কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে সুজন ইব্রাহিম তার এলাকায় বিশিষ্ট দানবীর হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত,পেয়েছেন সিআইপি পুরস্কার ও। কিন্তু এসবের আড়ালে তার আসল পরিচয় তিনি একজন দালাল, নির্যাতনকারী ও প্রতারক এমনই তথ্য উঠে এসেছে সৌদি প্রবাসীদের মন্তব্য।
সৌদি আরবে, টাইমস লিঃ নামে সুজন ইব্রাহিমের রয়েছে একটি সাপ্লাই কোম্পানি। এই কোম্পানির মাধ্যমে ভিসা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কর্মী এনে সৌদি আরবের বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজে পাঠান সুজন ইব্রাহিম।বাংলাদেশ থেকে নেওয়া কর্মীদের ক্ষেত্র বিশেষে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, লাঠি দিয়ে শারীরিক নির্যাতন সহ বিভিন্ন অমানবিক নির্যাতন করে ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে তাদের রিয়াদ অফিসের একটি নির্যাতনের ঘটনা। যে ভিডিওতে দেখা যায় তার অফিসের ম্যানেজার গোপালগঞ্জের উলিপুরের আকরাম শেখ ও একজন অফিস সহকারী কয়েকজন প্রবাসীকে বেধড়ক মারপিট করছেন ও গালিগালাজ করছেন অকথ্য ভাষায়।
পরবর্তীতে সুজন ইব্রাহিম এই কর্মকান্ডের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষমা চাওয়ার নাটক সাজিয়ে মানুষের মন জয় করার চেষ্টা করেন। কিন্তু থেমে থাকে না সুজন ইব্রাহিমের অত্যাচারের কর্মকান্ড, যার প্রমাণ মিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা কয়েকটি পোস্টে হাজার হাজার সৌদি প্রবাসীদের করা বিভিন্ন নির্যাতন ও প্রতারণার অভিযোগে। যেখানে অসংখ্য প্রবাসী তাদের সাথে সুজন ইব্রাহিমের করা প্রতারণা এবং নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ধরেন। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্যাতিতদের কমেন্টস এড়াতে সুজন ইব্রাহিম কিছুদিনের জন্য তার ফেসবুক আইডিটি ডিএকটিভ করে দেন। প্রবাসী নিরীহ শ্রমিকদের রক্ত চুষে অর্থবিত্তের মালিক হওয়া সুজন ইব্রাহিম ফ্যাসিবাদ আওয়ামী সরকারের বিশেষ সহযোগী ছিলেন বলেও সূত্র মতে জানা যায়। গোপালগঞ্জের মানুষের প্রতি রয়েছে তার বিশেষ দুর্বলতা। যে কারণেই তার অফিসের ম্যানেজার আকরাম শেখ ও অফিসের কর্মকর্তা হাদিউজ্জামান হাদী উভয়েই গোপালগঞ্জের উলিপুরের বাসিন্দা। এখানেই শেষ নয় গোপালগঞ্জের আরেক আলোকিত ব্যক্তি আরাব খানের সাথেও রয়েছে সুজন ইব্রাহিমের গভীর সখ্যতা। আরাব খানের সাথে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় সুজন ইব্রাহিম হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন বলে সূত্রমতে জানা যায়। টিকটকে আরাব খানের সাথে বিশেষ বিশেষ মুহূর্তের ভিডিও ছেড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে আলাদাভাবে পরিচিত করে তোলার ক্ষেত্রে তিনি সবসময় সরব ছিলেন। ডিবি হারুন ও সুজন ইব্রাহিমের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে হওয়ায় দুজনের মধ্যে গড়ে ওঠে গভীর সখ্যতা। বিশেষ সূত্রে জানা যায় আরাব খান এবং সুজন ইব্রাহিম এর দুবাই কেন্দ্রিক রিয়েল এস্টেট ব্যবসার অন্যতম বিনিয়োগকারী ছিল ডিবি হারুন। সূত্র মতে আরো জানা যায় ডিবি হারুনসহ দেশের বেশ কিছু এমপি মন্ত্রীদের কালো টাকা সাদা করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখে সুজন ইব্রাহিম।সুজন ইব্রাহিমের সিআইপি পুরস্কার পাওয়ার ক্ষেত্রেও ডিবি হারুনের বিশেষ অবদান ছিল বলে জানা যায়।
ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে সিআইপি পুরস্কার প্রাপ্ত,মাজার পূজারী,সুজন ইব্রাহিম প্রবাসীদের রক্ত চুষে ডিবি হারুনের সংস্পর্শে থেকে গোপালগঞ্জের অন্ধ ভক্ত হয়ে কিভাবে সম্পদের পাহাড় গড়লেন সে বিষয়ে সঠিক তদন্তের দাবি সংশ্লিষ্ট সকলের।এ বিষয়ে সুজন ইব্রাহিম এর সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তার মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠালে তিনি এসব অভিযোগের বেশির ভাগই অসত্য বলে দাবি করেন। পরবর্তীতে প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত টাইমস কোম্পানির ভিসার কপি সুজন ইব্রাহিমের মুঠোফোনে পাঠালে এ বিষয়ে তার মতামত জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দেননি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোষ্টে সুজন ইব্রাহিমের করা মন্তব্যে দেখা যায় তিনি সৌদি আরবের কিছু উচ্চ পর্যায়ের মানুষদেরকে কাফেরের সাথে তুলনা করেছেন।সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরবে যে পরিমাণ অবৈধ বাংলাদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে আটক হয়েছে তার বড় একটি অংশ সুজন ইব্রাহিমের মাধ্যমে সৌদি আরবে গমনকারী বলে সূত্রমতে জানা যায়। সুজন ইব্রাহিম তার টাইমস কোম্পানির লাইসেন্সের বাইরে ও বাংলাদেশের বিভিন্ন লাইসেন্সধারী রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে লোক নিয়ে থাকে। মূলত লোক নেওয়ার পরে সঠিকভাবে আকামা না প্রদান করার কারণেই প্রবাসীদেরকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।সুজন ইব্রাহিম এর কাছে মতামত জানতে চাওয়ার পরবর্তী সময়ে তিনি নিউজ না করার সুপারিশকল্পে দেশের একটি স্বনামধন্য পত্রিকার সাংবাদিক কে দিয়ে এবং নবগঠিত দেশের একটি অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের নেতাকে দিয়ে প্রতিবেদকের কাছে ফোন করান।এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত পরবর্তী পর্বগুলোতে।
আপনার মতামত লিখুন :