস্য বেলালের ৫ কোটি অবৈধ টাকা দুদকের মামলা

এবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট বাস্তবায়ন ও আইটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সদ মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রায় ৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদ গোপনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করেছে।
দুদকের উপপরিচালক মো. সাইদুজ্জামান বাদী হয়ে মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকায় এ মামলা দায়ের করা হয়য়েছে। এ ছাড়া এনবিআরের বর্তমান প্রসাশনে প্রভাব বিস্তারের বিস্তার অভিযোগও রয়েছে।
দুদকের মামলায় বলা হয়েছে, সরকারি দায়িত্ব পালনের সময় বেলাল চৌধুরী অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন এবং সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য দেন। ২০২২ সালের জুলাই মাসে জমা দেওয়া তার সম্পদ বিবরণীতে তিনি ৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকার সম্পদ দেখান। তবে দুদকের অনুসন্ধানে তার নামে ১৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়। অর্থাৎ তিনি প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার সম্পদ গোপন করেন। দুদক এজহারে আরো উল্লেখ করা হয়, দায়-দেনা বিবেচনায় নীট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। বৈধ আয় হিসেবে পাওয়া যায় প্রায় ১১ কোটি ৫২ লাখ টাকা। কিন্তু বাস্তবে তার আয় অপেক্ষা অতিরিক্ত ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য উদঘাটন করেছে দুদক।
অনুসন্ধানে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও নোয়াখালী জেলায় জমি, ফ্ল্যাট, প্লট ও বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারসহ বিপুল সম্পদ তিনি অনিয়মের মাধ্যমে ক্রয় করেছেন। এজাহারে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা রুজ্জুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমসের সাবেক কমিশনারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
দুদকের মামলার পাশাপাশি বেলাল চৌধুরীর সাম্প্রতিক বিদেশ সফর নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তিনি গত ১৮ সেপ্টম্বর রাতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে অস্ট্রেলিয়ার সিডনির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। অথচ তার সরকারি জিও ছিল ইন্দোনেশিয়ায় একটি প্রশিক্ষণে যোগ দেওয়ার জন্য। এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের কারণ দর্শানোর নোটিশর জবাবে বেলাল হোসেন চৌধুরী ১০ দিনের সময় চেয়েছেন। গত রবিবার কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে তিনি বলেন, মাননীয় আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পরবর্তীতে দুই মাসের জন্য বিদেশযাত্রার অনুমতি পাই এবং সরকারের জিও নিয়ে ১৯–২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইন্দোনেশিয়ায় প্রশিক্ষণে অংশ নিই। পথে ট্রানজিট হিসেবে সিডনিতে ১৭ ঘণ্টা অবস্থান করি। দেশে ফিরে বিষয়টি আদালতকে অবহিত করেছি। প্রয়োজনীয় দলিল সংগ্রহে সময় লাগায় কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের জন্য আরও ১০ কার্যদিবস সময় প্রার্থনা করছি।
দুদকের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম বলেন,এনবিআর কর্মকর্তা বেলাল হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০১৯ সাল থেকেই তদন্ত করছে দুদক। সর্বশেষ ২০২২ সালের সম্পদ বিবরীতে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী ও প্রাপ্ত সম্পদের মধ্যে প্রায় ৫ কোটি টাকার সম্পদ গোপন করার তথ্য পাওয়ায়, তার নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি ঢাকার একটি আদালত বেলাল হোসেন চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। দুদকের আবেদনে বলা হয়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে-বেনামে দেশে ও কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে প্রচুর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তাছাড়া তিনি তার ভাইসহ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ডেভেলপার, রিয়েল এস্টেট কোম্পানিসহ শেয়ার বাজাওে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছেন মর্মে তথ্য পাওয়া যায়। এরইপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে নামে দুদক।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!