মুখোশ পড়ে সুন্দর মুখ ঢেকে স্বৈরাচারের দোসরা শুধু লুটপাটই করেছে। আর বিদেশের নামি-দামি জায়গায় সম্পদ পাচার করেছে, পাচার করা টাকায় সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে বিদেশেও। এমনই একজন কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মইনুল। তিনি অস্ট্রেলিয়াতে ৩টি বাড়ি কিনেছেন। ট্যারিফ কমিশনের সাবেক এই চেয়ারম্যান ড. মইনুল খানের বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের অভিযোগ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে সংস্থাটি। পরে আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের চাপে তা বন্ধ হয়ে যায় বলে জানা গেছে। সম্প্রতি তার অর্থ পাচার ও দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট হয়েছে।
অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট দুদক কর্মকর্তারা বলছেন,মইনুল খানের শ্বশুরবাড়ি নারায়ণগঞ্জে এবং শ্বশুর ফজলুর রহমান ছিলেন ব্যাংকার। তিনি মারা যান ১৯৯৯ সালে। অথচ মইনুল খান বিগত শেখ হাসিনার শাসনামল জুড়ে ছিলেন দোর্দন্ড প্রতাপশালী। টানা ৪ বছর তিনি শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মতো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে ছিলেন। তিনি দেশের কুখ্যাত সব সোনা চোরাচালানিদের সঙ্গে গোপন সখ্য গড়ে তোলেন। রাষ্ট্রীয় স্বার্থ না দেখে তিনি ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষায় ছিলেন বেশি মনোযোগী। রাষ্ট্রকে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত করে নিজ পকেটে ঢুকিয়েছেন শত শত কোটি টাকা। যেসব স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তার দর-দামে বনিবনা হতো না,তাদের বিরুদ্ধে ঠুকে দিতেন মামলা। যাদের সঙ্গে বনিবনা হতো তাদের কাছ থেকে মাসোহারা নিতেন নিয়মিত। আমিন জুয়েলার্সের কাছ থেকে নিয়েছেন ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ‘ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড’র কাছ থেকে প্রতি মাসে নিতেন ১ কোটি টাকা। ‘অলঙ্কার নিকেতন’ থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ। ‘জড়োয়া হাউস’ থেকে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ‘জুয়েলারি সমিতি (বাজুস) থেকে নিয়েছেন এককালীন ৫০ কোটি টাকা। এ ছাড়া কাস্টমস গোয়েন্দার কয়েক কোটি টাকা ‘সোর্সমানি’র ভুয়া ব্যয় দেখিয়ে পকেটে নিয়েছেন। এদিকে গত ১৪ মে ড. মইনুল খানের অবৈধ সম্পদ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে রিট করা হয়েছে। দুদকে অভিযোগকারী এসএম মোরশেদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট সাগরিকা ইসলাম রিটটি করেন। রিটে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।এমন চোর-ডাকাতগুলো নিরবে ডাকাতি কওে পার গেলে গরীবের অভিশাপ লাগবে কবে? টোককাইরা ধরা পরলেও রাঘব বোয়ালরা ধরা পরবে কবে, এটাই মানুষের মুখে মুখে প্রশ্ন?
আপনার মতামত লিখুন :