মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি: সদর উপজেলায় বিলে শাপলা তুলতে গিয়ে চার স্কুলশিক্ষার্থীর একসাথে মৃত্যু হয়েছে। আজ রবিবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে উপজেলার মোমিনপুর বিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো ফাতেমা (১৪), আফিয়া (১২), আলিয়া (১১) ও মিম (১৪)। ফাতেমা ও আফিয়া আপন বোন।এ ছাড়া আলিয়া তাদের চাচাতো বোন। মিম তাদের প্রতিবেশী।
ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার শামীম হোসেন মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।এদের মধ্যে ফাতেমা মোমিনপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এবং আফিয়া বারাদি তৃণমূল মডেল একাডেমির চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।
ইরাক প্রবাসী সাহারুল ইসলামের মেয়ে ও বারাদি তৃণমূল মডেল একাডেমির চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী আলেয়া (১০), ইসাহাক আলীর মেয়ের আমঝুপি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী মিম (১৪)। নিহত সকলের বাড়ি রাজনগর গ্রামের মল্লিকপাড়ায়।
স্থানীয়রা জানান, দুপুরের দিকে চারজনই একসঙ্গে মশুরিভাজা বিলে শাপলা ফুল তুলতে মশুরিভাজা বিলে যায়। দীর্ঘক্ষণ তারা ফিরে না আসায় বিকালের দিকে পরিবারের লোকজন তাদের খুঁজতে বের হয়।বিলপাড়ে তাদের স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখে একজনের লাশ পানিতে ভাসছে দেখেন। তারপর আরও দুটি মরদেহ দেখতে পায়। একজনকে না পেয়ে মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম উদ্ধার অভিযান চালিয়ে আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করে।এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ শোকে ভারি হয়ে উঠেছে।
মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিস ইউনিটের টিম লিডার শামিম হোসেন জানান, শাপলা ফুল তুলতে গিয়ে চারজন বিলে ডুবে যায়। স্থানীয়রা তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে। একজনকে খুঁজে না পেলে আমাদের খবর দিলে আমরা ঘটনাস্থলে পৌছে বিলের একটি গর্তের মধ্যে থেকে বাকি জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বারাদি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (এসআই) রেজাউল ইসলাম বলেন, দুপুর দেড়টার দিকে চারজন মশুরিভাজা বিলে শাপলা ফুল তুলতে যায়। ফুল তুলতে গিয়ে তারা একটি গর্তে পড়ে নিখোঁজ হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেছবাহ উদ্দিন বলেন, নিহত চারজনের কেউ সাঁতার জানত না। বিলে একেক যায়গায় একেক রকম গভীরতা। যে কারণে তারা বুঝতে না পেরে বিলে তলিয়ে যায়। পরে তাদের খোঁজাখুজির পর স্থানীয়রা ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যা মরদেহ উদ্ধার করে।
মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার্ সুমাইয়া জাহান ঝুকার্সহ প্রশাসের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত পরিবারের খোঁজখবর নিয়েছেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে নিহতদের দাফনের জন্য মরদেহ প্রতি ১০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।ছবি-সংগৃহীত

ডেইলি খবরের সর্বশেষ নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন।
আপনার মতামত লিখুন :