মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

১২ কোটি টাকার ফ্ল্যাটে রাজস্ব কর্মকর্তা মারুফ

আইন-অপরাধ ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ২২, ২০২৫, ১২:৫৬ এএম

১২ কোটি টাকার ফ্ল্যাটে রাজস্ব কর্মকর্তা মারুফ

ব্যয়বহুল জীবন ব্যাপক ব্যয় করে থাকেন আয়করের যুগ্ম কমিশনার শাহ মারুফ। বিলাসী জীবনের গল্প এখন ‘টক অব দ্য এনবিআর’ তার যাপিত জীবনের খরচ যেনো ভুতে যোগায়। মাসে ৮০ হাজার টাকা মাইনে পাওয়া এই কর্মকর্তা থাকেন দেশের সবচেয়ে বিলাসবহুল এলাকা বারিধারার কূটনৈতিক জোনে প্রায় ১২ কোটি টাকার ফ্ল্যাটে। 
শাহ মোহাম্মদ মারুফ নামের এই কর্মকর্তা নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পদের পাহাড়ে উঠেছেন, গড়েছেন ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অঢেল সম্পদ। ব্যাংকেও রেখেছেন কোটি কোটি টাকা। এখন নিজের দপ্তরেই তদন্তের মুখে মারুফ। 
গুলশানে কূটনৈতিক এলাকা বারিধারার ১১ নম্বর সড়ক। দৃষ্টিনন্দন দশতলা এই ভবনটির নাম বিটিআই উইন্ড ফ্লাওয়ার। এর সাততলায় থাকেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরের যুগ্ম কমিশনার শাহ মারুফ। প্রায় সোয়া আট কাঠা জমিতে নির্মিত এই ভবনের প্রতিটি তলায় ইউনিট মাত্র একটি। আয়তন ৩ হাজার দুইশ বর্গফুট। 
সংশ্লিষ্টদের হিসাবে, ভবনটির প্রতি বর্গফুট জায়গার দাম ৪০ হাজার টাকা। সে হিসাবে ফ্ল্যাটটির দাম হয় প্রায় ১২ কোটি টাকা। আড়াই বছর আগে এটি স্ত্রীর নামে কেনেন তিনি। যদিও এখনো নিবন্ধন হয়নি।  
প্রশ্ন উঠতে পারে, মারুফের স্ত্রী সাদিয়া আফরিন পারিবারিক সুত্রে ফ্ল্যাটটি পেয়েছেন কিনা। আয়কর নথি বলছে, সাদিয়া ইউনিয়ন ডেভলেপমেন্ট নামে একটি বেসরকারি আবাসন কোম্পানিতে চাকরি করেন। আমরা খোঁজ নেই সেই কোম্পানিতে। 
কর্মকর্তারা জানান, সাদিয়া বছরখানেক আগে চাকরি ছেড়েছেন। কর্মরত ছিলেন বিক্রয় বিভাগে। সবশেষ পদ সহকারী ম্যানেজার। আর আয়কর নথিতে সাদিয়ার সম্পদ এক কোটি ৭৮ লাখ টাকা। অর্থাত তার আয় ও ফ্ল্যাটের তথ্য সঙ্গতিপূর্ণ নয়।   
শাহ মারুফ এখন কর্মরত সিরাজগঞ্জ কর সার্কেলে। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে অপারগতা জানান তিনি। 
শাহ মারুফের আয়কর নথিতে মোট সম্পদের পরিমাণ চার কোটি টাকার বেশি। চাকরি ছাড়া আর কোনো আয় নেই। অথচ ২৮তম বিসিএসের মাধ্যমে চাকরি শুরু করে ৫ম গ্রেডে আসা একজন কর্মকর্তা সরকার থেকে বেতন ভাতা পেয়েছেন ৮০ লাখ টাকা প্রায়। 
পূর্বাচলের রুপগঞ্জ অংশের গোলাপ মৌজায় মারুফ ও তার দুই ভাইয়ের নামে ১৫ কাঠা জমি পেয়েছে এনবিআর কর গোয়েন্দা। কর্মকর্তারা জানান, উত্তরায় ১৫ নম্বর সেক্টরে তিন কাঠা জমি আছে মারুফের। আর নিকুঞ্জে বোনের নামে কিনেছেন তিন কাঠার প্লট। স্বামী স্ত্রী দুজনের নামে আছে দুটি গাড়ি। স্ত্রীর গাড়ির দাম ৮০ লাখ টাকা। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানিতেও সম্পদ গড়ার অভিযোগ রয়েছে শাহ মারুফের বিরুদ্ধে। 
কর্মকর্তাদের অভিযোগ, গোপালগঞ্জের পরিচিতিতে দাপটের সঙ্গে চাকরি করেন শাহ মারুফ। পোস্টিং পান গুরুত্বপূর্ণ সার্কেলে। করদাতাদের কর ফাঁকি দিতে সহযোগিতা করে আয় করেছেন অঢেল অবৈধ সম্পদ। আয়করের চাকরিতে শুধূ নিয়ের আয়ের কাজটি করেছেন। রাষ্ট্রের টাকায় বেতন নিয়ে দুর্নীতির গডফাদার হয়েছেন মারুফ।

 

 

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!