নিজস্ব প্রতিবেদক: দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। গতকাল রবিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ‘আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে’ এ তথ্য জানানো হয়েছে। নিম্নচাপটির প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় দেশের চার সমুদ্রবন্দরে ১ দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে, এটা নিশ্চিত। তবে এর সম্ভাব্য আঘাত স্থল হতে পারে ভারতের উড়িষ্যা বা অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে। সোমবার এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। আর পর দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে ভারতের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। বাংলাদেশে
এ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কতটুকু পড়তে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে বজলুর রশীদ বলেন, এটি নির্ভর করবে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানার পর সমতলে উঠে এলে এটা কতটুকু শক্তিশালী থাকে, তার ওপর। এটি স্থলভাগে উঠে আসার পর দুর্বল হয়ে ভারতের বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে হয়ে বাংলাদেশের দিকে আসতে পারে। আর এর প্রভাবে আগামী বুধবার থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশে বৃষ্টি হতে পারে।
বজলুর রশীদ জানান, দেশের উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী, রংপুর বিভাগ এবং দক্ষিণের খুলনা বিভাগের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে চলতি মাসের শেষ দিন পর্যন্ত। রাজধানী ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলেও বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বর্তমান তথ্যানুযায়ী ২৭ অক্টোবর সকালে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে তখনই এর গতিপথ নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হবে।
গতকাল রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার বার্তায় বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপ আকারে একই এলাকায় অবস্থান করছে। গভীর নিম্নচাপটি রবিবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রামর সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৭০, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
বিভিন্ন গাণিতিক মডেলের তথ্যানুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি ২৮ বা ২৯ অক্টোবরের মধ্যে ভারতের অন্ধ্র উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তবে এর প্রভাবে বাংলাদেশের আবহাওয়াতেও পরিবর্তন আসবে।
এবারের ঘূর্ণিঝড়ের ‘মন্থা’ নামটি দিয়েছে থাইল্যান্ড। থাই ভাষায় ‘মন্থা’ শব্দের অর্থ ‘সুবাসিত ফুল’ বা ‘সুন্দর ফুল’। ২০০৪ সাল থেকে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের প্রথা চালু করে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো নিয়ে গঠিত ডাব্লিউএমও/এস্কাপ প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা তৈরি ও অনুমোদন করে।

 
              
                         ডেইলি খবরের সর্বশেষ নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন।
ডেইলি খবরের সর্বশেষ নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন। 
                             
                                           
                                           
                                           
                                           
                                           
                                           
                                           
                                           
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার মতামত লিখুন :