শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৪ আশ্বিন ১৪৩২

পরিবেশের ক্ষতিকর আকাশমনি গাছে বিষিয়ে উঠছে মাটি ও ফসল

ডেইলি খবর ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৫, ০৯:১৫ এএম

পরিবেশের ক্ষতিকর আকাশমনি গাছে বিষিয়ে উঠছে মাটি ও ফসল

দেশের পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর আকাশমনি গাছ। খোদ সরকারিভাবেও এই গাছের রোপণ অব্যাহত রয়েছে। গাজীপুরের শ্রীপুর ঘুরে এর প্রমাণও মিলেছে। চার মাস আগে নিষিদ্ধ করা হলেও এখনও বন্ধ হয়নি।
উদ্ভিদবিদদের মতে, আকাশমনি গাছ প্রচুর পরিমাণে পানি শোষণ করে মাটিকে শুষ্ক করে তোলে। এছাড়া এর শুকনো পাতা, বাকল ও ডাল থেকে নির্গত অ্যাসিডিক উপাদান মাটিকে বিষাক্ত করে তোলে। তবে মারাত্মক এই ক্ষতির প্রভাবের কথা জানা সত্ত্বেও এই গাছ রোপণ বন্ধ করছে না খোদ বনবিভাগ।
সরেজমিনে গাজীপুরের শ্রীপুর ঘুরে দেখা যায়, প্রায় ৩ হেক্টর জমিতে সাড়ে ৭ হাজার স্বল্পমেয়াদী চারা লাগিয়েছে বন বিভাগের কাওরাইদ বিট অফিস। সাইনবোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চাকরিশ, গুটি জাম, জারুল, আমলকি, বহেরা, শিল কড়ইসহ নানা প্রজাতির গাছ থাকার কথা থাকলেও সেখানে কেবল আকাশমনি গাছ দেখা গেছে।
স্থানীয় বনবিভাগের কর্মকর্তা ২০২৩-২৪ সালে এসব গাছ লাগানোর কথা বললেও আশপাশের কৃষকরা জানিয়েছেন,অতি সাম্প্রতিককালে আকাশমনি গাছের এই চারাগুলো রোপণ করা হয়েছে। যদিও বন বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তার দাবি, নতুন করে আকাশমনি গাছের চারা রোপণ করা হয়নি। এগুলো পুরোনো বনায়নের অংশ।
পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের স্বার্থে চলতি বছরের মে মাসে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের রোপণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ করে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়। কিন্তু ৪ মাসেও ক্ষতিকর এই গাছের রোপণ বন্ধ হয়নি। গেল ৩১ আগস্ট গাজীপুরের শ্রীপুরের কাওরাইদ এলাকায় চ্যানেল ২৪ এর সরেজমিন পরিদর্শনের খবরে পাশের একটি জমি থেকে তড়িঘড়ি করে আকাশমনি গাছে বেশকিছু চারা তুলে ফেলা হয়। যদিও ভিন্ন কথা বলছে স্থানীয় বনবিভাগ।
বন অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দেশে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি প্রজাতির বøক বাগান আছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ১১৫ একর। আর এই দুই রকম গাছের স্ট্রিপ বাগান আছে ৪৬ হাজার ৭০৮ কিলোমিটার। যা পর্যায়ক্রমে ধ্বংস করা হচ্ছে।
বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরীর দাবি, নিষিদ্ধের পরও আকাশমনি গাছের চারা রোপণের সুযোগ নেই। যদি কেউ ক্ষতিকর এই গাছ রোপণ করে তবে সরকারি আদেশ গণ্য করেছে ধরে নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আশফাক আহমেদ বলেন, সব গাছ পরিবেশ বাঁচায় না, নির্দিষ্ট গাছ নির্দিষ্ট পরিবেশের জন্য ভালো। দ্রæত কাঠের চাহিদা পূরণের বিষয়টি মাথায় রেখে আকাশমনি গাছ রোপণ করা হলেও পরিবেশের জন্য এই গাছ কতটা ক্ষতিকর এই বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত।সংগৃহীত

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!