শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

৩৭ বছর ধরে ৭৯২ টাকা বেতনে চলছেন যে শ্রমিকরা

ডেইলি খবর ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১, ২০২৪, ০৮:৪৮ পিএম

৩৭ বছর ধরে ৭৯২ টাকা বেতনে চলছেন যে শ্রমিকরা

শুনতে অদ্ভুত লাগলেও দেশের পেট্রোল পাম্পে কাজ করা একজন শ্রমিক প্রতিমাসে মজুরি পান ৭৯২ টাকা। সরকারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের ‘নিম্নতম মজুরি বোর্ড’ ১৯৮৭ সালে তাদের এই মজুরি নির্ধারণ করে দেয়। এই মজুরি নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করা পেট্রোল পাম্পের শ্রমিকরা বছরের পর বছর মজুরি বাড়ানোর দাবি জানালেও কোনো কাজ হচ্ছে না।

তবে সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হচ্ছে এই ৩৭ বছরে মজুরি বোর্ডের সভায় কোনো পাম্পের মালিককে কিংবা তাদের প্রতিনিধিদের হাজির করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। শ্রম আইনে পাঁচ বছর অন্তর মজুরি পর্যালোচনার কথা থাকলেও এই শ্রমিকদের প্রায় চার যুগেও মজুরি পর্যালোচনা হয় না। এমন পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের ন্যায় দেশেও পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস।

শুধু পেট্রোল পাম্পের শ্রমিক ই নয় দেশের ৫৫ শিল্প খাতে এখন পর্যন্ত ন্যূনতম মজুরি ঠিক করা সম্ভব হয়নি। মে দিবস শ্রমিকদের অধিকার আদায় ও বাস্তবায়ন এবং কর্মের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য পালিত হলেও বছরের পর বছর এই শ্রমিকরা অধিকার বঞ্চিত। বছর আসে বছর যায় মে দিবস ও পেরিয়ে যায় কিন্তু এই শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না।

রাজধানীর একটা পেট্রোল পাম্পে কাজ করেন রাইসুল। তিনি বলেন, বেতন বাড়াতে বললে মালিকরা কথায় কথায় শ্রমিকদের ধমক দেয়। আমাদের প্রতি সরকার মালিক গণমাধ্যম কারও নজর নেই। আমরা নূন্যতম মজুরি পাই না, অথচ দিনের পর দিন পরিশ্রম করছি। ৪০ বছর ধরে আমাদের বেতন মাসে ১ হাজার টাকার কম অথচ এ নিয়ে কোনো সংগঠন ও কথা বলে না।

তবে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের বেতন নির্ভর করে মালিকদের ইচ্ছের ওপর। মালিকদের সঙ্গে কথা বলে দর কষাকষি করে তারা যে বেতন আদায় করেন তা দিয়ে কোনোভাবেই তাদের সংসার চলে না। তারা হয়তোবা ৭৯২ টাকা বেতন পান না, কিন্তু যা বেতন পান তাকেও বেতন বলে না। ফলে অনেক শ্রমিক অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করেন, গ্রাহকদের ঠকিয়ে নিজেরা বাড়তি উপার্জন করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মজুরি বোর্ডের এক শ্রমিক প্রতিনিধি জানান, মজুরি বোর্ডের ডাক পেয়ে ৩বার যাই। ঘণ্টার পর ঘন্টা বৈঠকের অপেক্ষায় বসেছিলাম। কিন্তু কোনোবারই মালিকপক্ষের কেউ হাজির হননি, ফলে বৈঠক ছাড়াই আমাকে ফিরে আসতে হয়।

মজুরি বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে শ্রম মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানিয়েছেন তারা। খুব দ্রুতই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। যদিও এর আগেও এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যেগ নিলেও শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি।

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!