শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

৩ কোটি টাকার পাইপলাইনে ১৭ বছরে এক ফোঁটাও পানি মেলেনি

প্রকাশিত: ০৮:১৪ এএম, ডিসেম্বর ৫, ২০২০

৩ কোটি টাকার পাইপলাইনে ১৭ বছরে এক ফোঁটাও পানি মেলেনি

ডেইলি খবর ডেস্ক: পানির দুভিক্ষ দুর করতে বিশুদ্ধ পানীয়জল সরবরাহের জন্য ৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ভূগর্ভে পাইপলাইন স্থাপনসহ পাম্পঘর নির্মাণ করার দীর্ঘ ১৭ বছরে এক ফোটা পানিও পাননি দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরবাসী। অবহেলা-অযতেœই রয়েছে চারটি পাম্পঘরসহ ভূগর্ভের পানির পাইপলাইনগুলো। ৩ কোটি ১৯ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ব্যয়ে এ পানি সরবরাহের প্রকল্প করা হলেও এখনও মাটির নিচেই পড়ে আছে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত পানির পাইপলাইন। ফুলবাড়ী উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ফুলবাড়ী পৌরবাসীর নাগরিক সুবিধা হিসেবে পানি সরবরাহের জন্য ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে চার কিলোমিটার পৌর এলাকায় ভূগর্ভে পানির পাইপলাইন স্থাপন করা হয়। চার কিলোমিটার এলাকায় পাইপলাইন স্থাপনের একযুগ পর গত ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে এক কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে দশ কিলোমিটার এলাকায় পাইপলাইন স্থাপন করা হয়। একই সময়ে ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ফুলবাড়ী সরকারি কলেজ চত্বরে, পৌরসভা ভবনে, উপজেলা পরিষদ চত্বরে ও কানাহার রেলস্টেশন এলাকার চারটি স্থানে পাম্পঘর নির্মাণ করা হয়। গত ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে এক কোটি এক লাখ ৬৪ হাজার ৮৭ টাকা ব্যয়ে আরও ২০ কিলোমিটার এলাকায় পাইপলাইন স্থাপন করা হয়। এদিকে ২ কোটি ৯০ লাখ টাকারও অধিক অর্থ ব্যয়ে ভূগর্ভে পাইপলাইন স্থাপন এবং ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪টি পাম্পঘর নির্মাণ করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেগুলো অযতœ ও অবহেলায় পড়ে রয়েছে। দীর্ঘ ১৭ বছর আগে পানি সরবরাহের কার্যক্রমটি শুরু হলেও কবে শেষ হবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে পর্যায়ক্রমে দুইটি নির্বাচনের মাধ্যমে মেয়র ও কাউন্সিলর বদল হয় এবং আগামী ২৮ ডিসেম্বর আবারও পৌর নির্বাচন এলেও পাইপলাইনে পানির মুখ দেখতে পাননি ফুলবাড়ী পৌরবাসী। ফুলবাড়ী উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-প্রকৌশলী মো. সোহানুর রহমান সোহান বলেন, গত ২০১৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর এলাকায় পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শেষ করে পানি সরবরাহ কার্যক্রম পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে কিন্তু তারা এখনও পানি সরবরাহ শুরু করেনি। পানি সরবরাহের জন্য দাফতরিকভাবে একাধিকবার পৌর কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দেয়া হয়েছে, কিন্তু তারা কিছুই জানায়নি। আমরা পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শেষ করে হস্তান্তর করেছি; এখন সেটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পৌর কর্তৃপক্ষের। এছাড়াও ৪০ পৌরসভা ও গ্রোথ প্রকল্পের আওয়ায় ফুলবাড়ী পৌর কর্তৃপক্ষকে ৩০টি টিউবওয়েল দেয়া হয়েছে। ফুলবাড়ী পৌর মেয়র মো: মুরতুজা সরকার মানিক বলেন, জনস্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ভূগর্ভে পানির পাইপলাইন চালু করতে বলেছেন। পৌরসভা থেকে এ বিষয়ে মাইকিং করা হয়েছে কিন্তু কেউ পানির জন্য আবেদন করেনি। পানির পাইপের কাজ এখনও অসমাপ্ত রয়েছে। অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ সম্পন্ন করা হবে। তিনি আরও বলেন, ফুলবাড়ীতে ৭০ ফুট ভূগর্ভেই পানি পাওয়া যায়; কিন্তু কোথাও কোথাও ৫০০ ফুট ভূগর্ভেও পানি মিলে না। তাই ফুলবাড়ীতে এ পানির চাহিদা কম। টাকা খরচ হবে মানুষ পানি পানি করবে প্রতিকার কি?
Link copied!