বিশে^র মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের বিদ্বেষমূলক অপতৎপরতা এবং পশ্চিম এশীয় অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দায়ে এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের ২৫ প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইরান। ২ মে বৃহস্পতিবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দু`টি আলাদা বিবৃতির বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে মেহর নিউজ এজেন্সি। তেহরানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম পার্সটুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের সংসদে পাস হওয়া দু`টি আইন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই দু`টি আইনের একটি হলো, পশ্চিম এশীয় অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা সৃষ্টিকারী ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে লড়াই শীর্ষক আইন। আর অন্যটি হলো, শান্তি ও নিরাপত্তার বিরুদ্ধে দখলদার ইসরাইলের বিদ্বেষমূলক তৎপরতা রুখে দেয়ার আইন। ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলো কলম্বিয়াইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলো কলম্বিয়া
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেসব মার্কিন প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেগুলো হলো-
১. লকহিড মার্টিন কর্পোরেশন। মার্কিন অ্যারোস্পেস,প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক এ কোম্পানিটি গাজা যুদ্ধে ইসরাইলকে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। ২. জেনারেল ডাইনামিক্স কর্পোরেশন। গাজায় গণহত্যা চালাতে ইসরাইলকে ১৫৫ মিলিমিটারের বুলেট সরবরাহ করেছে এ কোম্পানিটি। ৩. গাজা যুদ্ধে ইসরাইলকে ড্রোন সরবরাহ করে নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে আরেক কোম্পানি স্কাইডিও। ৪. শেভরন কর্পোরেশন। পূর্ব ভূমধ্যসাগরে অবস্থিত গ্যাস কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন এবং সেখান থেকে অর্থ উপার্জন করে তা গাজা গণহত্যায় ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়ার অপরাধে নিষেধাজ্ঞা পেয়েছে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানিটি।
৫. গাজার হামাস সরকার ও আরেক স্বাধীনতাকামী সংগঠন ইসলামি জিহাদকে ক্রিপ্টো কারেন্সি লেনদেনে বাধা দেয়ার অপরাধে মার্কিন কোম্পানি খারনও এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে।
ইরানি হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ মার্কিন মিসাইল!ইরানি হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ মার্কিন মিসাইল!এদিকে গাজা গণহত্যাকে সমর্থন ও ইসরাইলকে সহযোগিতার দায়ে একাধিক মার্কিন নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তেহরান। তারা হলেন-
১. যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিনিয়র উপদেষ্টা জেসন গ্রিনবø্যাট।
২. মার্কিন এন্টারপ্রাইজ থিংক ট্যাংক মাইকেল রুবিন।
৩. `অ্যালায়েন্স অ্যাগেইনস্ট নিউক্লিয়ার ইরান` এর নির্বাহী পরিচালক জেসন ব্রডস্কি।
৪. ক্লিফোর্ড ডি. মে, ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসি`র প্রেসিডেন্ট।
৫. মার্কিন সেনাবাহিনীর স্পেশাল অপারেশন ফোর্সের কমান্ডার জেনারেল ব্রায়ান ফেন্টন।
৬. মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম নৌবহরের কমান্ডার ব্র্যাড কুপার।
৭. অস্ত্র কোম্পানি আরটিএক্স`র সিইও গ্রেগরি জে. হেইস।
কলম্বিয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালো হামাসকলম্বিয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালো হামাস
অন্যদিকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, পরিকল্পিতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন, সহিংসতা, ভারী ও নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার, ফিলিস্তিনিদের ভূমি ও ঘরবাড়ি দখল, অবৈধ বসতি নির্মাণ এবং ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখলের অব্যাহত প্রক্রিয়ায় সমর্থন ও সহযোগিতার অপরাধে ব্রিটেনেরও কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
ইরানের নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-
১. সাইপ্রাসে ব্রিটেনের আক্রোতিরি বিমান ঘাঁটি।
২. লোহিত সাগরে ব্রিটিশ নৌবাহিনীর ডায়মন্ড রণতরি।
৩. এলবিট সিস্টেম কোম্পানি।
৪. ম্যাগিট পার্কার।
৫. রাফায়েল কোম্পানি (ইউকে)।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া ব্রিটিশ ব্যক্তিরা হলেন-
১. ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপস।
২. ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের অধিনায়ক জেমস হ্যাকেনহল।
৩. দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ শ্যারন নেসমিথ।
৪. সশস্ত্র বাহিনীর সহকারী চিফ অফ স্টাফ পল রেমন্ড গ্রিফিথস।
৫. ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক অ্যাড্রিয়ান বার্ড।
৬. রিচার্ড ক্যাম্প, লোহিত সাগরে ব্রিটিশ নৌবাহিনীর রণতরী রিচমন্ডের কমান্ডার।
৭. সাইপ্রাসে ব্রিটিশ অ্যাক্রোতিরি বিমান ঘাঁটির কমান্ডার সাইমন ক্ল্যাক।
৮. এছাড়াও লোহিত সাগরে ব্রিটিশ নৌবাহিনীর ডায়মন্ড রণতরির কমান্ডার পিটার ইভান্স এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন।
সলোমন দ্বীপপুঞ্জে চীনপন্থী নতুন প্রধানমন্ত্রী সলোমন দ্বীপপুঞ্জে চীনপন্থী নতুন প্রধানমন্ত্রী
ইরান বলছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ায়ের নামে যুক্তরাজ্য সরকার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করেছে, ঘোষণা দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে সমর্থন ও সহায়তা করেছে। যা জাতিসংঘের সনদে বর্ণিত আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছে তেহরান। একইসঙ্গে নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি অভিযোগ থাকলে সেগুলোরও বিচার করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :