শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

ধামরাইয়ের সদ্য বিদায়ী এসি ল্যান্ড সুচি সাহার প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকান্ড!

ডেইলি খবর ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৪, ০৯:২৯ এএম

ধামরাইয়ের সদ্য বিদায়ী এসি ল্যান্ড সুচি সাহার প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকান্ড!


ধামরাই সংবাদদাতা: ঢাকার ধামরাইয়ের সদ্য বিদায়ী এসি ল্যান্ড সুচি রানী সাহার দায়িত্বকালীন সময়ের ভুমি সেবা প্রদান নিয়ে নানারকম সমালোচনা হচ্ছে। তার বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়েও হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ। সুত্র জানায় ধামরাই থেকে সদ্য বিদায় নেওয়া এসি ল্যান্ড সুচি রানী সাহার প্রশ্নবিদ্ধ একাধিক কাজের মধ্যে একটি ছিল উপজেলার রাজাপুর-৯ নাম্বার মৌজার সরকারের ওয়াক্ফ এস্টেট তালিকাভুক্ত’ রাজাপুর মধ্যস্থ চেরাগী জামে মসজিদ, ওয়াক্ফ এস্টেট-এর ই, সি নং ১১৩৩২-এর নিজস্ব জমি থেকে ১শ ৩২ শতাংশ অর্থ্যাৎ ১ দশমিক ৩২ শতাংশ জমি ভুয়া কাগজপত্র তেরীর প্রতারক চক্রের মূল হোতা মো: মিজানুর রহমান সিদ্দিকী তার নামে নিয়েছেন। মালিক হয়েছেন। এতে এসি ল্যান্ড সুচি সহায়তা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখন প্রতারক ওই জমি বিক্রয় করে দেওয়ার পায়তারা করছেন। এই জালিয়াতি ধরা পরলে মসজিদটির মোতয়াল্লীর দায়িত্বে থাকা আল রাব্বানী সিদ্দিকীর পক্ষে তার স্ত্রী রিয়া বেগম জনি মিছ কেইস করেন। মামলা নং-২৩/২৪। খোজ নিয়ে জানা গেছে প্রতারক চক্রের হোতা মিজানুর রহমান সিদ্দিকী মসজিদটির নামে থাকা জমি বংশানুক্রমে রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা মরহুম মৌলভী ফজলুল করিম সিদ্দিকী বংশধরের কেউ কোন সদস্য বেঁেচ নেই মর্মে নোটারী করে মিথ্যা হলফনামা জমা দেয়। কিন্তু মসজিদেও মোতয়াল্লী-সভাপতি মরহুম মৌলভী ফজলুল করিম সিদ্দিকীর বংশের জীবীত আছেন বংশানুক্রমে দায়িত্বেও আছেন, বেচেঁ আছেন। ইতোমধ্যে প্রতারক মিজান নিজগ্রামের য়েকজন প্রতারক ও কিশোর গ্যাং সদস্যদেরকে সঙ্গে নিয়ে একটি মসজিদ কমিটি গঠন করে এতে নিজে সভাপতি হয়ে নোটারীতে এই ভুয়া তথ্য সন্নিবেশীত করেন। জমি দখল-আত্মসাত করতে মসজিদের মোতয়াল্লী-সভাপতি ছিলেন বলে ওই নোটারীতে হলফনামা দেন। তার দেওয়া তথ্যটি ছিল ষোল আনাই বা পুরোটাই ভুয়া। সরেজমিনে গিয়ে এলাকার একাধিক মুসল্লী-পরশীর সাথে আলাপ করে জানা যায় এবং ওয়াক্ফ এস্টেট থেকে ইস্যুকৃত প্রদান করা চিঠিতে দেখা যায় ওয়াক্ফ এস্টেট তালিকাভুক্ত’ রাজাপুর মধ্যস্থ চেরাগী জামে মসজিদ, ওয়াক্ফ এস্টেট-এর ই, সি নং ১১৩৩২। এর মসজিদটির মোতয়াল্লী ছিলেন সাবেক মোতয়াল্লী মরহুম মৌলভী ফজলুল করিম সিদ্দিকী। তার মৃত্যুর পরে ছেলে হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী মোতায়াল্লী ছিলেন। তিনি গত ২০১৮ সালে বয়স্কজনিত কারণে মৃত্যুবরন করলে তার ছেলে আল রাব্বানী সিদ্দিকী ওয়াক্ফ এস্টেট-এর নির্দেশনায় ও অনুমোদন পত্রের মাধ্যমে  মোতয়াল্লীর দায়িত্ব পালন করছেন। তথ্যানুসন্ধানে অভিযোগ পাওয়া গেছে নানারকম সুবিধা গ্রহনের মধ্য দিয়ে ধামরাই থানার এসি ল্যান্ডের তত্বাবধানে থাকা নায়েব দীপংকর রায় ও ভুমি অফিসের স্থানীয় এক দালালকে সাথে নিয়ে  কৌশলে তথ্য লুকিয়ে এসি ল্যান্ড সুচি রানী সাহাকে ব্যবহার করে ওয়াক্ফা স্টেটে রাখা ওই মসজিদের জমি প্রতারক চক্রের হোতা মিজানের বা ব্যাক্তি নামে খারিজ করায় এলাকায় মসজিদেও এই দখল নিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। 
এদিকে এসি ল্যান্ড সুচি রানী সাহা অনত্রবদলী হয়ে চলে গেছেন। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্রে জানা গেছে এসি ল্যান্ড সুচি রানী সাহা ধামরাই উপজেলার ১ নং চৌহাট ইউনিয়নের রাজাপুরের ৯ নং মৌজার আরএস-এর দাগ নং ২৪১ ও ৩৬২ এবং সিএস-৩৭১,৩০৯ ও ১২৬৪ থেকে ১ দশমিক ৩২ একর জমি জালিয়াত চক্রের সদস্য মো: মিজানুর রহমান সিদ্দিকীর নামে খারিজ করে রেকর্ড করে দেন। এ কাজে সংশ্লিষ্ট এলাকা বালিয়া ভুমি অফিসের নায়েব দীপংকর রায় ও ভুমির দালাল সাইদুর এসি ল্যান্ডকে সহায়তা করেন। দালাল সাইদুর প্রস্তাব করে নায়েব দীপংকর রায়ের মাধ্যমে এসি ল্যান্ড সুচি রাণী সাহার কাছে উপস্থাপন করলে তিনি তা অনুমোদ দেন। স্থানীয় সুত্র আরও জানায় ধামরাই থানার চররাজাপুর গ্রামে জালিয়াতচক্রের মিজান, লাবু ও মহুরী নয়ার নেতৃত্বে ভুমি দখলের জন্য একাধিক কিশোর গ্যাং কাজ করছে। রাজধানীথে থাকা ওয়াক্ফ এস্টেট-এর অফিসের একাধিক সুত্র জানায় সরকারের ওয়াক্ফ এস্টেট তালিকাভুক্ত মসজিদটির নাম’ রাজাপুর মধ্যস্থ চেরাগী জামে মসজিদ, ওয়াক্ফ এস্টেট-এর ই, সি নং ১১৩৩২। নির্মাণের পর শুরু থেকে মসজিদটির বংশানুক্রমে সভাপতি/ সাধারন সম্পাদক/ মোতয়াল্লী ছিলেন, মরহুম মৌলভী ইব্রাহিম সিদ্দিকী, এরপর মসজটির সভাপতি/ মোতয়াল্লীর দায়িত্বে ছিলেন তার ছেলে মরহুম মৌলভী ফজলুল করিম সিদ্দিকী, এরপর তার ছেলে মরহুম হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী এবং বর্তমানে তার বড় ছেলে শামীম সিদ্দিকী সভাপতির দায়িত্বে আছেন এবং মোতয়াল্লীর দায়িত্বে আছে অপর ছেরে আলরাব্বানী সিদ্দিকী। স্থানীয় সুত্রগুলো জানায় বিগত সময়ে একাধিকবার নদীর ভাঙ্গনের কারণে মসজিদটি  নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘসময় পরে নদীর চর জেগে উঠলে এলাকায় লোকজন ঘড়-বাড়ি তৈরী করে বসবাস শুরু করছেন। 
এমতাবস্থায় ঢাকা ওয়াক্ফ এস্টেট অফিস থেকে জানানো হয় রাজাপুর মধ্যস্থ চেরাগী জামে মসজিদের জায়গায় মসজিদ নির্মাণ করা যেতে পারে, কিন্তু অন্য কোনো জায়গায় এ মসজিদ নির্মাণ করা যাবে না। মোতয়াল্লীর ছেলে আরবিন সিদ্দিকী জিদান জানান সরকারের ওয়াক্ফ এস্টেটের পরামর্শ মেনেই মসজিদের নামে থাকা সভাপতি ও মোতয়াল্লীর সম্মতিতে উল্লেখিতস্থানের জমিতে সব নিয়মকানুন মেনে মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করতে গেলেই ধরা পরে এই জালিয়াত চক্রের চক্রান্ত ও জালকাগজপত্র। হাতেনাতে ধরে প্রতিবাদ করায় তারা কিশোর গ্যাং সদস্যদের নিয়ে উল্টো মসজিদ কমিটির সদস্যদের উপর হামলা চালায়। জালিয়াত চক্রের মুল হোতা মো: মিজানুর রহমান সিদি্িদকী, তার ভাই মো: লাবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও তার সহযোগী মহুরী নয়া তাদের পোষা কিশোর গ্যাং সদস্যদের সাথে নিয়ে মসজিদ কমিটির সদস্যদের সাথে মারামারি করে পালিয়ে যায়। এতে দুই নারীসহ কয়েকজন গুরুত্বর আহত হন। যা বিভিন্ন সংবাদপত্রে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতারক চক্রের মারামারি করার বিষয়টি ওয়াক্ফ এস্টেট সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে, অবগত আছেন। এদিকে গুরুতর  আহত নারী রিয়া বেগম জনি বাদী হয়ে ধামরাই থানায় গত ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং তারিখে মামলা দায়ের করেন। এতে আসামী করা হয় জালিয়াতচক্রের হোতা ও কিশোর গ্যাং লিডার মো: মিজানুর রহমান সিদ্দিকী, মো: লাবুবুর রহমান সিদ্দিকী, মহুরী নাজমূল হক নয়ন, রফিকুল ইসলাম কিতু, মোবারক হোসেন পাগলা, কাইয়ুম হাসান লিখন, রাব্বি ইসলাম রোমা, ইমরান হোসেন রতন, রোকন মিয়া, খোরশেদ মিয়াসহ আরও অজ্ঞাত কয়েকজন। মামলা নং-৩১। ধারা-১৪৫/ ৪৪৭/ ১২৩/ ৩২৫/ ৩২৬/ ১০৭/ ৩৫৪/ ৩৭৯/ ১০৬/ ১১৪ পেননাল কোড ১৮৬০।তারিখ: ২৯/৩/২০২৪ ইং। অভিযোগ আছে এসি ল্যান্ড সুচি রানী সাহা দায়িত্বে থাকাবস্থায় প্রতারকচক্রের জমা দেওয়া কাগজপত্র ভালোভাবে যাচাই-বাছাই না করে এবং খোজখবর না নিয়ে মসজিদের জমি নামসর্বস্ব ভুয়া সভাপতি মিজানুর রহমান সিদ্দিকীর নামে যা ব্যক্তিনামে নামজারি, খারিজ কিভাবে দিলেন? প্রশ্ন হচ্ছে সুচি রানী সাহা কার স্বার্থ দেখেছেন, রক্ষা করেছেন, কেনো করছেন? এমন জালিয়াচক্রের জালিয়াতিসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে ধামরাইয়ের সাবেক এই এসি ল্যান্ড সুচি রানী সাহার সাথে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে তথ্য-উপাও নিয়ে কথা বললে তখনও তিনি বলেন মনে নেই? এরপর মিছ কেইস করা নিয়ে এবং তিনি পরপর দুটি তারিখ দিয়েছেন,তার স্বাক্ষরকরা কাগজ আমার কাছে আছে বলা হলে তখন স্বিকার করে বলেন পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে সেবা নিতে ভুমি অফিসে আসা মানুষের হয়রানী কারা করছেন, মানুষ কেনো ভুমি অফিস ও এসি ল্যান্ডের খামখেয়ালীপনার শিকার হবেন। ভুমি সেবা প্রত্যাশী মানুষের কবে মুক্তি মিলবে? তবে অভিযোগ আছে দেশের ভুমি ব্যবস্থাপনাও স্মাট প্রতারণায় লিপ্ত হচ্ছে ভুমির দালালচক্র।এতে সহায়তা দিচ্ছে স্থানীয় নায়েব-সার্ভেয়ার চক্র।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!