মঙ্গলবার, ০১ জুলাই, ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

বান্দরবানে করোনা রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে বিপাকে স্বাস্থ্য বিভাগ

প্রকাশিত: ০৫:১৩ এএম, জুন ২৮, ২০২০

বান্দরবানে করোনা রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে বিপাকে স্বাস্থ্য বিভাগ

দু'দফায় রেড জোন ও লকডাউনে রেখেও বান্দরবান পৌর এলাকায় করোনা সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। সরকারি তথ্য অনুযায়ী পুরো জেলার ৪ লাখ মানুষের মধ্যে মোট আক্রান্ত ৩১২। আর ৬০ হাজার জনসংখ্যার বান্দরবান পৌরসভা এলাকায় বাড়তে বাড়তে আক্রান্তের সংখ্যা এখন ২০২। বান্দরবান প্রশাসনের নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা থাকা সত্ত্বেও এত বেশি সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গত ১৫ এপ্রিল নাইক্ষংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম কোনার পাড়ায় তবলিগ ফেরৎ এক ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থাপিত পিসিআর ল্যাবে। ১৭ এপ্রিল প্রকাশিত ফলাফলে তার নমুনায় করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। সেই থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত দু'মাসে বান্দরবান জেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমিতের মোট সংখ্যা ছিল ৮২। এরপর মাত্র ৬ দিনে ১০০ জন বেড়ে গিয়ে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮২ জন। আর তার পরের এক সপ্তাহে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে ২৭ জুন তা ৩১২তে পৌঁছায়। প্রথমে নাইক্ষংছড়ি উপজেলায় করোনা ছোবল বসালেও আক্রান্তের দিক থেকে নাইক্ষংছড়িকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে এসে যায় লামা পৌরসভা। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ ছাড়ায়। ফলে স্বাস্থ্য বিভাগের প্রস্তাব অনুযায়ী স্থানীয় প্রশাসন বান্দরবান পৌরসভা ও লামা পৌরসভাকে রেড জোন ঘোষণা করে ২৫ জুন থেকে কড়াকড়িভাবে লকডাউন করে জনচলাচল বন্ধ করে দেয়। অন্যদিকে ১ জন, ২ জন করে বাড়তে বাড়তে নাইক্ষংছড়িতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ২৬। বান্দরবান সদর, থানচি এবং লামা উপজেলায় ২/১ জন পুলিশ সদস্য করোনা আক্রান্ত হলেও ২৬ জুনের আগে সেনাবাহিনী বা বিজিবির কারো করোনায় আক্রান্ত হতে শোনা যায়নি। কিন্তু ২৬ জুনের নমুনা পরীক্ষায় মোট ২৭ জন করোনা পজেটিভের মধ্যে ১৬ জনই ছিলেন সেনা, বিজিব ও পুলিশ বাহিনীর। এর মধ্যে সেনাবিহিনীর আলীকদম জোনে ৬ জন, থানচি উপজেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ- বিজিবি'র বলিপাড়া জোনের ৬ জন বিজিবি সদস্য এবং রোয়াংছড়ি থানার ৪ পুলিশ সদস্য রয়েছেন। আক্রান্তের তালিকায় আছেন ১৪ জন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীও। বান্দরবানে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন পার্বত্য চট্টগ্রস্ম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার (ইউএইচ এন্ড এফপিও) ডাক্তার মোহাম্মদুল হক, সদর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম। কুন্তু এখনো চিকিৎসাধীন আছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম, এসি ল্যান্ড, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ডিসি'র সিএ, পেশকার, মন্ত্রীর পিও, ওয়ার্ড কাউন্সিলার, শিক্ষক, ব্যাংকারসহ দু'শরও বেশি করোনা পজেটিভ ব্যক্তি। বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডাক্তার অং সুই মারমা বলেছেন, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা থাকা সত্ত্বেও এত বেশি সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে বিপাকে আছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
Link copied!