মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১

প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর বাসার লিফটে পরিচালকের প্রাণ যায়যায় অবস্থা

আইন-অপরাধ ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৪, ০৯:৫২ পিএম

প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর বাসার লিফটে পরিচালকের প্রাণ যায়যায় অবস্থা


সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আবদুর রহমানের বাসার লিফটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মলয় কুমার শূরকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে আরেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। পিটুনীতে তার প্রাণ যাযযায় অবস্থা। হাসপাতালে নিয়ে জরুরী চিকিৎসা নিতে হযেছে ওই পরিচালককে। এ ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। ১৪ জুন বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর পরীবাগ এলাকার দিগন্ত টাওয়ারে মন্ত্রীর বাসার লিফটে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে অভিযোগ ওঠার পর ‘হামলাকারী’ কর্মকর্তা অধিদপ্তরের জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (লিভ, ডেপুটেশন অ্যান্ড ট্রেনিং রিজার্ভ) ডা: মো. আজিজুল ইসলামের নতুন পদায়ন বাতিল করা হয়েছে।
আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৫ জুন শুক্রবার এজাহার দাখিল করেন মলয় কুমার। সেটি মামলায় রূপান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাজিরুর রহমান। তবে আসামি আজিজুলকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি। এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, প্রশাসনিক বিষয়ে দিকনির্দেশনার জন্য প্রাণিসম্পদমন্ত্রী তাঁর বাসভবন দিগন্ত টাওয়ারে মলয় কুমারকে যেতে বলেছিলেন। ১৪ জুন বৃহস্পতিবার রাত সোয়া আটটার সময় মন্ত্রীর বাসায় যান তিনি। কাজ শেষে সোয়া নয়টার দিকে টাওয়ারের লিফটে নিচতলায় নামেন।
এজাহারে বলা হয়, ‘আজিজুল লিফটের সামনে আগে থেকেই ভারী কোনো বস্তু নিয়ে অবস্থান করছিলেন। লিফটের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে মলয় শূরকে ধাক্কা দিয়ে লিফটের ভেতর ফেলে দেন তিনি। হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা ও নাকে আঘাত করে জখম করেন। মলয় চিৎকার করলে নিরাপত্তা প্রহরীরা এগিয়ে আসেন। তখন ভয়ভীতি ও জীবননাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যান আজিজুল। এরপর মলয়কে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাঁর মুখমন্ডল ফেটে যাওয়ায় সেলাই দিতে হয়েছে ও স্থায়ী ক্ষত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এ ছাড়া বুক ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে।’ মলয় কুমার বলেন, মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা শেষে ফেরার পথে লিফট থেকে নামতে যাব, তখনই আজিজুল আমাকে অতর্কিত আক্রমণ করেন। হত্যার উদ্দেশে কোনো ভোঁতা বস্তু দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। এ বিষয়ে কথা বলতে আজিজুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁর মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে।
হামলার সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে মলয় শূর বলেন, আজিজুল ইসলামকে মন্ত্রণালয় ১৪ জুন বৃহস্পতিবার পরিচালক পদমর্যাদার একটি পদে পদায়ন করে। যেহেতু তিনি (মলয়) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন), তাই এ বিষয়ে মন্ত্রীকে মতামত দিয়েছিলেন। বিভাগীয় মামলায় শাস্তিপ্রাপ্ত অবস্থায় আজিজুলের নতুন পদায়ন হয়। আইন অনুযায়ী তিনি কথা বলেছেন। এটা কারও পক্ষে যেতে পারে, বিপক্ষেও যেতে পারে। এ কারণে আজিজুল তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে থাকতে পারেন। এ বিষয়ে কথা বলতে মন্ত্রী আবদুর রহমানকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। অভিযোগ রয়েছে, ডা. আজিজকে মন্ত্রীর পিএস সবুর এবং প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পরিচালক (বাজেট) ডা. বরুণ বিভিন্নভাবে মদদ দিয়ে যাচ্ছেন।  ঘটনাটি সম্পর্কে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে এ বিষয়ে লিখিত প্রতিবেদন চেয়েছি। প্রতিবেদন পেলে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই ঘটনায় বাংলাদেশ এনিমেল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশন প্রতিবাদ জানিয়েছি। সংগঠন দুটি অবিলম্বে ঘটনা তদন্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার দাবি জানিয়েছে। জানা গেছে বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী নিজেও বিব্রত হয়েছেন।

 

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!