শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

রিপাবলিকান না ডেমোক্রেট, সিনেটের কর্তৃত্ব কার হাতে যাচ্ছে?

প্রকাশিত: ০৫:১৬ এএম, অক্টোবর ১৩, ২০২০

রিপাবলিকান না ডেমোক্রেট, সিনেটের কর্তৃত্ব কার হাতে যাচ্ছে?

মার্কিন নির্বাচনে হোয়াইট হাউস দখলের পাশাপাশি সিনেটের কর্তৃত্ব নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল লড়াই। উদার নৈতিক জাস্টিস রুথ গ্রিনসবার্গের মৃত্যুতে সুপ্রিম কোর্টে নতুন নিয়োগ নিয়ে রশি টানাটানি এ বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে। নির্বাচনকালীন সময়ে এমন নিয়োগ কেবল নজিরবিহীনই নয় সম্পূর্ণ প্রথা বিরোধী। নির্বাচনের ৮ মাস পূর্বেও প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে সুপ্রিম কোর্টের মনোনয়ন দিতে রিপাবলিকানরা প্রচন্ড বাঁধা দেন এবং মনোনয়ন আটকে দেন। ১শ আসনের সিনেটে ৫৩ আসন নিয়ে এখন রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। ডেমোক্রেটরা ৪৫ এবং স্বতন্ত্র ২ । তাই রিপাবলিকান শিবির আরেকজন রক্ষনশীল প্রতিনিধি সুপ্রিম কোর্টে পাঠাতে উঠেপড়ে লেগেছে। আর এমনটি হলে ট্রাম্পের ললাটে বসবে তিন জন সুপ্রিমকোর্টের বিচারক মনোনয়ন দেয়ার দূর্লভ জয় টীকা। উল্লেখ্য, সিনেট ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের মনোনয়ন কনফার্ম করে থাকে। আসছে নির্বাচনে ডেমোক্রেটরা কোন আসন না হারিয়ে ৫টি আসন জিতলে তাঁদের একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা পাবে। আর চারটি জিতে যদি প্রেসিডেন্ট পদে জয়লাভ করতে পারে তাতেও ভোটে তাঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় থাকে। সিনেটে এবার ৩৫টি আসনে নির্বাচন হচ্ছে। এরমধ্যে বারোটি ডেমোক্রেট এবং তেইশটি রিপাবলিকানদের দখলে। এ আসন গুলোর মধ্যে রিপাবলিকানরা মেইন, আ্যরিজোনা,কলারাডো ও নর্থ ক্যারোলিনায় তাঁদের চারটি আসন হারাতে যাচ্ছে। ঝুঁকিতে রয়েছে আরো অন্তত ২টি আসন। অন্যদিকে ডেমোক্রেটরা আলাবামায় ডগলাস জোন্সের আসনটি হারাতে বসেছে। এখানে প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান টমি টাবারভিল সিনেটে দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। মেইনের দীর্ঘ ২৩ বছরের সিনেটর সুসান কলিন্সের রাজনীতির মৃত্যুঘন্টা বেজে উঠেছে। ডেমোক্রেট প্রতিপক্ষ সারা গেডিওন এবার ধাক্কা দিয়ে নড়িয়ে ফেলেছেন সুসানের ভীত। নিজেকে বাঁচাতে দলের মধ্যে অতি সর্তক অবস্থান নিলেও তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি ঘটতে চলেছে এমনটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। আরিজোনায় রিপাবলিকান মার্থা মেকস্যালি ২০১৮তে মিডর্টাম ইলেকশনে ডেমোক্রাট ক্রিস্টিন সিনেমার কাছে নির্বাচনে হেরে যান। পরে প্রয়াত জন ম্যাকেইনের শূণ্য আসনে গভর্নর তাকে অন্তর্বতীকালীন নিয়োগ দেন। এই আসনে এবার তাকে লড়তে হচ্ছে সাবেক নভোচারী ডেমোক্রেট মার্ক কেলীর সাথে। কেলী তার প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ভাল ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। নর্থ ক্যারোলিনায় ডেমোক্রেট কার্ল কানিংহামের নিকট ধরাশায়ী হতে চলেছেন বর্তমান রিপাবলিকান সিনেটের টম টিলিস কলারাডোর সাবেক ডেমোক্রেট গভর্নর জন হিক্যানলোপারের নিকট পরাজয়ের অপেক্ষায় আছেন আরেক রিপাবলিকান সিনেটের কোরি গাডনার। আইওয়া ও মনটানায় রিপাবলিকানদের হটিয়ে দিতে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। মনটানায় বর্তমান রিপাবলিকান সিনেটের স্টিভ ডেইনসকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন জনপ্রিয় বর্তমান গভর্নর ডেমোক্রেট গভর্নর এসোসিয়েশনর সাবেক সভাপতি ষ্টিভ বোলক। রিপাবলিকান জনি আর্নষ্টের বিরুদ্ধে লড়ছেন ডেমোক্রেট টেরেসা গ্রীনফিল্ড। এগুলোতেও ডেমোক্রেটদের সাথে রিপাবলিকানদের যুদ্ধ হবে কঠিন। নানা কারণে বিপর্যয় এড়াতে কোন কোন সিনেটের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে এড়িয়ে চলছেন। দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছেন মিডিয়ার সাথে। তবে সবচেয়ে বেশী আলোচনার জন্ম দিয়েছেন প্রভাবশালী সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম। এই রিপাবলিকান তার আসন সাউথ ক্যারোলিনায় পিছিয়ে পড়েছেন নানা দিক থেকে। তার চ্যালেঞ্জার কৃষাজ্ঞ ডেমোক্রাট জ্যামি হ্যারিসন ফান্ড রেইজিংয়ে ৫৭ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করে নতুন ইতিহাস তৈরি করেছেন। শুধু তাই নয় হ্যারিসন এখন গ্রাহামের দুঃস্বপ্নের কারণ। সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্নে তিনি তার অবস্থান থেকে সরে আসায় সাউথ ক্যারোলিনার জনগণ তাকে উচিত শিক্ষা দিচ্ছে বলেই সমালোচকরা মনে করছেন। আলাবামায় হারলেও মেইন,নর্থ ক্যারোলিনা কলারাডো ও আরিজোনায় জয়ের স্বপ্ন দেখছে ডেমোক্রেটরা। এছাড়া তারা আইওয়া এবং মনটানার ব্যাপারেও আশাবাদী।
Link copied!