রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে কাবিটার বরাদ্দের টোপ

রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে কাবিটার বরাদ্দের টোপ ফেলেছেন আনোয়ার খান এমপি। তিনি কাবিটার বরাদ্দের লোভ দেখিয়ে তার প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমতিয়াজ আরাফাত লক্ষীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. আনোয়ার হোসেন খাঁনের বিরুদ্ধে রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আচরণ বিধি লঙ্ঘনের লিখিত অভিযোগ করেছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমতিয়াজ আরাফাত দাবি করছেন,কাবিটার বরাদ্দের লোভ দেখিয়ে অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন দেওয়ান বাচ্চুর পক্ষে ভোট চাচ্ছেন এমপি আনোয়ার হোসেন খান। এ বিষয়ে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও রামগঞ্জ উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আরাফাত।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খাঁন পৌর মেয়র,পৌর কাউন্সিলর, ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদেরকে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন দেওয়ান বাচ্চুর (মোটরসাইকেলপ্রতীক) পক্ষে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। এমপির পক্ষে তার পিএস এলজিইডির কাবিটা প্রকল্পের বরাদ্দের লোভ দেখিয়ে স্থানীয় জনপ্রাতনিধিদের কাছে ওই প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছেন।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমতিয়াজ আরাফাত গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাতে অভিযোগ করেন। এ চিঠির অনুলিপি লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থা এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
আরাফাত বলেন, নির্বাচনকালীন এলাকায় এমপিদের উপস্থিত থাকা নিয়ে বিধিনিষেধ থাকলেও আনোয়ার খাঁন তা মানতে নারাজ। আগামী সপ্তাহে তিনি নিজ প্রতিষ্ঠান ‘আনোয়ার খান ডায়াগনস্টিক হাসপাতাল’ উদ্বোধন করতে তিনদিনের জন্য নির্বাচনী এলাকায় আসবেন। তবে মূল কারণ হচ্ছে, মোটরসাইকেলের প্রার্থীর পক্ষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বসে নির্বাচনী কাজ করতে আসবেন।
অভিযোগপত্রে তিনি আরও বলেন, এমপি আনোয়ার খাঁন নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ করে পৌর মেয়র, কাউন্সিলর, ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদেরকে চেয়ারম্যান প্রার্থী দেওয়ান বাচ্চুর পক্ষে ভোট করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সম্প্রতি এমপি এলজিইডির কাবিটা প্রকল্পের ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। ওই বরাদ্দের লোভ দেখিয়ে এমপি তার পিএস রফিককে দিয়ে জনপপ্রতিনিধিদের মোবাইল ফোন ও হোয়াটস অ্যাপে কল করে বাচ্চুর পক্ষে ভোট করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালায় ২০১৬ অনুযায়ী এমপি যদি নির্বাচনী এলাকার ভোটার হন তাহলে শুধু ভোট দিতেই ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবেন। কিন্তু এমপি আনোয়ার খান তা অমান্য করে ৩ দিনের জন্য ঢাকা থেকে রামগঞ্জের নির্বাচনী এলাকায় আসছেন মোটরসাইকেলের প্রার্থীর পক্ষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে নিয়ে বসে নির্বাচনী সমাধা করার জন্য।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ইউপি চেয়ারম্যান, পৌর কাউন্সিলরসহ ১০ জন প্রতিনিধি জানায়, মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের আগেই এমপি আনোয়ার খাঁন জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। সেখানে অনেকেই যাননি। যারা গিয়েছে-তাদেরকে দেওয়ান বাচ্চু পক্ষে ভোট করার নির্দেশ দিয়েছেন। সম্প্রতি তার পিএস রফিককে দিয়েও হোয়াটসঅ্যাপে কল করে বাচ্চুর পক্ষে ভোট করার জন্য বিলেন। বাচ্চুর পক্ষে ভোট করলে কাবিটা প্রকল্পের বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে টোপ ফেলা হয়।
বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য জানতে লক্ষীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খাঁনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রিয়াংকা দত্ত শুক্রবার (১০ মে) সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে এলাকায় এমপি বনাম চেয়ারম্যানপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে ভোটের মাঠে থমথমেভাব বিরাজ করছে। দলীয় সুত্রে জানা গেছে এখন থেকে উপজেলা নির্বাচনগুলো উন্মুক্তই থাকছে।