শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাফল্যের ধারায় জনপ্রশাসন

প্রকাশিত: ০৪:০২ এএম, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাফল্যের ধারায় জনপ্রশাসন

দক্ষ ও কার্যকর প্রশাসনের রূপকল্প নিয়ে এগিয়ে চলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গত এক দশকে প্রশাসনিক সাফল্যে অনেক দূর এগিয়েছে। টানা তিন মেয়াদের গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থায় শেখ হাসিনার হাত ধরে প্রশাসনে ধারাবাহিক অনেক সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে। দেশ পরিচালনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রশাসন। দীর্ঘদিন প্রশাসন পরিচালনাকারী মন্ত্রণালয়ের নাম ছিল ‘সংস্থাপন মন্ত্রণালয়’। ২০১১ সালে শেখ হাসিনার সরকার এই নাম পরিবর্তন করে জনমানুষের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে নাম রাখে ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়’। প্রশাসনসহ সরকারি সব চাকরিতে বড় একটি অভিযোগ ছিল, সরকারি চাকরি মানেই বেতন কম। শেখ হাসিনা বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ২০১৫ সালে সরকারি কর্মচারীদের নজিরবিহীন বেতন বৃদ্ধি করেন। একসঙ্গে প্রায় সব কর্মচারীর বেতন দ্বিগুণ করার ইতিহাস বিশ্বের অন্য কোনো রাষ্ট্রে নেই বলে দাবি সরকারি কর্মচারীদের। বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গুণগত মানের জনসেবার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে শুরু করে শেখ হাসিনার সরকার। টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর ১০ দিনের মাথায় মন্ত্রণালয়ভিত্তিক পরিদর্শন শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিদর্শনের শুরুতে নিজের দায়িত্বে থাকা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়েছিলেন গত ১৭ জানুয়ারি। ওই দিন তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা যে লক্ষ্য নিয়েছি, তা পূরণ করতে পারব, এর জন্য সুশাসন ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলা দরকার। বেতন-ভাতা, সুযোগ-সুবিধা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছি, সে ক্ষেত্রে আমি তো মনে করি আমাদের দুর্নীতির কোনো প্রয়োজন নেই।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যা প্রয়োজন তার সব তো আমরা মেটাচ্ছি, তাহলে দুর্নীতি কেন হবে?’ জনপ্রশাসন কর্মকর্তাদের সততা ও আন্তরিকতা নিয়ে জনসেবা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণ জনপ্রশাসন। আপনাদের সেভাবে কাজ করতে হবে।’ জনপ্রশাসনে ইতিবাচক মনোভাব ফিরিয়ে আনতে ২০১২ সালে ‘শুদ্ধাচার কৌশলপত্র’ প্রণয়ন করে শেখ হাসিনার সরকার। এর মাধ্যমে নিম্ন থেকে উচ্চ শ্রেণির সব কর্মচারীর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া মাসিক ও বার্ষিকভাবে ভালো কাজের জন্য কর্মচারীদের মধ্যে পুরস্কারের প্রচলন করা হয়েছে। প্রশাসনে এই উদ্যোগটি সবার মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব রাখছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রশাসনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিজিটাল তথ্য কেন্দ্র স্থাপন ও ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে আধুনিক সেবা পাচ্ছে গ্রামের মানুষ। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। গত প্রায় এক যুগে ডিজিটাল সেবার সর্বোচ্চ প্রয়োগ করছে মাঠ প্রশাসন থেকে কেন্দ্রীয় প্রশাসন। করোনাকালে যখন টানা ৬৬ দিন দেশজুড়ে সাধারণ ছুটি চলছিল, তখনো ডিজিটাল মাধ্যমে পুরোদমে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক কার্যক্রম চলেছে। সম্প্রতি সরকার ডিজিটাল কার্যক্রম আরো ব্যাপক আকারে পরিচালনার জন্য ‘ডিজিটাল সরকার আইন ২০২০’ প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। প্রশাসনসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নারীদের দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে দেশের প্রায় ৫০০ উপজেলার মধ্যে পৌনে ২০০ উপজেলায় নারী ইউএনওরা দায়িত্ব পালন করছেন, সাত-আটটি জেলায় ডিসির (জেলা প্রশাসক) দায়িত্ব পালন করছেন নারী কর্মকর্তারা। শুধু মাঠ প্রশাসন নয়, বিভিন্ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), মন্ত্রণালয়ের সচিব পদেও যোগ্য নারীদের পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ পদে যখন নিয়োগের প্রশ্ন ওঠে, তখন সংশ্লিষ্ট যোগ্য নারী কর্মকর্তাদের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুধু প্রশাসন নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রেও নারীদের প্রাধান্য দিয়ে উদ্যোগ নেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের প্রথম নারী স্পিকার, নারী বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সব সময় দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তাদের সঠিক জায়গায় পদায়নে গুরুত্ব দেন। প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনাকে মানদণ্ড ধরে প্রশাসনের যোগ্য কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘কোনো জায়গায় সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সঠিক জায়গায় সঠিক কর্মকর্তাকে পদায়ন করা গেলে অনেক কাজ সহজ হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নেওয়া এসব উদ্যোগের ইতিবাচক ফল পাচ্ছে দেশবাসী।’
Link copied!