শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২

৫ শতাংশ বাড়িভাড়া বাড়াতে চায় সরকার অনশনে শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৫, ০৮:৫২ পিএম

৫ শতাংশ বাড়িভাড়া বাড়াতে চায় সরকার অনশনে শিক্ষকরা

শিক্ষকদের আগামী ১ নভেম্বর থেকে ৫ শতাংশ বাড়িবাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর বেশি বাড়ানো সম্ভব না বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমের কাছে এই তথ্য জানান তিনি।
এদিকে, তিন দফা দাবি আদায় ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি স্থগিত করে অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। বিকেল সাড়ে ৫টায় শহীদ মিনারে এ ঘোষণা দেন শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী।
একইসঙ্গে শ্রেণি কক্ষে কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সচিবালয়ের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শিক্ষকদের উত্থাপিত তিন দফা দাবির বিষয় নিয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ১৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা সচিব রেহানা পারভীন বৈঠক শেষে অধ্যক্ষ মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন আজিজী এ কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এমন একটা সময়ে আছি,বাজেট বরাদ্দ উপলক্ষে প্রক্রিয়া শেষ। এখন বাড়তি যেটা চাওয়া হচ্ছে সেটা কতটুকু সংস্থান করতে পারি তার ওপর নির্ভর করছে। কাজেই আমরা সেটা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। যখন রাস্তায় আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ হয়েছে। পরবর্তীকালে অর্থ মন্ত্রাণালয় থেকে আমাদের জানানো হলো যে, তারা পহেলা নভেম্বর থেকে ৫ শতাংশ হারে তারা দিতে পারবেন এবং ন্যূনতম যেটা হতে পারে সেটা হচ্ছে যে, দুই হাজার টাকা থাকবে। এইটা তাদের (শিক্ষকদের) অফার করলাম, এই দাবিটা যদি দৃঢ়তার সঙ্গে জানুয়ারি-ফেব্রæয়াারিতে করতেন এবং যে হিসাব-নিকাশ করা হয়েছিল সেটা যদি আমাদের দিতেন, তাহলে আমরা সময় পেতাম। তখন অবশ্যই বাজেট নির্ধারণের আগেই আমরা তাদের (শিক্ষকদের) দিতে পারতাম। এখন যা পাচ্ছি তার চেয়ে বেশি পেতাম। যৌক্তিকতা (শিক্ষকদের দাবি) তো অনস্বীকার্য। এখন যেখানে টাকা নেই সেখানে এর বেশি দেওয়া সম্ভব নয়, হচ্ছে না। আমরা আরেকটি কথা বলেছি (শিক্ষকদের) সামনে বছর বাজেটে আরও কিছু শতাংশ বৃদ্ধি যদি করা যায়, তাহলে সেটার জন্যও আমরা সুপারিশ করবো।’
তিনি বলেন, ‘অর্থবিভাগকে বলবো আপনারা এখন পারছেন না ঠিক আছে, সামনের বছরের জন্য আপনারা কমিটমেন্ট দেন, যাতে এই দাবির যে যৌক্তিকতা সেটাকে স্বীকার করে নেওয়া হবে এবং তারাও ধৈর্য্য ধরবেন। কিন্তু তারা সেই প্রস্তাবে রাজি না। তারা বোধহয় বলেছেন ১০ শতাংশ এখন দিতে হবে, আবার সামনের বছর ১০ শতাংশ দিতে হবে। অবশ্যই সেটা আমাদের এখতিয়ারের বাইরে। আমরা সেটা রাজি হয়নি। এই হচ্ছে আমার দিক থেকে ব্ক্তব্য। আমরা তাদের (শিক্ষকদের) বার বার বলেছি এই দাবির যে সারাংশ সেটাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। এই বাস্তবতায় আপনারা সেটা গ্রহণ করেন। জনদুর্ভোগ হচ্ছে, সামনে পরীক্ষা, আপনারা যদি এই কর্মসূচি করতে থাকেন সেটা সঠিক হবে না।’
উপদেষ্টার বিষয় ব্যাখ্যা করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব রেহানা পারভীন বলেন,‘সরকারের সামর্থের সীমা অনুসারে যেটা বলা হচ্ছে, ১ নভেম্বর থেকে ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া দেওয়া যাবে, মিনিমাম দুই হাজার। আমরা দেখেছি সেফটি ক্লজ মিনিমাম দুই হাজার সেটি যদি হয়, তাহলে ৫৫ শতাংশ শিক্ষক কর্মচারি ১০ শতাংশ হারে বেশি বেতন পাবেন নভেম্বর থেকে সেফটি ক্লজের কারণে। এবং ৯০ শতাংশ প্রায় ৯ শতাংশ মূল বেতনের অংশ পাবেন। প্র্যাকটিকালি ১০ শতাংশের কাছাকাছি। একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ৯০ শতাংশ শিক্ষক প্রায় ১০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া পাবেন। এই প্রোপোজাল যদি আমরা ডিনাই করি তাহলে ১০ শতাংশের জন্য ব্যাসিকলি ৯০ শতাংশ শিক্ষকের যে প্রাপ্যতা সেই সুযোগটাকে সম্মান করছি না। এইটা সরকারের অবস্থান।’ 
সচিব আরও বলেছেন, ‘উনারা (শিক্ষকেরা) বলেছেন যে, আমরা গুরুত্ব দেইনি, বিষয়টা সেরকম না। শুরু থেকেই স্যার বলেছেন, আমরা অর্থ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। হিসাব-নিকাশ দেওয়ার বিষয় ছিল সেটুকু আমরা জানিয়েছি।’
শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘শুক্রবার আমরা অনশন করবো। তারপর আমরণ অনশন। তারপরও যদি আমাদের দাবি না মানে তাহলে আমাদের দেহ জীবিত যাবে না। লাশ যাবে। অধিকারের বিষয়ে আপস করবো না।আগামী রোববার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব শ্রেণির কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলেও জানান তিনি।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!