দুর্নীতিবিরোধী বেশ কিছু অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া চীনের বিচারবিষয়ক মন্ত্রী ফু জেংহুয়ার বিরুদ্ধে ঘুষের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে।
ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারে উপহার ও অর্থের বিনিময়ে তিনি ১১৭ মিলিয়ন ইউয়ান ঘুষ নিয়েছিলেন বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
বৃহস্পতিবার দেশটির জিলিন প্রদেশের রাজধানী চ্যাংচুনের একটি আদালত জেংহুয়াকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়। গত জুলাইয়ে অভিযুক্ত করা হয় তাকে।
সাবেক এই চীনা মন্ত্রীর নামে মৃত্যুদণ্ডের রায় হলেও দু বছর কারাভোগের পর তার সাজা কমে যাবজ্জীবন হবে। বাকি জীবন কারাগারেই থাকতে হচ্ছে তাকে।
অক্টোবরে হতে যাওয়া কমিউনিস্ট পার্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনের আগে জেংহুয়ার এমন রায় হলো। ওই সম্মেলনের আগে হঠাৎ করে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় অভিযান শুরু হয়েছে।
প্রতি পাঁচ বছর পর এই সম্মেলন হয়ে থাকে। এতে প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং ইতিহাস গড়ে সম্মেলনে টানা তৃতীয়বারের মতো দলীয় প্রধান হতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্ত্রীর বিচারের আগে দেশটির তিন প্রাদেশিক পুলিশপ্রধানেরও সম্প্রতি বিচার করেছে আদালত। তাদের বিরুদ্ধে শুধু দুর্নীতি নয়, আনা হয়েছে প্রেসিডেন্টের প্রতি অবিশ্বস্ত হওয়ার অভিযোগও।
শাস্তির অপেক্ষায় থাকা সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা সান লিজুনের নেতৃত্বে রাজনৈতিক দল তৈরির প্রক্রিয়ার অংশ হওয়ার অভিযোগ আছে এসব পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
জেংহুয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি বেশ আলোচিত। ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত চীনের বিচারমন্ত্রী ছিলেন তিনি। পুলিশের চাকরির পর এক পর্যায়ে দায়িত্ব নিয়েছিলেন দেশটির জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধানের।
দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেতৃত্ব দিয়ে সুনাম কুড়িয়েছিলেন এই সাবেক মন্ত্রী। ঘুষের অভিযোগে শীর্ষ কর্মকর্তা জু ইয়ংকাংকে পদ থেকে সরানো তার দায়িত্ব পালনের একটি বড় নমুনা।
এ অবস্থাতেই গত বছরের অক্টোবরে দলের অভ্যন্তরীণ নজরদারি সংস্থা ঘোষণা করে, জেংহুয়ার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ও জাতীয় আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে।
চলতি বছরের মার্চে মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয় জেংহুয়াকে। এরপর বরখাস্ত করা হয় কমিউনিস্ট পার্টি থেকেও। মাস খানেক পর দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান তিনি।