রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সংসদে সায়েদুল হক সুমনকে এক হাত নিলেন মুজিবুল হক চুন্নু

ডেইলি খবর ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৭, ২০২৪, ১০:২১ পিএম

সংসদে সায়েদুল হক সুমনকে এক হাত নিলেন মুজিবুল হক চুন্নু

হবিগঞ্জ-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে ইঙ্গিত করে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ‘আমাদের হাউসের একজন সংসদ সদস্য, নামটা বলতে চাই না। তিনি নতুন নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ফেসবুকে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে আমরা সবাই ভুক্তভোগী।’

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে মুজিবুল হক চুন্নু এসব কথা বলেন।

সম্প্রতি সায়েদুল হক সুমন ফেসবুকে এমপিদের বেতনভাতা এবং সরকারি বরাদ্দ নিয়ে স্ট্যাটাস দেন। তিনি সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য এসব করেছেন বলে অভিযোগ করেন চুন্নু।

সুমনের ফেসবুক স্ট্যাটাসের দিকে ইঙ্গিত করে চুন্নু বলেন, ‘তিনি (সুমন) বলেছেন আপনারা জানেন এমপিরা কত টাকা বেতন পান, তারা তো বলে না, গোপন করে। তিনি বলেছেন, ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা বেতন (মাসিক) পেয়েছেন। আমরা কত টাকা বেতন পাই তা লুকানোর কিছু নেই, ওয়েবসাইটে গেলে পাওয়া যাবে। তিনি আরও বলেছেন, তিন মাসের মধ্যে ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। সেটা কীভাবে পেলেন? তিন কোটি টাকা গমের জন্য, আর বাকি ২৫ কোটি টাকা পেয়েছেন রাস্তার জন্য।’

স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘এই ২৮ কোটি টাকা কি আমি পেয়েছি, আপনি (স্পিকার) পেয়েছেন? প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন? ইতিমধ্যে ফেসবুক দেখে আমাকে অনেকেই বলছেন, ২৮ কোটি টাকা পেয়েছেন, এই টাকা কই? তিনি বলেছেন, ২৫ কোটি টাকা পেয়েছেন, কিন্তু আমরা তো পাইনি।’

স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে পাঁচ বছরে ২০ কোটি টাকা এমপিদের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, ‘এইবার বলেছেন পাঁচ বছরের জন্য ২৫ কোটি টাকার প্রকল্পের নাম দেওয়ার জন্য। আগামী ৫ বছরের জন্য কয়টা প্রকল্প করব, তার নাম দিয়েছি আমরা। টাকার সঙ্গে তো আমার কোনো সম্পর্ক নাই। আমরা নাম দেই। স্থানীয় সরকার বিভাগ জরিপ করে, টেন্ডার করে, তারপরে বাস্তবায়ন করে। কিন্তু সংসদ সদস্য বলছেন, আমরা ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। শুধু তাই না তিনি আরও বলেছেন, এমপি হলে যদি এত লাভ হয়, তাহলে আরও আগে এমপি হতাম।’

স্পিকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনি হলেন এই সংসদের অভিভাবক। আমাদের কোনো সদস্য যদি এমন কোনো কথা বলেন, যে কথায় প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারসহ ৩৪৯ জন এমপি (সায়েদুল হক সুমন ছাড়া) সম্পর্কে ভুল বার্তা যাবে। তাঁর সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করবার জন্য যদি এ ধরনের কথায় ভুল বার্তা যায়, বিষয়টা আপনি দেখতে পারেন। আমরা এখানে অনেক কথা বলব, বিতর্ক করব। এমন কথা বলবার অধিকার নেই যাতে ৩৪৯ এমপির ইজ্জত যাবে। তাঁদের সম্পর্কে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তাই অভিভাবক হিসেবে ওই সংসদ সদস্যকে ডেকে তাঁকে কী করবেন, এটা ব্যবস্থা নেবেন।’

অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, সরকার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জন্য অবসরভাতা ও কল্যাণ ট্রাস্ট করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, এই সুবিধা পেতে শিক্ষকেরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অবসরে যাওয়ার ২-৩ বছর পরও সুবিধা পাচ্ছেন না। অনলাইনে আবেদন করার পর বলা হয় আবেদন পাওয়া যায়নি।

আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, একাধিক ব্যক্তি তাঁর কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। এ কারণে তিনি আজ মঙ্গলবার দুই ঘণ্টা চেষ্টা করেও কল্যাণ ট্রাস্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির সঙ্গে ফোনে কথা বলতে পারেননি। পরে তিনি মাউশির মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেন। মহাপরিচালক জানান, অর্থের অভাবে এই অবস্থা। তবে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি কিছু অর্থের ব্যবস্থা করবেন।

লতিফ সিদ্দিকী বলেন, প্রত্যন্ত গ্রামের বয়স্ক ও নারী শিক্ষকদের অনেকের পক্ষে ঢাকায় এসে তদবির করা সম্ভব হয় না। এ জন্য শিক্ষকেরা যাতে অবসর ও কল্যাণ সুবিধা সহজে পান সে ব্যবস্থা করার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!