দুর্নীতি-লুটপাটের টাকায় আমদানী করা বিলাসবহুল গাড়ির মালি দেও তথ্য গোপন রেখে চলছে বিআরটিএ। বিগত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে এসব দুর্নীতিবাজ কারা তা প্রকাশ করার কাজটি এবার হাতে নিয়েছে জাতীয় রাজস্ববোর্ড। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাম্প্রতিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, এক হাজার ৩০০-এর বেশি বিলাসবহুল গাড়ির মালিক কর ফাঁকি দিতে কর ফাইলে এসব গাড়ির তথ্য গোপন করেছেন। এর মধ্যে ৪০৯ জন মালিক আবার কোনো কর রিটার্নই জমা দেননি।
এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) জানায়, সব গাড়িই বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কাছে নিবন্ধিত। প্রতিটি গাড়ির দাম (শুল্ক ও করসহ) ১ কোটি থেকে ১০ কোটি টাকার মধ্যে। তালিকায় টয়োটা, বিএমডাবিøউ, মার্সিডিজ, জিপ, ল্যান্ড রোভার, অডি, রেঞ্জ রোভার, পোরশে, জাগুয়ার, বেন্টলি, রোলস-রয়েস, ক্যাডিলাক, মেজারাতি, টেসলা, ফেরারি ও ল্যাম্বোরগিনি পর্যন্ত রয়েছে।
গোয়েন্দাদের মতে, এসব মালিকের মধ্যে ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, সরকারি কর্মকর্তা,তাদের পরিবার এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানও আছে। সিআইসির মহাপরিচালক আহসান হাবিব বলেন,এই মালিকরা তাদের কর ফাইলে গাড়ির তথ্য উল্লেখ করেননি। অর্থাৎ গাড়ি কেনার সমপরিমাণ আয় গোপন করেছেন। তার মানে এই আয় অবৈধ উৎস থেকে হতে পারে।’
তিনি আরও জানান,ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর অফিসগুলোকে কর আইনের আওতায় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সিআইসির অনুমান, এই গাড়ির মালিকদের কাছ থেকে এক হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় সম্ভব।
এ পর্যন্ত দেশজুড়ে ৫ হাজার ৪৮৯টি বিলাসবহুল গাড়ির খোঁজ পেয়েছে গোয়েন্দারা। এর মধ্যে ২ হাজার ৭১৯টির তথ্য কর ফাইলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে আবার ১৪৮টির তথ্যের অসঙ্গতি ধরা পড়ায় পুনরায় তদন্ত শুরু হয়েছে। গত পাঁচ করবর্ষ (ফেব্রæয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত) ধরে বিআরটিএ থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এই তদন্ত করে সিআইসি। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে এসব দুর্নীতিবাজ-কালোটাকার মালিকদের কোনো জবাবদিহী বা টাকার উৎস জানার বাধ্যবাদকতা না থাকায় যে যার মতো লুটেপুটে এসব বিলাসবহুল গাড়ির দেশে আমদানী করেছে। ট্য্ক্্ারফাকি দেওয়ার সাহস দেখিয়েছে। দেশের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবী উঠেছে,ওদের অবৈধ সম্পদ বাজোয়াপ্ত করে সরকারের কোষাগায়ে নিয়ে নেওয়া হোক।
আপনার মতামত লিখুন :