বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিতর্কিতদের আওয়ামী লীগ থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ

প্রকাশিত: ১০:১৪ এএম, জুন ১৩, ২০২১

বিতর্কিতদের আওয়ামী লীগ থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ

ক্ষমতায় আসার পরে যেসব কাউয়া-হাইব্রিড মোটাসোটা হয়েছে তাদের এবার সরে যেতে হচ্ছে। বিষয়টা হলো: আওয়ামী লীগ থেকে বিতর্কিতদের বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে লের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলাসহ উপজেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক সমস্যা নিরসনেরও তাগি দিয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে দলের আট বিভাগীয় কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের আরও সক্রিয় হতে বলেছেন। গত শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে এসব নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত শনিবার গণবভনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে লীয় সভাপতি এসব কিনির্দেশ দিয়েছেন বলে একাধিক র্শীষ নেতা এতথ্য জানান। বৈঠকে জাতীয় সংসদের তিনটি আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। ঢাকা-১৪ আসনে শাহ আলী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আগা খান মিন্টু, সিলেট-৩ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান ও কুমিল্লা-৫ আসনে বুড়িচং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম খান মনোনয়ন পেয়েছেন। তাদের মধ্যে আগা খান মিন্টু ও আবুল হাসেম খান বয়সে প্রবীণ। হাবিবুর রহমান তুলনামূলকভাবে নবীন। আওয়ামী লীগ লীয় সংস সদস্য আসলামুল হক, মাহমুদ-উস সামাদ চৌধুরী কয়েস ও আবদুল মতিন খসরুর মৃত্যুতে আসন তিনটি শূন্য হয়। আগামী ২৮ জুলাই এগুলোতে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে অংশ নেওয়া তিনজন নেতা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ থেকে বিতর্কিতদের বাদ দেওয়ার যে নির্দেশ দিয়েছেন, গতকালের বৈঠকেও তার প্রতিফলন ঘটেছে। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। ঢাকা-১৪ আসনে একজন প্রার্থীর যোগ্যতা নিয়ে বৈঠকে ইতিবাচক মন্তব্য করা হলেও তার নিকটাত্মীয়ের বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ থাকায় ওই প্রার্থীকে বিবেচনায় আনা হয়নি। তিন আসনে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে,তাদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত থাকার কোনো অভিযোগ নেই। বৈঠকে ফরিদপুর জেলা ও শহর আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনায় গ্রæপিং-পাল্টা গ্রæপিংয়ের প্রসঙ্গও এসেছে। বৈঠকে জানানো হয়েছে, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগ গঠনের জন্য ুটি আহ্বায়ক কমিটি জমা ওেয়া হয়েছে। এ ুটি কমিটিতে কয়েকজন বিতর্কিত ব্যক্তি রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই বিতর্কিত ব্যক্তিরে বাদ দিয়ে ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের জন্য লের সাধারণ সম্পাক ওবায়দুল কাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত দুই কমিটিতে থাকা স্বচ্ছ ইমেজের নেতারে রাখার নির্দেশনা রয়েছে। ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অচলাবস্থা শুরু হয় ২০২০ সালের ৭ জুন থেকে। ওই দিন গ্রেপ্তার হন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত। সংগঠনের সভাপতি খন্দকার নাজমুল ইসলাম লেভী গ্রেপ্তার হন মাসখানেক পর। এই দুই নেতার বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, অবৈধভাবে সম্প আহরণ ও সম্পদ পাচারের অভিযোগে একাধিক মামলা হয়েছে। তারা সংগঠন থেকে বহিস্কৃত হয়েছেন। আলোচিত ুই নেতা গ্রেপ্তারের পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাক পদে কাউকেই দায়িত্ব ওেয়া হয়নি। পুরো কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাক মির্জা আজমের কাছে ফরিদপুর শহর শাখার জন্য দুটি আহ্বায়ক কমিটি জমা ওেয়া হয়। ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, সংগঠনের জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরে শহর কমিটি গঠনের জন্য আহ্বায়ক কমিটি কেন্দ্রে জমা দেওয়া হয়েছে। মনিরুল হাসান মিঠু প্রস্তাবিত কমিটির আহ্বায়ক। অন্যদিকে ফরিদপুরের পৌর মেয়র অমিতাভ বোসও আলাদাভাবে আহ্বায়ক কমিটি জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তিনি নিজেই এই কমিটির আহ্বায়ক। জেলা-উপজেলার সাংগঠনিক সমস্যা নিরসনের তাগিদ: বৈঠকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে চলমান সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আট বিভাগের সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গুছিয়ে আনতে হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক সমস্যা থাকলে সেটা ্রæত নিরসন করতে হবে। একই সঙ্গে তিনি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কোনো সাংগঠনিক কমিটির বিরোধ না মেটানো গেলে সংশ্নিষ্ট কমিটি ভেঙে ওেয়ার নির্দেশ দেন। আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলাসহ তৃণমূল পর্যায়ের সাংগঠনিক কার্যক্রম দেখভালের জন্য চার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আট সাংগঠনিক সম্পাদকের নেতৃত্বে আটটি বিভাগীয় কমিটি রয়েছে। সভাপতিমন্ডলীর সদস্যরা বরিশাল ছাড়া অন্য সাতটি বিভাগীয় কমিটিকে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক পরামর্শ দিচ্ছেন। করোনাভাইরাস ও নির্বাচন :করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। এতে বলা হয়েছে, ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। সার্বিক পরিস্থিতি এখনও সন্তোষজনক নয়। তবে টিকা আসছে। সুতরাং চিন্তার কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বৈঠকের মাধ্যমে আবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদ দিয়েছেন।
Link copied!