সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও সম্পদ জব্দ করা যাবে জামায়াতের

আইন-অপরাধ ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৪, ১১:৫০ এএম

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও সম্পদ জব্দ করা যাবে জামায়াতের

নিষিদ্ধ জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠনের সব সম্পদ জব্দ, কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা করার পাশাপাশি সংগঠন দুটির ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ এবং তাদের নেতাদের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে সরকার। ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ২০ ধারায় সরকারকে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী এখন এসব পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন শিবিরকে নির্বাহী আদেশে ‘নিষিদ্ধ সত্তা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮ (১) ধারা অনুযায়ী জামায়াত ও শিবিরকে ‘নিষিদ্ধ সত্তা’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে এই নিষিদ্ধের আদেশের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির চাইলে সরকারের কাছে আপিলও করতে পারবে। সন্ত্রাস দমন আইন বিশ্লেষণ করে আইন বিশেষজ্ঞরাও এমনটাই বলছেন।
আইনের ১৯ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ধারা ১৮-এর অধীন সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ (ব্যক্তি বা সত্তা), আদেশ প্রদানের তারিখ হতে ত্রিশ দিনের মধ্যে, এর বিরুদ্ধে লিখিতভাবে, যুক্তি উপস্থাপনপূর্বক, সরকারের নিকট পুনঃনিরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবে এবং সরকার, আবেদনকারীর শুনানি হণপূর্বক, আবেদন প্রাপ্তির তারিখ হতে নব্বই দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করবে। উপ-ধারা-২ এ বলা হয়েছে, উপধারা-(১) এর অধীন পুনঃনিরীক্ষার আবেদন নামঞ্জুর করা হলে, উক্ত সংক্ষুব্ধ (ব্যক্তি বা সত্তা) আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার তারিখ হতে ত্রিশ দিনের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে আপিল দায়ের করতে পারবে।
এ ছাড়া আইনের ২০ ধারার উপধারা-(১) এ বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তিকে ধারা ১৮-এর বিধান অনুসারে তালিকাভুক্ত করা হয় বা কোনো সত্তাকে নিষিদ্ধ করা হয়, তাহলে এই আইনে বর্ণিত অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়াও সরকার, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে; যথা: (ক) ওই সত্তার কার্যালয় (যদি থাকে) বন্ধ করে দেবে; তালিকাভুক্ত ব্যক্তি বা নিষিদ্ধ সত্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (খ) ব্যাংক এবং অন্যান্য হিসাব (যদি থাকে) অবরুদ্ধ করবে এবং এর সব সম্পত্তি জব্দ বা আটক করবে; (গ) নিষিদ্ধ সত্তার সদস্যদের দেশত্যাগে বাধা-নিষেধ আরোপ করবে; (ঘ) সব প্রকার প্রচারপত্র, পোস্টার, ব্যানার অথবা মুদ্রিত, ইলেকট্রনিক, ডিজিটাল বা অন্যান্য উপকরণ বাজেয়াপ্ত করবে; এবং (ঙ) নিষিদ্ধ সত্তা কর্তৃক বা এর পক্ষে বা সমর্থনে যে কোনো প্রেস বিবৃতির প্রকাশনা, মুদ্রণ বা প্রচারণা, সংবাদ সম্মেলন বা জনসম্মুখে বক্তৃতা প্রদান নিষিদ্ধ করবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আইন অনুযায়ী এখন জামায়াতের কার্যালয় বন্ধ, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দসহ বেশ কিছু বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারবে। আইনে সরকারকে সে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী এসব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, নিষিদ্ধ করা জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের বেশ কিছু বিষয় বাধা-নিষেধের মধ্যে পড়বে; সেই বিষয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে উল্লেখ রয়েছে। সরকার আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারবে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার জামায়াত নিষিদ্ধের পর এর নেতাকর্মীদের কী হবে এমন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘গণহারে তাদের বিচার করা হবে না। ১৯৭১ সালের পরে যারা জন্ম নিয়েছে, তাদের বিচার করা হবে না। বাংলাদেশে আইন আছে, তারা যদি কোনো অপরাধ করে, সে ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী বিচার হবে।’

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!