মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

দুঃস্বপ্ন ভোলার জয় আর্জেন্টিনার

প্রকাশিত: ০১:৩৭ পিএম, নভেম্বর ২৭, ২০২২

দুঃস্বপ্ন ভোলার জয় আর্জেন্টিনার

সৌদি আরব দুঃস্বপ্ন ভুলে বিশ্বকাপে টিকে থাকতে জয় জরুরি ছিল; চেনা প্রতিপক্ষ মেক্সিকোর বিরুদ্ধে কাঙ্ক্ষিত জয় পেল আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসি ও এনজো ফার্নান্দেজের গোলে দেশটিকে ২-০ গোলে হারিয়েছে আলবিসেলেস্তেরা। মেক্সিকোর বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে এটি আর্জেন্টিনার চতুর্থ জয়। পাঁচ পরিবর্তনে এনে এদিন একাদশ সাজান আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো, নাহুয়েল মলিনা, নিকলাস টাগলিয়াফিকো, লিয়ান্দ্রো পারেদেস আর আলেহান্দ্রো পাপু গোমেজের পরিবর্তে একাদশে রাখেন গনজালো মন্তিয়েল, লিসান্দ্রো মার্টিনেজ, মার্কোস আকুনইয়া, গুইদো রদ্রিগেজ ও অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারকে। দলে বড় পরিবর্তন আনলেও প্রথমার্ধে মাঠের খেলায় এমন কোনো পরিবর্তন দেখাতে পারেনি আর্জেন্টিনা, যাতে দর্শক-সমর্থকরা আশাবাদী হতে পারেন। বরং কিক-অফের পর ক্রমেই হতাশা বাড়ছিল আলবিসেলেস্তে ভক্তদের। মেক্সিকোর আর্জেন্টাইন কোচ জেরার্দো টাটা মার্টিনো আগেই ঘোষণা দিয়েছেন— ‘নিজ দেশকে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে দিতে সম্ভাব্য সবকিছু করব।’ ঘোষণা মাফিক রণকৌশলও সাজান আর্জেন্টিনা জাতীয় দল ও বার্সেলোনায় মেসির সাবেক এ কোচ। তিন সেন্টার ব্যাকের সঙ্গে দুই ফুলব্যাক— পাঁচজনকে রক্ষণে রেখে এদিন ম্যাচ শুরু করে মেক্সিকো। তাদের ৫-৩-২ ফর্মেশন সুযোগ বুঝে ৩-৫-২ হয়ে যাচ্ছিল। মেক্সিকোর কোচের মতো এদিন আর্জেন্টিনাকে রুখে দেয়ার প্রচেষ্টায় গ্যালারীতে নিজেদের উজাড় করে দিচ্ছিলেন দেশটির সমর্থকরা, কম যাননি আর্জেন্টিনা সমর্থকরা। দুই দলের সমর্থকদের সরব উপস্থিতিতে গ্যালারি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। যদিও মাঠের খেলায় তার ছিটেফোঁটাও ছিলনা। বিবিসি রেডিও-ফাইভ লাইভে সাবেক ইংলিশ স্ট্রাইকার ক্রিস সাটন বলছিলেন— দর্শকরা গ্যালারিতে যে প্রাণবন্ত অবস্থা তৈরি করেছে, মাঠেও খেলোয়াড়দের কাছ থেকে তেমনটা প্রত্যাশা করা হচ্ছে। কিন্তু গোটা প্রথমার্ধে গোলের পরিষ্কার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি আর্জেন্টিনা। আক্রমণ শামলে এসময় মেক্সিকো একাধিকবার প্রতিপক্ষ গোলমুখে হানা দিয়েছে বটে, ভাল কোনো সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি তারাও। ম্যাচের প্রথমার্ধে দুই দল মোট চারবার প্রতিপক্ষ গোলমুখে হানা দিতে পেরেছে; যা ২০১৪ সালে আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডস ম্যাচের পর বিশ্বকাপে কোন ম্যাচে সবচেয়ে কম প্রচেষ্টা। আর্জেন্টিনাকে রুখে দেওয়ার প্রচেষ্টায় প্রথমার্ধে সফল মেক্সিকো। সৌদি আরব দুঃস্বপ্ন ভুলতে যে নৈপুণ্যের প্রয়োজন ছিল, সেটা তো দূরের পথ সামর্থ্যর সিকি আনাও দেখা যায়নি আর্জেন্টিনা। টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত দলটা বিশ্বকাপে এসে যেন উল্টো পথ ধরে। বিরতির পর অবশ্য বদলাতে থাকে দৃশ্যপট। উজ্জ্বল শুরুর পর সময়ের সঙ্গে মেক্সিকোর ওপর চাপ বাড়তে থাকে। টাটা মার্টিনোর দল সে চাপের চূড়ান্ত রূপ দেখল ৬৪ মিনিটে। ডানদিক থেকে ডি মারিয়ার বাড়ানো বল ধরে বক্সের বাইরে প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে বাম পায়ের জোড়ালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন মেসি (১-০)। বিশ্বকাপে আর্জেন্টাইন সুপারস্টারের এটি অষ্টম গোল, ফুটবল ঈশ্বর খ্যাত দিয়েগো ম্যারাডোনার গোলসংখ্যা সমান। আর্জেন্টিনার জার্সিতে এটি ছিল মেসির টানা ষষ্ঠ ম্যাচে গোল। ২০১১ সালের নভেম্বর থেকে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা ছয় ম্যাচে গোল করেছিলেন এ তারকা। এ গোলের পরও আর্জেন্টিনাকে নিয়ে যাদের শঙ্কা ছিল, ৮৭ মিনিটে তাদের আশ্বস্ত করেন মেসি। এবার এনজো ফার্নান্দেজকে দিয়ে গোল করান এ তারকা। শর্ট কর্ণার থেকে মেসির পা ঘুরে আসা বল বাঁকানো শটে জালে জড়ান বেনফিকা তারকা (২-০)।
Link copied!