শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

রাজধানীর ৯৬ ভাগ ভবন নির্মাণে নিয়ম মানা হয়নি

প্রকাশিত: ০৫:৩৮ এএম, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২১

রাজধানীর ৯৬ ভাগ ভবন নির্মাণে নিয়ম মানা হয়নি

রাজধানীর ৯৬ ভাগ ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী (এলজিআরডি) মো. তাজুল ইসলাম। শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘নগর সংলাপে’ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান। মো. তাজুল ইসলাম বলেন, অবৈধ ভবন নির্মাণের পেছনে মানুষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও জড়িত। তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন না। দায়িত্ব যতটুকু তার চেয়ে দ্বিগুণ দায়িত্ব দিলে কাজের অনিয়ম হতে পারে। কোনো এজেন্ডাকে সঠিকভাবে পালন করতে পারবে না। এ ছাড়া ভবন নির্মাণে তদারকি, লোকবলের সংকট ও জবাবদিহি না থাকাও এসব ভবন নির্মাণ হওয়ার অন্যতম কারণ। এ সংলাপের আয়োজন করে ‘নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম, বাংলাদেশ (ইউডিজেএফবি)। আর এ সংলাপ বাস্তবায়নে সহযোগিতা দেয় ‘জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)।’ সংগঠনের সভাপতি মতিন আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সোহেল মামুনের পরিচালনায় সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্সের (বিআইপি) সভাপতি ড. আকতার মাহমুদ। অন্যানের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন-ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র মো. শহিদুল্লাহ মিনু, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর এবং খাল উন্নয়-সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি মো. আবুল কাশেম, ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার অ্যান্ড ইনভায়রনমেন্টের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, স্থপতি ইকবাল হাবিব, পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক অমিতোষ পাল, হেলিমুল আলম প্রমুখ। মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য ভেনিস, সিঙ্গাপুর অথবা সান্তোসা বেড়াতে যাই। এমন একটি শহর গড়ার স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ স্বপ্ন পূরণের জন্য আমি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুই মেয়রকে নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, ঢাকাকে বাসযোগ্য আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন শহরে রূপান্তরিত করতে হাতিরঝিল থেকে বনানী পর্যন্ত এবং ইউনাইটেড হাসপাতাল পর্যন্ত ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট চালু করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং এ উদ্যোগ বাস্তবে রূপ দিতে প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এ উদ্যোগের সঙ্গে নগর পরিকল্পনাবিদ, স্থপতিসহ সব বিশেষজ্ঞকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ঢাকা শহরে যতগুলো খাল আছে তাতে একটি হাতিরঝিল নয় এরকম অনেক হাতিরঝিল নির্মাণ করা সম্ভব। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এবং ড্যাপ প্রণয়ন-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আহ্বায়ক বলেন, ডেমোগ্রাফিক সাইজ অর্থাৎ শহরে কত মানুষ বসবাস করবে সে অনুযায়ী পরিকল্পনা নিতে হবে। পূর্বাচলে ১০ লাখ মানুষের বসবাসের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু, সেখানে যদি ৫০ লাখ মানুষ বসবাস করে তাহলে তা আর বাসযোগ্য থাকবে না। তিনি বলেন, খালের দায়িত্ব পাওয়ার পর দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ইতোমধ্যে উচ্ছেদ কাজ আরম্ভ করেছেন। অনেক ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে, খাল দখল করে তার ওপরে বিল্ডিং বানানো হয়েছে। যারা এসব করেছে তারা যত ক্ষমতাশালী হোক না কেন আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা শহরের খালগুলো উদ্ধার করা হবে। তিনি আরও বলেন, ঢাকা নগরীর অন্যতম সমস্যা বর্জ্য। এটি সমাধান করার জন্য মন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কাজ শুরু করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতার আলোকে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটিকে অনুমোদন দিয়েছেন। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, এটি চালু হলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন আসবে। এ সময় বর্জ্য কালেকশনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ‘নগর সংলাপ’ শেষে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম, বাংলাদেশের বার্ষিক ম্যাগাজিন ‘ঢাকাই’ এর তৃতীয় সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
Link copied!