রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকার একটি বাসা থেকে গত শনিবার আরমান আহমেদ শাফিন (২৬) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারকরে পুলিশ। তিনি ‘জুলাই যোদ্ধা সংসদ’ নামে একটি সংগঠনের আহ্বায়ক ছিলেন এবং উত্তরা সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী। জুলাই আন্দোলনের সময় রাজপথে সক্রিয় ভূমিকার কারণে এলাকায় ‘জুলাই যোদ্ধা’ নামে পরিচিত ছিলেন আরমান।
তার এ মৃত্যু স্বাভাবিক বলে মনে করছেন না স্বজনরা। আর পুলিশ বলছে, এটা আত্মহত্যা না হত্যা, তা ময়নাতদন্তের পর সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাবে।
পুলিশ জানায়, গত ১ নভেম্বর দুপুরে দক্ষিণখানের আদম আলী মার্কেটের পাশের একটি বাসা থেকে আরমানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের বরাতে জানা যায়,তিনি কয়েক মাস ধরে মানসিকভাবে অস্থির ছিলেন। দুই স্ত্রীকে নিয়ে পারিবারিক কলহ চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। এ নিয়ে তার দুই স্ত্রীর সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ হতো। সম্প্রতি দুই স্ত্রীই অভিমান করে বাবার বাড়ি চলে যান। এরপর থেকেই আরমান বিষন্নতায় ভুগছিলেন। মা আসমা বেগম জানান, চার বছর আগে কুমিল্লার জেসমিন আক্তারের সঙ্গে বিয়ে হয় আরমানের। তবে এই দম্পতির সংসারে কোনো সন্তান নেই। অনেকদিন ধরে এই স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলা চলছিল আরমানের। কয়েকদিন আগে ঘরের সব কাপড়-চোপড় নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান জেসমিন। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে মানসিক অশান্তিতে ছিলেন আরমান।
আসমা বেগম বলেন,‘কয়েকদিন আগে আরমান ত্রিশাল গিয়েছিল ফাতেমা ইসলাম মায়েদা নামে এক মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে। শুনেছি ওই মেয়ের সঙ্গে গত ১০ অক্টোবর তার বিয়ে হয়েছে। কিন্তু ওই মেয়েও তাকে ছেড়ে চলে গেছে। ওখানে যাওয়ার পর মেয়ের বাড়ির লোকজন আমার ছেলেকে মারধর করেছিল। এরপর সেখান থেকে পুলিশের সাহায্য নিয়ে সে ঢাকায় আসে। এসে আবার জেসমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে বাড়ি আসতে বলে, কিন্তু জেসমিন রাজি হয়নি। এরপর আমার ছেলের মরদেহ উদ্ধার হয়।’
ত্রিশালের ঘটনার বিষয়ে ত্রিশাল থানার এসআই মো. শফিক কালবেলাকে বলেন, ‘আরমান নামে একটি ছেলে মায়েদা নামে এক মেয়ের বাসায় আসে। সে তার স্ত্রীকে ঢাকায় নিয়ে যেতে চায়, কিন্তু ওই মেয়ে বলছিল যে, প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন করে সে (আরমান) দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। এজন্য সে আর ঢাকা যেতে চায় না। এ নিয়ে মেয়ের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আরমানের হাতাহাতি হয়। এরপর ঢাকায় আরমানের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।’
চাচা মো. কামাল বলেন, ‘পারিবারিক কলহ থাকলেও আরমান ছিল অনেক চুপচাপ। আমাদের কাছে এই মৃত্যু স্বাভাবিক মনে হয় না। আমরা সঠিক তদন্ত দাবি করি।’
যদিও তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, আরমানের মৃত্যু আত্মহত্যা না হত্যা, তা ময়না তদন্তের পর নিশ্চিতভাবে বলা যাবে। দক্ষিণখান থানার ওসি তাইফুর রহমান মির্জা বলেন, ‘মরদেহটি ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে।এটি আত্মহত্যা নাকি অন্যকিছু,তা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। তদন্ত ও মরদেহের ময়নাতদন্তের ফলাফলের ওপর নির্ভর করেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হবে।’

              
                        
ডেইলি খবরের সর্বশেষ নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন।
                            
                                          
                                          
                                          
                                          
                                          
                                          
                                          
                                          
                            
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
আপনার মতামত লিখুন :